“অপরিচিতা গল্প” এবং বাস্তব দৃষ্টান্তে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা
২০২২ সালের আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলিম ২০২২ প্রথম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বাংলা প্রথম পত্র (“অপরিচিতা গল্প” এবং বাস্তব দৃষ্টান্তে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা) নির্ধারিত হয়েছে বাংলা আবশ্যিক পাঠ্যবইয়ের অপরিচিতা গল্প থেকে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মাদ্রাসার আলিম দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা বাংলা পাঠ্য বইয়ের সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি অধ্যায়নের পর নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করবে। আলিম বাংলা প্রথম পত্র প্রথম সপ্তাহে ২০ নম্বরের এসাইনমেন্ট দেয়া হয়েছে।
আলিম ২০২২ প্রথম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বাংলা প্রথম পত্র
পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত নির্দেশনা এবং মূল্যায়ন রুবিক্স অনুসরণ করে বাংলা প্রথম পত্র প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকের নিকট জমা দিবে।
অ্যাসাইনমেন্টঃ ‘অপরিচিতা’ গল্প এবং বাস্তব দৃষ্টান্তের ভিত্তিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা চিহ্নিতকরণ;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
- ১. ‘অপরিচিতা’ গল্প অনুসরণে কল্যাণীর সংকট এবং এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তার দৃঢ়চেতা মনােভাবের পরিচয়।
- ২. অনুপম এবং অন্যদের ভূমিকা ইতিবাচক হলে কল্যাণীর জীবন কেমন হতে পারত, এর বিবরণ।
- ৩. বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে চেনা/জানা কোনাে নারীর এগিয়ে চলার পথে প্রতিবন্ধকতাগুলাে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা।
- ৪. পঠিত গল্প ও চেনা/জানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকাগুলাে চিহ্নিত করা।
- ৫. শব্দপ্রয়ােগ, বাক্যগঠন, বানান, বিরামচিহ্ন যথাযথ রাখা।
আলিম ২০২২ প্রথম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বাংলা প্রথম পত্র উত্তর
“অপরিচিতা গল্প” এবং বাস্তব দৃষ্টান্তের ভিত্তিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা নিম্নে চিহ্নিতকরন করা হলোঃ
অপরিচিতা গল্পে সেই অপরিচিতা মেয়ে কল্যাণীর বিয়ে ঠিক করা হয় উচ্চশিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বরহিত এবং পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুল মাত্র অনুপমের সাথে। অনুপমের আসল অভিভাবক তার মামা, যিনি সব সময় চাইতেন অনুপমের এমন পরিবারে বিয়ে হোক যাদের আর্থিক অবস্থা বেশ ভালো না হলেও যৌতুক দিতে কৃপণতা করবে না। শম্ভুনাথ সেন অর্থাৎ কল্যাণীর বাবা ঠিক তেমনই ছিলেন। তাও পণের পরিমাণে ঠকে যান কিনা তা দেখতে অনুপমের মামা বিয়ে বাড়িতেই সেকরা নিয়ে হাজির হন।
মেয়ের গয়না সব পরখ করে তিনি বুঝতে পারেন তাতে কোনো খাদ নেই। সেই সময় তিনি সব গয়নার তালিকাও করে নিয়েছিলেন, পাছে মেয়ের বাবা কোন গয়না লুকিয়ে না ফেলে। যা ছিল মেয়ের বাবার কাছে খুবই অসম্মানের।
ফলে কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এরকম যৌতুক নিয়ে চরম অবমাননাকালে কন্যা সম্প্রদান অসম্মতি জানান এবং বিয়ে ভেঙে দেন। এ নিয়ে শম্ভুনাথ সেন এর কোন আক্ষেপ ছিল না।
এরপর প্রায় চার বছর কেটে যায়। আর এই চার বছরে কল্যাণী পড়াশুনা করে দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছে। মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ করেছে। আর তার এসব বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের জাগরণ এবং শুচিশুভ্র আত্মপ্রকাশ ভবিষ্যতের নতুন নারীর আগমনে ইঙ্গিতেরই পরিসমাপ্তি।
অপরিচিতা গল্পে আমরা দেখেছি, যৌতুকের ব্যাপারে অনুপমের মামার ভূমিকা সব সময় নেতিবাচক ছিল। কিন্তু, অনুপম শিক্ষিত ছেলে হয়েও কোন প্রতিবাদ জানায়নি। বরং সব অন্যায় দেখেও চুপচাপ ছিলো। অর্থাৎ যৌতুকের বিরুদ্ধে তার কোনো ভুমিকা ছিল না।
এ বিষয়ে তার ভূমিকা ইতিবাচক হলে তাহলে তারা বিয়েতে বাধার সৃষ্টি হতো না। সুন্দরভাবে বিয়ে সম্পন্ন হলে কল্যাণী এবং অনুপম দুজনেই একটা সুস্থ সুন্দর জীবনের সম্ভাবনায় এগিয়ে যেতো। বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য সমাজের চোখে নিচু হতো না। আর এভাবে সবাই যৌতুকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ালে একসময় সমাজ থেকে যৌতুকপ্রথা উঠে যেত।
আমার চেনা একজন নারী আছেন যাকে খুব অল্প বয়সেই তার বাবা মা বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন অনেক টাকা যৌতুক দিয়ে।
কিন্তু তিনি পড়াশোনা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন বলে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং বিয়ে ভাঙ্গতে সমর্থ হন। তারপর থেকে সমাজের মানুষের নানান কথা, পরিবারের চাপের মুখে পড়েও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন নারী, যাকে দেখলে সমাজের মানুষ এখন কুর্নিশ করে এবং তার বাবা মাও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তিনি এখন নিজে বাল্যবিবাহ, যৌতুকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং নারীদের শিক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।
পঠিত গল্প “ অপরিচিতা” এবং আমার চেনা নারীর এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা থেকে আমরা বুঝতে পারি, তাদের জাগরণে সহায়ক ভুমিকা ছিল শিক্ষা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়ানো। তারা উভয়েই যৌতুক প্রথার নির্মম বলি হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। তারা দেশচেতনায় হৃদ্ধ ব্যাক্তিত্ব নিয়ে জাগরিত হয়েছে।
নারী জাগরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষা। যা নারীদের আত্মসচেতন করবে, সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শেখাবে। যা তারা দুজনেই করে দেখিয়েছে।
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে গল্প এবং আমার চেনা ব্যক্তির জীবনচরিত থেকে আমরা বুঝতে পারি নারীর এগিয়ে চলায় সবচেয়ে সহায়ক ভুমিকা রাখে “শিক্ষা”।
এই ছিল তোমাদের আলিম ২০২২ প্রথম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বাংলা প্রথম পত্র নমুনা উত্তর-
“অপরিচিতা গল্প” এবং বাস্তব দৃষ্টান্তের ভিত্তিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা
আরো দেখুন-
তোমাদের প্রতি সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ ডট কম এর এন্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে নাও। এখানে এ্যাসাইনমেন্ট সমাধান করা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পেয়ে যাবে।
এছাড়াও তোমার মনে থাকা যেকোন প্রশ্ন এখানে করার সুযোগ রয়েছে; নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করে নাও;