সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত ইবাদতের তালিকা
সপ্তম সপ্তাহে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পাঠ্য বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত থেকে অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ দুই দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যবইয়ের পাঠ্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পার্ট নম্বর বিষয়বস্তুর আলোকে অধ্যায়ন এরপর নির্ধারিত এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করবে। নির্ধারিত এসাইনমেন্টের বিষয়বস্তু- সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত ইবাদতের তালিকা তৈরি করা।
৬ষ্ঠ শ্রেণি ৭ম এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা
শ্রেণি: ৬ষ্ঠ, এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রমঃ এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-২,
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরােনামঃ দ্বিতীয় অধ্যয়: ইবাদত;
পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তুঃ পাঠ-১: ইবাদতের ধারণা ও তাৎপর্য, পাঠ-২: অপবিত্রতা, পাঠ-৩: পবিত্রতা, পাঠ-৪: ওযু, পাঠ-৫: তায়াম্মুম, পাঠ-৬: গােসল;
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ: প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে – ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যে সকল ইবাদত করা যায়, তার একটি তালিকা তৈরি কর।
নির্দেশনাঃ ইবাদতের ধারণা ও প্রকারভেদ পবিত্রতার ধারণা (ওযু, তায়াম্মুম, গােসল) বিষয় শিক্ষক/মাতা পিতা/ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের সাথে আলােচনা/সহায়ক বই পুস্তক/ ইন্টারনেটের সহযােগিতা গ্রহণ।
৬ষ্ঠ শ্রেণি ৭ম এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার উত্তর
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যে সকল ইবাদত আমরা করি তার তালিকা নিম্নরূপঃ
ইবাদত আরবি শব্দ । যার অর্থ দাসত্ব বা আনুগত্য। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলার নামই ইবাদত। ইবাদত আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তার ইবাদত করার জন্য।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর আমি জিন ও মানুষকে শুধু আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি”- সূরা আয-যারিয়াত( আয়াত ৫৬)। আল্লাহ তা’আলা আমাদের জন্য এই মহাবিশ্বকে কত সুন্দর করে সাজিয়েছেন।
কোরআন মাজিদ অবতীর্ণের সময় আল্লাহ তাআলা বলেন, “ সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি তাঁর বান্দার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং তাতে কোন বক্রতা রাখেন নাই”- সূরা আল কাহাফ (আয়াত ১)।
ইবাদত কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- ইবাদতে বাদানি বা শারীরিক ইবাদত
- ইবাদাতে মালি বা আর্থিক ইবাদত
- ইবাদতে মালি ও বাদানি শরীর অর্থ উভয়ের সংমিশ্রণে ইবাদত মালি ও বাদানি শরীর অর্থ উভয়ের সংমিশ্রণে ইবাদত।
উপরোক্ত এবাদতগুলোর বেশিরভাগই প্রত্যহ করা এবাদত যা আমরা প্রতিদিন করি।
আমরা প্রতিদিন সালাত আদায় করি। কারণ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা আমাদের জন্য ফরজ।
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআন মজীদের ঘোষণা করেন, “ নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে” (সূরা আল আনকাবুত, আয়াত- ৪৫)।
- নামাজের মাধ্যমে মুমিনের গুনাহ মাফ হয়। মানুষ আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে। স্বেচ্ছায় নামাজ ত্যাগ করা কুফর। সুতরাং আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে এবং পরকালে শান্তির জন্য আমাদের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা উচিত।
- আমরা খেতে বসলে বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করব। এটা একটা ইবাদত। এর ফলে যতক্ষণ খাওয়ার মধ্যে থাকবো ততক্ষন আল্লাহর রহমত পেতে থাকবো।
- পড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে পড়া শুরু করবো। ফলে যতক্ষন পড়াশোনা করবো ততক্ষণ তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে।
- স্কুলে যাবার সময় বিসমিল্লাহ বলে যাত্রা শুরু করব। তখন রাস্তায় সকল বিপদ আপদ থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেন। এটিও একটি ইবাদত।
- একজন অন্ধ লোক রাস্তা পার হতে পারছে না, তাকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলেও তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে।
- খাওয়া শেষে “ আলহামদুলিল্লাহ” বলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করাও একটা ইবাদত।
- সকল কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলে তা আল্লাহ ইবাদত হিসেবে গণ্য করেন।
- সকল ইবাদত সমূহ আমাদের পবিত্র শরীরে করতে হবে। প্রস্রাব পায়খানা ইত্যাদির মাধ্যমে শরীর অপবিত্র হয়। যা নাজাসাতে হাকিকি( অপবিত্রতা)। আর যেসব অপবিত্রতা দেখা যায় না তা নাজাসাতে হুকমি, যেমন- ওজু ভঙ্গ হওয়া, গোসলের প্রযোজন হওয়া। অপবিত্রতার ব্যাপারে সতর্ক না হলে শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাই আমাদের শরীর পবিত্র রাখতে হবে।
ওযু গোসলের মাধ্যমে আমরা পবিত্র হতে পারি। ইবাদতের জন্য পবিত্র থাকা একান্ত আবশ্যক।
আল্লাহ বলেন,” আর উত্তমরুপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদের আল্লাহ ভালবাসেন” ( সুরা আত তাওবা, আয়াতঃ ১০৮)।
পবিত্রতা ২ ধরণের। শিরক, আকিদাহ, রিয়া, গিবত ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকা হলো অভ্যন্তরীণ পবিত্রতা, আর ওযু- গোসল ইত্যাদির মাধ্যমে পবিত্রতা হলো বাহ্যিক পবিত্রতা।
আমাদের ভালোভাবে ইবাদত করার জন্য পবিত্র হতে হবে। ওজু করার মাধ্যমে আমরা পবিত্র হতে পারি। ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি ওজু করে। ওজুর গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআনে বলা আছে।
রাসুল (সাঃ) বলেন, “ ওজুর ফলে উম্মতের মুখমণ্ডল ও হাত পা ঝকঝক করে”।
সুতরাং, পবিত্র থাকতে হলে আমাদের যথাযথ নিয়মে ওজু করতে হবে। আর যাতে ওজু ভঙ্গ না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।
ওজু গোসলের পরিবর্তে পবিত্র হতে আমরা তায়াম্মুম করি। যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির সরবরাহ থাকে না তখন তায়াম্মুমের মাধ্যমে আমরা পবিত্রতা অর্জন করি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ আর তোমরা যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে”।
তাই পানি না থাকলে আমারে তায়াম্মুম করে পবিত্র হতে হবে, এবং তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণগুলো থেকে দুরে থাকতে হবে।
আমরা গোসলের মাধ্যমেও নিজেদের পবিত্র করতে পারি। গোসল করার নিয়মগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে আমাদের গোসল করতে হবে, তাতে আমাদের শরীরের ময়লাও দুরীভুত হবে এবং আমরা পবিত্রও হবো।
উপরোল্লিখিত নিয়মে পবিত্র হয়ে তালিকাভুক্ত ইবাদত গুলো ছাড়াও অন্যান্য ইবাদতের দ্বারা আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।
এই ছিল তোমাদের ৬ষ্ঠ শ্রেণি ৭ম এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার উত্তর- সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত ইবাদতের তালিকা।
আরো দেখুন-
প্রতি সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল আপডেট পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখো ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখ এবং অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করুন।
সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট এবং শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোন তথ্য পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করতে আপনাদের জন্য একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে গুগল প্লে স্টোর থেকে বাংলা নোটিশ অ্যাপ ইন্সটল করে নিন।