বিভিন্ন খাবারের উৎস, খাদ্য পিরামিড, স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক খাদ্য
প্রিয় বন্ধুরা! আজকের আলোচনায় বিভিন্ন খাবারের উৎস, খাদ্য পিরামিড, স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক খাদ্য ও শিক্ষার্থী হিসেবে ২৪ ঘণ্টার একটি রুটিন তৈরি করা হয়েছে।
১. বৃহস্পতিবার প্রমার আম্মু চাল, ডাল, উদ্ভিজ্জভোজ্য তেল, সবজি এবং মাংস মিশিয়ে খিচুড়ি রান্না করলেন।
বিকেলে প্রমা পেয়ারা খেতে খেতে তার আব্বুকে বললো যে কাল তারা বাইরে বেড়াতে যাবে এবং বাইরে খাবে।
কথামত শুক্রবারে তারা বাইরে গিয়ে দুপুরে ফ্রাইড রাইস, ফ্রাইড চিকেন, সফট ড্রিংক এবং বিকেলে বার্গার খেলো।
ক) প্রমার গৃহীত খাবারগুলোর মধ্যে কোন খাবারটি ভিটামিন E সমৃদ্ধ?
খ) উল্লেখিত খাবারগুলোর মধ্যে কোন খাবার উদ্ভিজ্জ উৎস ও কোন কোন খাবার প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া যায় তা ছকের মাধ্যমে দেখাও।
গ) বৃহস্পতিবার প্রমার গৃহীত খাবারের একটি সুষম খাদ্য পিরামিড এঁকে উপস্থাপন কর।
ঘ) প্রমার স্বাস্থ্য রক্ষায় কোন দিনের খাবারটি অধিকতর সহায়ক? যুক্তিসহকারে বিশ্লেষণ কর।
ক.
প্রমার গৃহীত খাবারগুলোর মধ্যে উদ্ভিজ্জভোজ্য ভিটামিন E সমৃদ্ধ।
খ.
উল্লেখিত খাবারগুলোর মধ্যে যে খাবার উদ্ভিজ্জ উৎস ও যে খাবার প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া যায় তা ছকের মাধ্যমে দেখানো হলো-
উদ্ভিজ্জ উৎসঃ
- চাল,
- ডাল,
- সবজি,
- পেয়ারা,
- ফ্রাইড রাইস।
প্রাণিজ উৎসঃ
- মাংস,
- ফ্রাইড চিকেন,
- বার্গার।
গ.
বৃহস্পতিবার প্রমার গৃহীত খাবারের একটি সুষম খাদ্য পিরামিড এঁকে উপস্থাপন করা হলো-
বৃহস্পতিবার প্রমার গৃহীত খাবারগুলো হলো- পেয়ারা, ফ্রাইড রাইস, ফ্রাইড চিকেন, সফট ড্রিংক এবং বার্গার। এই খাদ্যগুলো দ্বারা গঠিত খাদ্য পিরামিডের দিকে তাকালেই কোন ধরনের খাদ্য উপাদান কতটুকু খেতে হয় তার ধারণা পাওয়া যায়।
শর্করাকে নিচে রেখে পরিমাণ বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে শাক-সবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয়, তাকে সুষম খাদ্য পিরামিড বলে।
(ছবিতে দেখুন)-
বিভিন্ন খাবারের উৎস, খাদ্য পিরামিড, স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক খাদ্য
ঘ.
- প্রমার স্বাস্থ্য রক্ষায় বৃহস্পতিবারের খাবারটি অধিকতর সহায়ক। যুক্তিসহকারে বিশ্লেষণ করা হলো।
- বৃহস্পতিবার প্রমার আম্মু চাল, ডাল, উদ্ভিজ্জভোজ্য তেল, সবজি এবং মাংস মিশিয়ে খিচুড়ি রান্না করলেন।
খিচুড়িতে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদানের সংমিশ্রণ থাকে।
এতে আমিষ, প্রোটিন, ভিটামিন, স্নেহ পদার্থ, খনিজ লবণ ইত্যাদি খাদ্য উপাদান রয়েছে। যা সুষম খাবারের বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও প্রমা বিকেলবেলা পেয়ারা খেয়েছে, যাতে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
সুষম খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধিসাধন, ক্ষয়পূরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে। দেহে তাপ উৎপাদন করে, কর্মশক্তি প্রদান করে। সুষম খাদ্য রোগ প্রতিরোধ করে, দেহকে সুস্থ, সবল এবং কর্মক্ষম রাখে।
- পক্ষান্তরে, প্রমা শুক্রবারে ফ্রাইড রাইস, ফ্রাইড চিকেন, সফট ড্রিংক এবং বার্গার খেলো।
এই খাবারগুলো জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুড নামে সুপরিচিত। জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুড হচ্ছে এমন এক ধরনের খাবার, যা স্বাস্থ্যগত উপাদানের পরিবর্তে মুখোরচক স্বাদের জন্য উৎপাদন করা হয়।
সুস্বাদু করার জন্য এতে প্রায়শই অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে যেগুলো অস্বাস্থ্যকর। ফাস্টফুডে সাধারণত প্রচুর পরিমানে প্রাণিজ চর্বি ও চিনি থাকে। বার্গার, ফ্রাইড চিকেনে উচ্চমাত্রায় প্রাণিজ চর্বি থাকে।
সফট ড্রিংক এ অতিরিক্ত চিনি থাকে। আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার খাই, তখন আমাদের দেহ এগুলোকে চর্বিকলায় রূপান্তরিত করে এবং অধিক পরিমাণে চিনি আমাদের দাঁত ও ত্বককে নষ্ট করে দিতে পারে।
- উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রমার স্বাস্থ্য রক্ষায় বৃহস্পতিবার তথা সুষম খাবারটি অধিকতর সহায়ক।
বিভিন্ন খাবারের উৎস, খাদ্য পিরামিড, স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক খাদ্য
২. শিক্ষার্থী হিসেবে তোমার ২৪ ঘণ্টার একটি রুটিন তৈরি কর এবং সেখানে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উপস্থাপন কর।
ক) তিনবেলার খাবার, টিফিন ও বিকালের নাস্তা
খ) বিশ্রাম (ঘুম) ও শরীরচর্চা
গ) সারাদিনের কার্যাবলী (পড়ালেখা, ঘরের কাজ, বাইরের কাজ ইত্যাদি)
ঘ) খেলাধুলা (বাড়িতে)
ঙ) প্রার্থনা
চ) অবসর
শরীরই মানুষের প্রথম পরিচয়। তাই শরীরকে মানুষের জীবন সংগ্রামের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বলা যেতে পারে। এই হাতিয়ারকে ঠিক রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। মানুষের জীবনে নিয়মিতভাবে ঘুম, খাওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া আবশ্যক। এগুলো মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশকে সঠিক ভাবে কাজ-কর্ম করতে সাহায্য করে।
শিক্ষার্থী হিসেবে আমার ২৪ ঘণ্টার একটি রুটিন তৈরি করা হলোঃ
- ভোর ৫:০০ টায় – ঘুম থেকে উঠা।
- ৫:২০ টায় – প্রার্থনা।
- ৫:৪০ টায় – হালকা নাস্তা।
- সকাল ৬:০০ টায় – শরীরচর্চা।
- ৬:৩০ টায় – সকালের নাস্তা।
- ৭:০০ টায় – পড়তে বসা (গণিত, ইংরেজি)।
- ৯:০০ টায় – ব্যাগ, পড়ার টেবিল গুছানো।
- ৯:৩০ – দুপুর ১:০০ টায় – বিদ্যালয়ে অবস্থান(টিফিনের সময় টিফিন করা)।
- দুপুর ১:১০ টায় – ফ্রেশ হওয়া, প্রার্থনা করা।
- ২:০০ টায় – দুপুরের খাবার।
- ২:৩০ – বিকেল ৪:৩০ টায় – বিশ্রাম নেয়া।
- বিকেল ৪:৪৫ টায় – প্রার্থনা।
- ৫:০০ টায় – অবসরে খেলাধুলা করা।
- সন্ধ্যা ৬:০০ টায় – প্রার্থনা, হালকা নাস্তা।
- ৬:৩০ টায় – পড়তে বসা।
- রাত ৮:০০ টায় – প্রার্থনা।
- ৮:৩০ টায় – রাতের খাবার।
- ৯:০০ – ১১:০০ টায় – পড়ালেখা।
- ১১:১০ – ভোর ৫:০০ টায় – ঘুম।
আরো দেখুন-
- খাদ্য লবণ ও বালুর মিশ্রণ থেকে উপাদানসমূহ পৃথক করণ পরীক্ষণ
- মানব কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত সকল কর্মসূচি ও ঘৃণা
ইউটিউবে সর্বশেষ আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ডট কম এর ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের যেকোন বিজ্ঞপ্তি, খবর, নোটিশ ও জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
দেশের অন্যতম প্রিয় অনলাইন পোর্টাল সর্বদাই সত্য ও বস্তুনির্ভর তথ্য প্রকাশে বদ্ধপরিকর।
আপনার যেকোন অভিযোগ আপত্তি ও পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করা হবে।