সর্বশেষ আপটেড

রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৫শে মার্চের গণহত্যা

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। তোমরা কি ৮ম শ্রেণি ১০ম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা নমুনা উত্তর সম্পর্কে ধারণা নিতে চাচ্ছো? কিংবা এসাইনমেন্টটি কিভাবে প্রস্তুত করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে বলবো তোমরা ঠিক ওয়েবসাইটে এসেছো। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে- রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৫শে মার্চ গণহত্যা, ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর ইত্যাদি ঘটনার ক্ষেত্রে আমি উপস্থিত থাকলে ওই সময় যা করতাম তার বর্ণনা।

৮ম শ্রেণি ১০ম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট

মনে করো, ১৯৭১ সালে তুমি অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। নিচের ঘটনার ক্ষেত্রে তুমি উপস্থিত থাকলে ওই সময় কি করতে তার বর্ণনা দাও।
(যে কোন তিনটি ঘটনার ক্ষেত্রে নিজের অনুভূতি লিখতে হবে)
ক) রেসকোর্স ময়দানে ৭ ই মার্চের ভাষণ শুনছ।
খ) ২৫ শে মার্চ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী।
গ) পাকিস্তান হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস এলাকাবাসীকে নির্যাতন করছে।
ঘ) মুক্তিবাহিনীকে হানাদাররা তাড়া করছে।
ঙ) ১৬ ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করছে।

৮ম শ্রেণি ১০ম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

উপরোক্ত ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে আমি উপস্থিত থাকলে ওই সময় যা যা করতাম তার বর্ণনা দেয়া হলো-

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিজয়ী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ষড়যন্ত্র শুরু করে। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বারবার স্থগিত ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের মার্চের প্রথম থেকে অসহযোগ আন্দোলন এবং ৭ ই মার্চ ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে’ তোলার ডাক দেন। ফলে বাঙালির স্বাধীনতার প্রস্তুতি শুরু হয়। অন্যদিকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ২৫ শে মার্চ বর্বর গণ হত্যার শুরু করে। ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হয় বাঙালির প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধ। মুজিবনগর সরকারের নির্দেশনায় পরিচালিত নয় মাসের যুদ্ধশেষে ১৬ ই ডিসেম্বর বাঙালি বিজয় লাভ করে।

রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণঃ-

১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ, দিনটি ছিল রবিবার।
বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ ই মার্চের ভাষণে বিজয়ী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনার ঘোষণা দেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, “যে পর্যন্ত আমার এ দেশের মুক্তি না হচ্ছে ততদিন খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো।” তিনি আরো বলেন, “প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।” বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আমাকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। আমি এবং আমার বন্ধুরা বিদ্যালয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে আলোচনা করছি। এমন সময়ে আমাদের প্রধান শিক্ষক এসে বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী, দেশের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কল-কারখানা সব বন্ধ হয়ে যাবে।” আমাদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন রকমের কথা বলে তিনি প্রস্থান করেন। আমি এবং আমার বন্ধুরা পথিমধ্যে পরিচিত, অপরিচিত সকলের নিকট সংবাদটি প্রচার করি।

২৫শে মার্চের গণহত্যা :-

২৫ মার্চ, ১৯৭১ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধের প্রস্তুতি। এই দুঃসময়ের স্মৃতিতে স্পষ্ট হয়ে ওঠছে : আগুন জ্বলছে পলাশীর বস্তিতে, বিদ্রোহ ইপিআর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে, দাউদাউ করে জ্বলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। রাতের শেষ প্রহরে কামানের গর্জন। আগুনের ফুলকি চতুর্দিকে। বাবা বললেন- সম্ভবত সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে, জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের সামরিক অভিযানে সংঘটিত হচ্ছে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। জাতিসংঘের ঘোষণায় ‘জেনোসাইড’-এর যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন হচ্ছে আজ বাঙালির ওপর। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানার তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, জহুরুল হক হলসহ সারা ঢাকা শহরে তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।

ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছি সারারাত। সকাল সকাল উঠে চললাম একে একে রাশেদ, সুজন ও সায়েমদের বাড়িতে। তাদের এবং তাদের পরিবারের খোজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছু অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। গিয়ে দেখি সুজনদের বাড়ির ভাঙচুর, লন্ডভন্ড হয়ে আছে। বাড়িতে কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। কি ব্যাপার? কোথায় সবাই? রাশেদ আর সায়েমকে নিয়ে বেরোচ্ছি প্রতিবেশী সবার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। সারারাত যে হত্যাযজ্ঞ চলেছে তাতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি আশা করা নিতান্তই বোকামি। ক্রন্দনে জর্জরিত হয়ে পড়লাম আমরা। আমাদের নিজ নিজ পরিবারের সহযোগিতায় যার যা সামর্থ আছে তা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করছে :-

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ডের হেডকোয়ার্টারে মিত্রবাহিনীর মেজর জেনারেল জ্যাকব আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিয়াজির মধ্যে আত্মসমর্পণ চুক্তি নিয়ে যখন দর কষাকষি চলছে, তখন পাকিস্তানি বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল আলোচনার একটা বড় বিষয়। ঢাকায় তখন পাকিস্তানি সৈন্য আর নানা রকম আধাসামরিক বাহিনীর লোকজন মিলিয়ে ৯৪ হাজার সদস্য আটকা পড়েছে।

বিকেল ৪ টার সময় বাবা হাসিমুখে এসে বলছে- চলো, আমরা রমনা রেসকোর্স ময়দানের দিকে যাই। তোমার বন্ধুদেরও আসতে বলো। শুনলাম, বাঙালিদের জন্য আজ একটা খুশির সংবাদ অপেক্ষা করছে। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। প্রস্তুত হয়ে রওনা দিলাম রমনা রেসকোর্স ময়দানের উদ্দেশ্যে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিলে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৩১ মিনিটে ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী সই করেন। আত্মসমর্পণের দলিলের নাম ছিল “INSTRUMENT OF SURRENDER”। এই ঘটনাকে ঢাকার পতন বলেও ডাকা হয়।

রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৫শে মার্চের গণহত্যা।

পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিল তিন প্রস্থে প্রস্তুত করা হয়েছিল। একটি প্রস্থ ভারত সরকার এবং দ্বিতীয় প্রস্থ পাকিস্তান সরকারের নিকট সংরক্ষিত আছে ও তৃতীয় প্রস্থ ঢাকার শাহবাগ জাদুঘরে আছে। যে টেবিলে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা ঢাকা ক্লাব থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই টেবিলটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ৩৭ সংখ্যক প্রদর্শনী কক্ষে সংরক্ষিত আছে।

‘ডিসেম্বরের সূর্যের দিকে মুখ করে ম্রিয়মাণ বিষন্ন মুখে ক্যানটনমেনটের দিকে তাকিয়েছিলেন পাক বাহিনীর দীর্ঘতম লে. জেনারেল ফরমান আলি। ঠিক সেই মুহূর্তে ক্যানটনমেনটের বিভিন্ন ইউনিট লাইনে তাঁর বাহিনীর ৩০ হাজার পরাজিত সৈন্য নিজেদের হাতিয়ার তুলে দিচ্ছে। আজ থেকে বাংলাদেশে প্রায় এক লক্ষ পাক সৈন্য ভারতের যুদ্ধবন্দী।’ বন্ধুরাসহ বিজয়ের পতাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছি। খুশির জোয়ারে ভাসছে সারা বাংলা।

এই ছিল তোমাদের ৮ম শ্রেণি ১০ম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা নমুনা উত্তর- রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ, ২৫শে মার্চের গণহত্যা, ১৬ ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর ইত্যাদি ঘটনার ক্ষেত্রে আমি উপস্থিত থাকলে ওই সময় যা করতাম তার বর্ণনা।

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এবং বাংলা নোটিশ ডটকমের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট ডাউনলোড করার জন্য  BanglaNotice.com, SoftDows.com এবং dshe.gov.bd এর ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সেইসাথে এসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য বাংলার নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ