সর্বশেষ আপটেড

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা

এসএসসি ২০২১ শিক্ষাবর্ষের মানবিক বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সকলে সুস্থ আছো। বরাবরের মতো আমরা তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার জন্য আজকের আর্টিকেলে এসএসসি ২০২১ সালের ৮ম সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা নমুনা সমাধান/ উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করবো। অ্যাসাইনমেন্টের শিরোনাম : আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা।

সকল শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন সরকারি বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার অষ্টম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ অধিদপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এসএসসি ২০২১ অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য ৮ম সপ্তাহে নির্ধারিত ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান দেওয়া হল।

এসএসসি ২০২১ অষ্টম সপ্তাহ পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট: আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

  • ক. বিচার বিভাগের গঠন কাঠামাে বর্ণনা করতে হবে।
  • খ. বিচার বিভাগের ক্ষমতা বর্ণনা করতে হবে
  • গ. বিচার বিভাগের কার্যাবলি বর্ণনা করতে হবে
  • ঘ. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে হবে।

পাঠ্যপুস্তক/শিক্ষক (মােবাইলে/অনলাইনে) যােগাযােগ করে অথবা প্রয়ােজনে ইন্টারনেট থেকেও সহায়তা নেয়া যেতে পারে।]

এসএসসি ২০২১ সালের ৮ম সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা নমুনা সমাধান/ উত্তর

ক. বিচার বিভাগের গঠন কাঠামাে

বাংলাদেশের বিচার বিভাগ

বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ অন্যতম। নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, অপরাধীর শাস্তিবিধান এবং দুর্বলকে সবলের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। বিচার বিভাগ আইনের অনুশাসন ও দেশের সংবিধানকে অক্ষুণ্ণ রাখে ।

বিচার বিভাগের গঠন

বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্ট, অধস্তন আদালত এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নিয়ে গঠিত ।

সুপ্রিম কোর্ট

বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আদালতের নাম সুপ্রিম কোর্ট। এর রয়েছে দুটি বিভাগ, যথা: আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ । সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রধান বিচারপতি রয়েছেন, যাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বলা হয়। রাষ্ট্রপতি তাকে নিযুক্ত করেন। প্রত্যেক বিভাগের জন্য যতজন বিচারক প্রয়োজন ততজন বিচারককে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত। প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারপতিদের নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ বিচার পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে কমপক্ষে ১০ বছর এডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে অথবা বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় পদে ১০ বছর বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ ৬৭ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে কর্মরত থাকতে পারেন।

অধস্তন আদালত

সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় বিচার বিভাগের অধস্তন আদালত আছে। অধস্তন আদালতগুলো ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করে। জেলা জজের আদালত জেলা আদালতের প্রধান জেলা জজ। তার কাজে সহায়তার জন্য আছেন অতিরিক্ত জেলা জজ ও সাব-জজ। এই আদালত জেলা পর্যায়ে দেওয়ানি (জমিজমাসংক্রান্ত, ঋণচুক্তি ইত্যাদি) ও ফৌজদারি (সংঘাত, সংঘর্ষ সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করে।

সাব জজ আদালত ও সহকারী জজ আদালত জেলা জজের আদালতের অধীনে প্রত্যেক জেলায় সাব জজ ও সহকারী জজ আদালত আছে। এগুলো জেলা জজ আদালতকে মামলা পরিচালনায় সহায়তা করে। এছাড়া বিভিন্ন মামলাও পরিচালনা করে থাকে । গ্রাম আদালত : বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সর্বনিম্ন আদালত হলো গ্রাম আদালত। এটি ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থিত । ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিবাদমান দুই গ্রুপের দুজন করে মোট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত। যেসব মামলা স্থানীয় পর্যায়ে বিচার করা সম্ভব, মূলত সেগুলোর বিচার এখানে করা হয়। ছোটখাটো ফৌজদারি মামলার বিচার এ আদালতে করা হয়ে থাকে ।

প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল

সরকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছেন। জেলা জজ পদে ছিলেন বা আছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন সদস্য নিয়ে এধরনের প্রতিটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত। প্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে (প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিযুক্ত ব্যক্তি বাদে) কিম্বা বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদির মতো সুনির্দ্দিষ্ট কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি পেনশনের অধিকার সহ তার চাকরির শর্তাবলির ব্যাপারে কিংবা এমন চাকরিতে ব্যক্তি হিসেবে তার ক্ষেত্রে গৃহীত কোনো পদক্ষেপ সম্পর্কে আবেদন পেশ করলে তা শোনার ও নিষ্পত্তি করার একক এখতিয়ার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রয়েছে।

প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যেতে পারে। এই আপিল ট্রাইব্যুনাল একজন চেয়ারম্যান ও দুজন সদস্য নিয়ে গঠিত। চেয়ারম্যান হবেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি সুপ্রীম কোর্টের বিচারক পদে আছেন বা ছিলেন কিংববা বিচারক হবার যোগ্যতাসম্পন্ন অথবা তিনি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিযুক্ত এমন একজন অফিসার পদে আছেন বা ছিলেন যার পদমর্যাদা সরকারের অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয়। সরকার সুপ্রীম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। একজন সদস্যকে অবসরপ্রাপ্ত বা চাকরিরত জেলা জজদের মধ্য থেকে এবং অপরজনকে অবসরপ্রাপ্ত বা চাকরিরত যুগ্ম সচিবদের মধ্য থেকে নিয়োগ করা হয়। প্রশাসনিক আপীল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের কাছে ঐ বিভাগের অনুমতিক্রমে পেশ করা যায়।

খ. বিচার বিভাগের ক্ষমতা

সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের পৃথক কার্যের এখতিয়ার আছে। এ দুটি কোর্টের ক্ষমতা ও কাজ নিয়েই সুপ্রিম কোর্ট। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

আপিল বিভাগের ক্ষমতা :

  • আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়, ডিক্রি বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করে শুনানির ব্যবস্থা করতে পারে।
  • রাষ্ট্রপতি আইনের কোনো ব্যাখ্যা চাইলে আপিল বিভাগ এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিয়ে থাকে ।
  • ন্যায়বিচারের স্বার্থে কোনো ব্যক্তিকে আদালতের সামনে হাজির হতে ও দলিলপত্র আদেশ জারি করতে পারে।
  • আপিল বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন হাইকোর্ট বিভাগের জন্য অবশ্যই পালনীয় ।

এভাবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আইনের ব্যাখ্যা, ন্যায়বিচার সংরক্ষণ ও পরামর্শ দান করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা :

  • নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।
  • কোনো ব্যক্তিকে মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী কোনো কাজ করা থেকে বিরত রাখতে পারে অথবা এ ধরনের কোনো কাজ করাকে বেআইনি ঘোষণা করতে পারে ।
  • অধস্তন কোনো আদালতের মামলায় সংবিধানের ব্যাখ্যাজনিত হাইকোর্টে স্থানান্তর করে মীমাংসা করতে পারে ।
  • অধস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করে।
  • সকল অধস্তন আদালতের কার্যবিধি প্রণয়ন ও পরিচালনা করে ।
  • আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ মিলে সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে দেশের সংবিধান ও নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে ।

গ. বিচার বিভাগের কার্যাবলি

বিচার বিভাগের কার্যাবলী নিম্নে আলোচনা করা হল :

(১) বিচার সংক্রান্ত কাজ- বিচার বিভাগের মূল কাজ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য বিচারকগণ প্রথমে বাদী ও বিবাদীর বক্তব্য শ্রবণ করেন। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন।

(২) আইনের ব্যাখ্যা দান আইনের অপর্যাপ্ততা বা অস্পষ্টতার ক্ষেত্রে বিচারকগণ আইনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন এবং আইনের যথার্থ স্বরূপ নির্ধারণ করেন।

(৩) আইন প্রণয়নমূলক কাজ— বিচারকগণ কেবলমাত্র আইনের ব্যাখ্যা দান করেন তাই নয়, তারা আইন প্রণয়নও করেন। কোন কোন সময় আদালতে এমন মামলা উপস্থিত হয় যা প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার করা যায় না। বিচারকগণ তখন তাদের নিরপেক্ষতার দৃষ্টিকোণ থেকে এবং ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করে বিচার কাজ সম্পাদন করেন।

(৪) সংবিধানের ব্যাখ্যা দান- বিচার বিভাগ সংবিধানের অস্পষ্ট ও পরস্পরবিরোধী ধারার ব্যাখ্যা দান করে সংবিধানের প্রকৃত অর্থ নির্ণয় করে। এছাড়া আইন পরিষদ রচিত আইন, প্রথা বা শাসন বিভাগের নির্দেশ সংবিধানের পরিপন্থী হলে বিচার বিভাগ পর্যালোচনার মাধ্যমে সেগুলিকে সংবিধান বিরোধী বলে ঘোষণা দিয়ে সংবিধানের প্রাধান্য রক্ষা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচারপতি হিউজেস যথার্থই মন্ত ব্য করেছেন, “আমরা একটি সংবিধানের অধীন, কিন্তু বিচারকগণ যাকে সংবিধান বলেন তাই সংবিধান।”

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা।

(৫) নাগরিক অধিকার রক্ষা— নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য বিচার বিভাগ বিনা অপরাধে গ্রেফতার, আটক ও সরকারের বেআইনী কাজের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিট অব হেবিয়াস কর্পাস, রিট অব ম্যানডামাস ও কোওয়ারেন্টো এবং ইনজাংশান ইত্যাদি রিট ও আদেশ জারি করে থাকে। ফলে ব্যক্তি অধিকার সুরক্ষিত হয়।

(৬) পরামর্শ দান সংক্রান্ত কাজ- শাসনতন্ত্র বা আইনের জটিল প্রশ্নে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগ বিচার বিভাগের পরামর্শ চাইলে বিচার বিভাগ সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে।

(৭) তদন্ত সংক্রান্ত কাজ গুরুতর অন্যায় ও দুর্ঘটনার তদন্তের ভার সাধারণত উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের উপর অর্পণ করা হয়। তদন্তের পর বিচারকগণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট যথাযথ রিপোর্ট পেশ করেন।

(৮) শাসন সংক্রান্ত কাজ- বিচার বিভাগ ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দান, কিছু কিছু স্থানীয় কর্মচারী নিয়োগ, নাবালকের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমানতদার ও অভিভাবক নিয়োগ, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির প্রশাসন প্রভৃতি শাসন সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করে। এ কাজগুলো ছাড়াও বিচার বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের কেন্দ্র ও প্রদেশের বিবাদের মীমাংসা করে।

ঘ. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা

বিচার বিভাগ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিম্নোক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে।

  • আইন তৈরীর সময় বাংলাদেশ সংবিধানের কোন মূলনীতির লংঘন করেছে কিনা, আইন বিভাগের এ কাজটিকে বলা হয় বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা।
  • কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির অধিকার লংঘিত হলে তার বিচারিক দায়িত্ব সম্পাদন করা।
  • রাষ্ট্রের সাথে ব্যক্তির কোন অধিকার সংক্রান্ত অভিযোগ আদালতে উত্থাপিত হলে তার মীমাংসাপূর্বক রায় প্রদান করা।
  • রাষ্ট্রের যেকোন অংশে অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ হলে তার বিচারিক রায় প্রদান করা।

এছাড়াও বিচার বিভাগ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে যেকোন ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হলে তার বিচারিক কার্য সম্পাদন করে থাকে। যেহেতু সংবিধানের মূলনীতি অনুযায়ী নাগরিকের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখার দায়িত্ব বিচার বিভাগের, সেহেতু কোনো ব্যক্তির এই অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। এভাবে বিচার বিভাগ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংবিধান প্রদত্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকারসমূহ, যেমন- জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার, চলাফেরার অধিকার, সমাবেশের স্বাধীনতা, চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, ধর্ম সংক্রান্ত স্বাধীনতার অধিকার ইত্যাদি রক্ষা করে থাকে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে বিনা বিচারে প্রহরায় আটকে রাখা যাবে না।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা।

গ্রেফতার হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতিরেকে এর অতিরিক্ত সময় কোন ব্যক্তিকে আটকে রাখা যাবে না। বিচার বিভাগ কর্তৃক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এটি অন্যতম একটি পর্যায়। দেশের সকল নাগরিককে সমান চোখে দেখা আইনের শাসনের আরও একটি মৌলিক দিক। এক্ষেত্রে কোন রকম বর্ণ, শ্রেণি, ধর্ম বা লিঙ্গের ভিত্তিতে বঞ্চিত করা যাবে না। কেউ যদি এই উপায়ে বঞ্চিত হয়, সেক্ষেত্রে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। বিচার বিভাগ কর্তৃক জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণের ক্ষেত্রে প্রথমেই যে শর্তটি মেনে চলতে হবে, তা হলো বিচার বিভাগ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন বিচার বিভাগকে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা। শাসন বিভাগ যেন বিনা বিচারে কোন বিচারককে অপসারণ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বিচারকদের পর্যাপ্ত বেতন-ভাতাদি প্রদান, দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার মাপকাঠিতে বিচারক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বিচারকদের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি।

এই ছিল তোমাদের এসএসসি ২০২১ সালের ৮ম সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা নমুনা সমাধান/ উত্তরআইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা।

এসএসসি ২০২১ সালের ৮ম সপ্তাহের অন্যান্য অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা নমুনা সমাধান/ উত্তর-

[ninja_tables id=”11807″]

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ