২০২১ সালের বিজ্ঞান বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমাদের সাথে আজ আলোচনা করবো এসএসসি ২০২১ সালের ৭ম সপ্তাহের জীব বিজ্ঞান অ্যাসাইমেন্টের সমাধান/ উত্তর নিয়ে। আজকের আলোচনার নির্ধারিত বিষয়- হাতে কলমে একটি ফুলের বিভিন্ন স্তবক চিহ্নিতকরণ এবং পরাগায়ন মাধ্যমের সাথে তার সম্পর্ক বিশ্লেষণ। তোমাদের বোঝার সুবিধার্থে এই আর্টিকেলের প্রথম অংশে অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্ন ও ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে এবং পরবর্তী অংশে ক্রমান্বয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে।
এসএসসি ২০২১ সালের ৭ম সপ্তাহের সংশোধিত জীব বিজ্ঞান অ্যাসাইমেন্ট এর বাছাইকরা সমাধান/ উত্তর
অ্যাসাইনমেন্ট: হাতে কলমে একটি ফুলের বিভিন্ন স্তবক চিহ্নিতকরণ এবং পরাগায়ন মাধ্যমের সাথে তার সম্পর্ক বিশ্লেষণ;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
১. জীববিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকের ২৩৩-২৩৯ পৃষ্ঠা পাঠ করতে হবে;
২. আশেপাশে সহজলভ্য এমন কোনাে এক প্রজাতির ফুলের এক বা একাধিক নমুনা সংগ্রহ করতে হবে;
৩. ফুলটি ব্যবচ্ছেদ করতে হবে; এজন্য ব্লেড বা কাঁচির প্রয়ােজন হবে; দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য স্কেল বা রুলার প্রয়ােজন হবে;
সতর্কতা: ধারালাে যন্ত্র নিয়ে কাজ করার সময় খুব সাবধান থাকতে হবে যাতে নিজের ক্ষতি না হয়। পরিবারের বয়ােজ্যেষ্ঠ কারাে তত্ত্বাবধানে কাজটি করতে হবে;
৪. জীববিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকের ২৩৫ পৃষ্ঠার চিত্রের মতাে করে শিক্ষার্থী তার সংগৃহীত ফুলের একটি চিত্র অঙ্কন করবে সেখানে সবগুলাে স্তবক লেবেল করতে হবে; পাশাপাশি একটি স্কেল বা দৈর্ঘ্য মাপক আঁকতে হবে যেটির সাপেক্ষে আঁকা ফুলের বিভিন্ন অংশের প্রকৃত মাপ কত সেটি নির্ণয় করা সম্ভব;
(উদাহরণ হিসেবে পরবর্তী পৃষ্ঠায় অ্যাসাইনমেন্টের ছক দ্রষ্টব্য);
৫. অ্যাসাইনমেন্টের ছক অনুসারে ফুলের ৬ টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে হবে
৬. ফুলের উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যাবলীর ভিত্তিতে সেটির পরাগায়ন কীভাবে হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, তা অ্যাসাইনমেন্টের ছকের নির্ধারিত ঘরে উল্লেখ করতে হবে;
৭. পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে যেটি উল্লেখ করা হবে সেটির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে হবে; (শব্দসীমা ৭০-১০০);
নিচে জবা ফুলের বিভিন্ন অংশ চিত্র সহ দেখানো হলোঃ
ফুলের বিভিন্ন অংশ
(a) পুষ্পাক্ষ (Thalmus) : পুষ্পাক্ষ সাধারণত গোলাকার এবং ফুলের বৃন্ডশীর্ষে অবস্থান করে। এর উপর বাকি চারটি স্তবক পরপর সাজানো থাকে।
(b) বৃতি (Calyx): ফুলের বাইরের স্তবককে বৃতি বলে। বৃতি খণ্ডিত না হলে সেটি যুক্তবৃত্তি, কিন্তু যখন এটি সম্পূর্ণরূপে খণ্ডিত হয়, তখন তাকে বিযুক্তবৃতি বলে। এর প্রতিটি খণ্ডকে বৃত্যাংশ বলে। সবুজ বৃতি খাদ্য প্রস্তুত কাজে অংশ নেয়। এদের প্রধান কাজ ফুলের ভিতরের অংশগুলোকে রোদ, বৃষ্টি এবং পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা। তবে যখন বৃতি রং-বেরঙের হয়, তখন তারা পরাগায়নে সাহায্য করে। অর্থাৎ পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এমন পোকামাকড়, পশু, পাখি ইত্যাদিকে আকর্ষণ করে।
(c) দলমণ্ডল (Corolla): এটি বাইরের দিক থেকে দ্বিতীয় স্তবক। প্রতিটি খণ্ডকে দল বা পাপড়ি বলে। পাপড়িগুলি যুক্ত থাকলে যুক্তদল এবং আলাদা থাকলে বিযুক্তদল বলা হয়। পাপড়ি সাধারণত রঙিন হয়।
(d) পুংস্তবকঃক (Androecium): এটি ফুলের তৃতীয় স্তবক এবং একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। এই ম্ভবকের প্রতিটি অংশকে পুংকেশর (stamen) বলে। একটি পুংস্তবকে এক বা একাধিক পুংকেশর থাকতে পারে। প্রতিটি পুংকেশরের দুইটি অংশ যথা-
- পুংদণ্ড বা পরাগদণ্ড (filarment) এবং
- পরাগধানী বা পরাগথলি (anther)।
পুংকেশরের দণ্ডের মতো অংশকে পুংদণ্ড এবং শীর্ষের থলির মতো অংশকে পরাগধানী বলে। পরাগধানী এবং পুংদন্ড সংযোগকারী অংশকে যোজনী বলে। পরাগধানীর মধ্যে মধ্যে পরাগ উৎপন্ন হয়।
হাতে কলমে একটি ফুলের বিভিন্ন স্তবক চিহ্নিতকরণ এবং পরাগায়ন মাধ্যমের সাথে তার সম্পর্ক বিশ্লেষণ
এই পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয়ে পরাগনালি (Pollen tube) গঠন করে। এই পরাগ নালিকায় পুংজননকোষ (Male gamete) উৎপন্ন হয়। পুংজননকোষ সরাসরি জনন কাজে অংশগ্রহণ করে। কখনো পুংস্তবকের পুংদণ্ডগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। আবার পরাপথলিগুলোও কখনো পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে।
- পরাগদণ্ড এক গুচ্ছে থাকলে তাকে একগুচ্ছ (Monadelphous), (যেমন: জবা),
- দুই গুচ্ছে থাকলে দ্বিগুচ্ছ (Dladelphous), (যেমন: মটর) এবং
- বহুগুচ্ছে থাকলে তাকে বহুগুচ্ছ (Polyadelphous) পুস্তক বলা হয়, (যেমন: শিমুল)।
- যখন পরাগধানী একপুচ্ছে থাকে, তখন তাকে যুক্তধানী বা সিনজেনেসিয়াস (Syngenesious),
- মুক্ত অবস্থায় এবং পুংকেশর দলমণ্ডলের সাথে যুক্ত থাকলে তাকে মসলগ্ন (Epipetalous) পুস্তক বলে (যেমন: ধুতুরা)।
(e) স্ত্রীস্তবক(Gynoectum): খ্ৰীৰক বা পর্ভকেশরের অবস্থান ফুলটির কেন্দ্রে। এটি ফুলের আর একটি অত্যাবশ্যকীয় স্তবক। স্ত্রীস্তবক এক বা একাধিক গর্ভপত্র (Carpel) নিয়ে গঠিত হতে পারে। একটি গর্ভপত্রের তিনটি অংশ, যথা:
- গর্ভাশয় (Ovary),
- গর্ভপন্ড (Style) এবং
- পর্ভমুণ্ড (Sigma)।
যখন কতগুলো গর্ভপত্র নিয়ে একটি গ্রীস্তবক গঠিত হয় এবং এরা সম্পূর্ণভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে, তখন তাকে যুক্তগর্ভপত্রী (Syncurpous), আর আলাদা থাকলে বিযুক্তপর্ভপত্রী (Polycarpous) বলে। গর্ভাশয়ের ভিতরে এক বা একাধিক ডিম্বক বিশেষ নিয়মে সজ্জিত থাকে। এসব ডিম্বকের মধ্যে গ্রীপ্রজননকোষ বা ডিম্বাণু সৃষ্টি হয়। এই ডিম্বাণুই পুংস্তবকের মতো সরাসরি জননকাজে অংশগ্রহণ করে।
চিত্রটি হতে ফুলের পাচটি অংশ আলাদা করে সেন্টিমিটার এককে নির্ণয় করা হলোঃ
১. স্ত্রীস্তবকঃ
- মোট দৈর্ঘ্য -3.0cm
- গড় প্রস্থ-0.4cm
২.পুংকেশরঃ
- দৈর্ঘ্য -2.5cm
- প্রস্থ-0.3cm
৩.পাপড়িঃ
- দৈর্ঘ্য -4.4cm
- প্রস্থ-1.8cm
৪.পুষ্পাক্ষঃ
- দৈর্ঘ্যঃ0.8cm
- প্রস্থঃ0.4cm
৫.বৃতি
- দৈর্ঘ্যঃ1.9cm
- প্রস্থঃ0.5cm
জবা ফুলের বৈশিষ্ট্যঃ
- ১.এটি একটি সম্পূর্ণ ফুল। এখানে ফুলের পাচটি অংশ বিদ্যমান।
- ২.একে আদর্শ ফুল বলা হয় কারণ পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক বিদ্যমান।
- ৩.স্ত্রীস্তবক ফুলটির কেন্দ্রে।
- ৪.গর্ভাশয়ের ভিতর একাধিক ডিম্বক রয়েছে।
- ৫.ফুলটির বৃতি গুলো যুক্ত থাকে।
- ৬.ফুলটির পরাগায়ন ঘটে পতঙ্গ দ্বারা।
ফুলের বৈশিষ্ট্য ভিত্তিতে যেভাবে পরাগায়নের সম্ভাবনা বেশি তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
এটির মূলত পর-পরাগায়ন ঘটে।
পর-পরাগায়নঃ
পরাগ স্থানান্তরের কাজটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাধ্যমের দ্বারা হয়ে থাকে। যে মাধ্যম পরাপ বহন করে গর্ভমুণ্ড পর্যন্ত নিয়ে যায়, তাকে পরাগায়নের মাধ্যম বলে। বায়ু, পানি, কীট-পতঙ্গ, পাখি, বাদুড়, শামুক এমনকি মানুষ এ ধরনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। মধু খেতে অথবা সুন্দর রঙের আকর্ষণে পতঙ্গ বা প্রাণী ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। এ সময়ে ঐ স্কুলের পরাগরেণু বাহকের গায়ে লেগে যায়। এই বাহকটি যখন অন্য ফুলে গিয়ে বসে তখন পরাগ পরবর্তী ফুলের পর্ভমুণ্ডে লেগে যায়। এভাবে পরাগায়ন ঘটে। পরাগায়নের মাধ্যমগুলোর সাহায্য পেতে ফুলের পঠনে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
জবার পরাগায়নঃ
পতঙ্গ পরাগী ফুল বড়, রঙিন ও মধুপ্রন্থিযুক্ত এবং পরাগরেণু ও গর্ভমুণ্ড আঠালো ও সুগন্ধযুক্ত হয়। এই পদ্ধতিতে এই ফুলের পরাগায়নের সম্ভাবনা বেশি।
এটিই তোমাদের এসএসসি ২০২১ সালের ৭ম সপ্তাহের জীব বিজ্ঞান অ্যাসাইমেন্টের সমাধান/ উত্তর- হাতে কলমে একটি ফুলের বিভিন্ন স্তবক চিহ্নিতকরণ এবং পরাগায়ন মাধ্যমের সাথে তার সম্পর্ক বিশ্লেষণ।
এসএসসি ২০২১ সালের ৭ম সপ্তাহের অন্যান্য অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর/ সমাধান দেখুন-
বিষয়ের নাম | অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম | অ্যাসাইনমেন্ট ও সমাধান |
---|---|---|
পদার্থ বিজ্ঞান | আয়না সমাচার: প্রতিবিম্ব, আয়না থেকে বস্তু ও প্রতিবিম্বের দূরত্ব | https://banglanotice.com/%e0%a6%86%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ac/ |
জীব বিজ্ঞান | হাতে-কলমে একটি ফুলের বিভিন্ন স্তবক চিহ্নিতকরণ এবং পরাগায়নের মাধ্যমের সাথে সম্পর্ক বিশ্লেষণ | https://banglanotice.com/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%ab%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0/ |
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং | ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাফল্যও স্থায়িত্বের সাথে মূলধন বাজেটিং এর সম্পর্ক বিশ্লেষণ | https://banglanotice.com/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be/ |
ব্যবসা উদ্যোগ | বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সমবায় সমিতির গুরুত্ব বিশ্লেষণ | https://banglanotice.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%95/ |
অর্থনীতি | একটি দেশের জিডিপি নির্ভর করে সেই দেশের ভূমি, প্রাকৃতিক সম্পদ, শ্রম, মূলধন ও প্রযুক্তি ইত্যাদি সম্পদের পরিমাণ এবং উৎপাদনশীলতার উপর | https://banglanotice.com/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ad%e0%a6%b0/ |
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা | “ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ” শীর্ষক প্রবন্ধ | https://banglanotice.com/%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8b%e0%a6%b2%e0%a6%a8-%e0%a6%93-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%99%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf/ |
আরো দেখুন-
প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।