সর্বশেষ আপটেড

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত তৃতীয় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের নৈর্বাচনিক বিষয় পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র তৃতীয় এসাইনমেন্ট হিসেবে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায়- ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের বিকাশ এর ১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা একটি অ্যাসাইনমেন্ট করতে দেয়া হয়েছে।

এখানে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহের মানবিক বিভাগের পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এবং সমাধান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করা হলো।

মানবিক বিভাগ থেকে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্রের অ্যাসাইনমেন্ট যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণ করে সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকের নিকট জমা দিতে হবে।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট পৌরনীতি ও সুশাসন

সকল সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট নেয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায়- ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের বিকাশ থেকে।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাস এর আলোকে শিক্ষার্থীরা পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে পারবে, ১৯৪৭ সালে ভারত শাসন আইনের রাজনৈতিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবেন, দ্বিজাতিতত্ত্বের তাৎপর্য মূল্যায়ন করতে পারবে, লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবে, লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে এবং ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবে।

নিচের ছবিতে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মানবিক বিভাগের পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো

বিষয়ঃ পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র, অ্যাসাইনমেন্ট নং-০২, অধ্যায় ও শিরোনামঃ প্রথম অধ্যায়- ব্রিটিশ ভারতে প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের বিকাশ

অ্যাসাইনমেন্টঃ ১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

ক. ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন;

খ. দ্বিজাতি তত্ত্ব;

গ. লাহোর প্রস্তাব;

ঘ. ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন;

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ তৃতীয় সপ্তাহের পৌরনীতি ও সুশাসন অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান বা উত্তর

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহের মানবিক বিভাগের নৈর্বাচনিক বিষয় পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট এ দেওয়া নির্দেশনায় প্রশ্নসমূহ ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন রুবিকস এর আলোকে সমাধান করে দেয়া হলো।

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা

ভারত শাসন আইন ১৯৩৫ ছিল ব্রিটিশ সরকার রাজের পরাধীন ভারতের শেষ সংবিধান। এই আইনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক ছিল: এইটি ভারতীয় প্রদেশ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করল এবং ভারত শাসন আইন ১৭৮৪ শেষ হল। এইটি ফলে সমস্ত ভারতীয় প্রাদেশিক রাজ্যগুলি ভারত ফেডারেশনের জন্য যোগ দিল।

ক) ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট ও বৈশিষ্ট্য :

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে লন্ডনে তৃতীয় গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেস যথারীতি ওই বৈঠকে যোগদান করেনি। অন্যান্য দল ও সম্প্রদায়ের অনেক কম সংখ্যক প্রতিনিধি এই বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। তাঁরা ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্রে কয়েকটি প্রগতিশীল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাইলে ব্রিটিশ সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে। তবে এই বৈঠক এবং পরবর্তী আলোচনা সমূহের ফলশ্রুতি হিসাবে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন বিধিবদ্ধ হয়। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সদস্যদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট সিলেক্ট কমিটির রিপোর্ট, ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশিত শ্বেতপত্র বা সরকারি দলিল প্রভৃতির সুপারিশ ও আলোচনার ভিত্তিতে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন রচনা করেন।

১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহারের পর ১৯৩০ ও ১৯৪০ -এর দশকে ভারতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দুটি ধারায় চলতে থাকে। একটি কংগ্রেসের নেতৃত্বে জাতীয় আন্দোলন, অপরটি বামপন্থীদের নেতৃত্বে বামপন্থী আন্দোলন। কংগ্রেস নিয়ম তান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পক্ষপাতি ছিলেন এবং বামপন্থীরা গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশের শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের সন্তুষ্ট করার জন্য ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইন প্রণয়ন করেন।

ভারত শাসন আইনের ও বৈশিষ্ট্য :

  • ১) গণ আন্দোলন: ১৯১৯ সালের মন্টফোর্ড সংস্কার আইন ভারতীয়দের আশাআকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থ হলে গান্ধীজির নেতৃত্বে ব্যাপক গণ আন্দোলন শুরু হয়।
  • ২) বিপ্লবী কার্যকলাপ: এই সময় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিপ্লবী কার্যকলাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। ফলে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
  • ৩) জাতীয়তাবাদের প্রভাব: ভারতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসার ব্রিটিশ সরকারকে ভাবিয়ে তােলে।
  • ৪) সাইমন কমিশনের রিপাের্ট: ১৯৩০ সালে সাইমন কমিশন ভারতীয়দের স্বায়ত্তশাসন বিষয়ে যে রিপাের্ট দেয় তা ভারত শাসন আইন প্রণয়নের পথ খুলে দেয়।
  • ৫) গােলটেবিল বৈঠক: সাইমন কমিশনের রিপাের্টের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলােচনা শুরু করে। এই আলােচনা গােলটেবিল বৈঠক নামে পরিচিত | এই আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সাংবিধানিক সংস্কার করতে বাধ্য হয়।
  • ৬) শ্বেতপত্র প্রকাশ: এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৩ সালে একটি ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করতে বাধ্য হয় যার ভিত্তিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন পাশ করে। এই আইনের শর্তাবলী বিশ্লেষণ করলে এর কিছু বৈশিষ্ট্য নজরে পড়ে |

কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে:

  • ১) ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠন: এই আইনে ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়। দেশীয় রাজ্যগুলির যুক্তরাষ্ট্রে যােগ দেওয়া ঐচ্ছিক হিসাবে গন্য হয়।
  • ২) দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা : কেন্দ্রে পাঁচ বছর মোদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের সিন্ধান্ত নেওযা হয়। নিম্নকক্ষ ফেডারেল এসেম্বলি ৩৭৫ জন এবং উচ্চকক্ষ কাউন্সিল অব স্টেট ২৬০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে বলে ঘােষিত হয়।
  • ৩) সাম্প্রদায়িক নির্বাচন : মুসলিম ও তফসিল সদস্যদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।
  • ৪) মন্ত্রিপরিষদের দায়িত্ব: গভর্নর জেনারেলের অধীনে একটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাসনভার দেওয়া হয়। মন্ত্রীরা কাজের জন্য আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন বলে জানানাে হ।
  • ৫) শাসন ক্ষমতা বিভক্তিকরণ: কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন ক্ষমতকে সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত এই দুভাগে ভাগ করা হয়। প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক, ব্যাংক ইত্যাদি। সংরক্ষিত বিষয়ে গভর্নর জেনারেলের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়।
  • ৬) গভর্নর জেনারেলের চূড়ান্ত ক্ষমতা: গভর্নর জেনারেল শাসন পরিচালনায় চূড়ান্ত ক্ষমতা লাভ করেন। এছাড়া ‘ সােচ্ছাধীন ক্ষমতা’ ও ‘স্ববিবেচনাপ্রসূত ক্ষমতা’ ভােগ করতেন।
  • ৭) কেন্দ্র ও প্রদেশের ক্ষমতার তালিকা: কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের উদ্দেশ্যে তিনটি পৃথক তালিকা তৈরি করা হয়। ক) কেন্দ্রীয় তালিকা, খ) প্রাদেশিক তালিকা, গ) যুগ্ম তালিকা।
  • ৮) গভর্নর জেলারেলের দায়বদ্ধতা: গভর্নর জেনারেল তার কাজের জন্য সরাসরি ভারত-সচিব ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন।

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা

প্রাদেশিক সরকারের ক্ষেত্রে:

১) স্বায়ত্তশাসন: প্রদেশগুলিতে দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২) প্রাদেশিক আইনসভা: বাংলা-সহ ছ্যটি প্রদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট এবং অবশিষ্ট পাচঁটিতে এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা রাখা হ্য।

৩) দায়বদ্ধতা: প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা তাদের কাজের জন্য প্রাদেশিক আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।

৪) গভর্নরের দায়িত্ব: কেন্দ্রের অনুকরণে প্রদেশের আইনশৃঙ্খলা, ধর্ম ইত্যাদির দায়িত্ব গভর্নরের হাতে দেওয়া হয়।

৫) গভর্নরের চূড়ান্ত ক্ষমতা: প্রদেশের গভর্নর আইন প্রণয়ন ও নাকচ করার অধকারী হন।

(খ) দ্বি-জাতি তত্ত্বের তাৎপর্য :

ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে ভারতকে রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত করার নির্ণায়ক আদর্শাশ্রয়ী একটি রাজনৈতিক মতবাদ| ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন অবসানের প্রাক্কালে বিশ শতকের চল্লিশের দশকে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারণার উন্মেষ ঘটান। এ তথ্যের ভিত্তিতে ভারত ও পাকি রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্বই ১৯৪০ সালের লাহাের প্রস্তাব উত্থাপনের ভিত্তি তৈরি করেছিল। কংগ্রেস সভাপতি পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ঘােষণা করেন যে, ভারতীয় উপমহাদেশে কেবল দুটি দলের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। একটি হলাে কংগ্রেস এবং অপরটি হলাে সরকার এবং বাকি দলগুলাে কংগ্রেস অন্তর্ভুক্ত। মুসলমান। মৃত্যুদণ্ড অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ হিন্দু-মুসলিম সমস্যা সমাধানের | জন্য। হিন্দু নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলােচনা করেও ব্যর্থ হন। পরে জিন্নাহ উপলব্ধি করেন যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকলে মুসলমানের স্বার্থ রক্ষা পাবে না।

১৯৪০ সালের ২২ মার্চ মােহাম্মদ আলী জিন্নাত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে সভাপতির ভাষণ দ্বিজাতি তষ্কের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। এভাবে,ভারতবর্ষের দুটি পৃথক জাতির বসবাস হিন্দু ও মুসলমান মুসলমানের কৃষ্টি স্বতন্ত্র, কালচার স্বতন্ত্র প্রাপ্ত আশাআকাঙ্ক্ষা স্বতন্ত্র, তাদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্বতন্ত্র।সুতরাং জাতীয়তা যেকোনাে মানদণ্ড অনুযায়ী ভারতের মুসলমানরা একটি জাতি। এভাবে মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে জোরালাে যুক্তি তুলে ধরা হয়। যার প্রতিফলন ঘটে ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাবে। পরবর্তীতে দত ভরের ভিত্তিতেই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

(গ) লাহাের প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য ও তাৎপর্য:

লাহাের প্রস্তাব:

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহােরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলার কৃতি সন্তান শেরে বাংলা একে ফজলুল হক যে প্রস্তাব পাস করেন সে প্রস্তাব লাহাের প্রস্তাব নামে খ্যাত লাহাের। প্রস্তাবে নামে খ্যাত লাহাের প্রস্তাবে বলা হয়, ভৌগােলিক অবস্থান। অনুযায়ী। সন্নিহিত স্থানসমূহকে অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। প্রযােজনমতাে সীমা পরিবর্তন করে যেসব স্থানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেসব অঞ্চলসমূহের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।এসব স্বাধীন রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলাে হবে স্বায়ত্তশাসিত সার্বভৌম। রাহুল প্রস্তাবের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের ১৪আগস্ট ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্রের রূপান্তরিত হয়।

বৈশিষ্ট্য ও তাৎপর্য :

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহােরে All India | Muslim League -এর ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারণে জন্য যে অধিবেশন আহ্বান করা হয় ঐ অধিবেশনের লাহাের প্রস্তাব গৃহীত হয়। নিচে লাহাের প্রস্তাবের মূল বৈশিষ্ট্য সমূহ তুলে ধরা হলাে:

১. ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে এর উত্তরপশ্চিম ও পূর্ব অঞ্চলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা গুলাে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ গঠন করতে হবে।

২. উল্লিখিত স্বাধীন রাষ্ট্র সমূহের অধীন ইউনিট বা প্রদেশগুলাে স্বায়ত্তশাসিত ও সরকার।

৩. ভারতের অন্যান্য হিন্দু অঞ্চলগুলাের সমন্বয়ে পৃথক হিন্দু রাষ্ট্র গঠিত হবে।

৪. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রস্তাবের তাৎপর্য সাথে পরামর্শ ভিত্তিতে তাদের স্বার্থ অধিকার ও রক্ষার জন্য সংবিধানের পর্যাপ্ত ক্ষমতা রাখতে হবে।

৫. প্রতিরক্ষা, পরস্বরাষ্ট্র ও যােগাযােগ ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যগুলাের উপর ন্যস্ত থাকবে।

তাৎপর্য:

ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব অবিভক্ত ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করে। লাহাের প্রস্তাব গৃহীত হবার পর লীগের রাজনীতিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের সুযােগ উপস্থিত হয়। মুসলমানের মধ্যে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবােধ জাগ্রত হয়। অপরদিকে হিন্দুরা লাহাের প্রস্তাবকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি। গান্ধীর মতে, লাহাের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার অর্থ ‘ভারতকে ব্যবচ্ছেদ করা এবং তা হবে একটি পাপ কাজ।

জওহরলাল নেহেরু বলেন, লাহাের প্রস্তাব মেনে ভারত বই পড়বে বলকান রাষ্ট্র গুলাের ছােট ছােট রাষ্ট্রে বিভক্ত কর্তৃত্ববাদী পুলিশী রাষ্ট্র। লাহাের প্রস্তাব কে মুসলিম লীগ বিরােধী পত্রিকাগুলাে ‘পাকিস্তান। প্রস্তাব’ বলে অভিহিত করে। সমালােচনা শুরু করে। তাদের অপবাদই পরে মুসলিম লীগের জন্য সুবাদে পরিণত হয়। লাহাের প্রস্তাব পাকিস্তান প্রস্তাব’ নামে পরিচিতি অর্জন করে। লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়।

(ঘ) ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের প্রেক্ষাপট ও বৈশিষ্ট্য :


১৯৪৭ সালের ৩ জুন লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারত । স্বাধীনতা আইনের পরিকল্পনা করেন, যা ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাশ হয়। নিচে ভারত স্বাধীনতা আইনের বৈশিষ্ট্যগুলাে দেওয়া হলাে :

০১। স্বাধীন পৃথক রাষ্ট্রের সৃষ্টি: এই আইনের ফলে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে। দুটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় এবং

০২| নতুন প্রদেশ সৃষ্টি: পূর্ব-বাংলা এবং পশ্চিম বাংলা নামে দুটি আলাদা প্রদেশের সৃষ্টি হয়।

০৩। ব্রিটিশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার: “ভারত আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সরকারের কোনাে নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্ব থাকবে না।

০৪। গভর্নর জেনারেল নিযােগ ও ভারত সচিবের বিলুপ্তি: নবগঠিত রাষ্ট্রসমূহের জন্য পৃথক গভর্নর জেনারেল হবেন রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি। এটার মাধ্যমে ভারতে সচিবের পদ বিলুপ্ত করা হয়।

০৫। গভর্নর জেনারেল ও গভর্নরের ক্ষমতা হ্রাস: ভারত স্বাধীনতা আইনে গভর্নর জেনারেল এবং গভর্নরের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা, বিচার-বুদ্ধিজনিত হয়ে থাকে।

০৬। আইন কার্যকরীর সময়: ১৯৪৮ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এই আইনের বিভিন্ন ধারা কার্যকর করতে হবে।

০৭। ব্রিটিশ রাজার “ভারত সম্রাট উপাধি বিলােপ: ভারত স্বাধীনতা আইন কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে ব্রিটিশ রাজার ভারত সম্রাট উপাধি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

সুতরাং, বলা যায় যে- ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ আইনের ফলেই ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

তৃতীয় সপ্তাহে মানবিক বিভাগের অন্যান্য বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট ও সমাধান বা উত্তর

[ninja_tables id=”10242″]

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহে অন্যান্য বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট

বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহে অন্যান্য নির্বাচনের বিষয়ে বাছাই করা সেরা উত্তর দেখার জন্য নিচে টেবিলটি অনুসরণ করুন- 

[ninja_tables id=”10239″]

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আপনার জন্য আরও কিছু তথ্য:

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ