মৌলিক পদার্থের গঠন, অনু ও পরমাণুর পার্থক্য, সার্বজনীন দ্রাবক
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজ তোমাদের সাথে মৌলিক পদার্থের গঠন, অনু ও পরমাণুর পার্থক্য, সার্বজনীন দ্রাবক নিয়ে আলোচনা করবো; এই আলোচনা শেষে তোমরা মৌলিক পদার্থের গঠন, অনু ও পরমাণুর পার্থক্য, সার্বজনীন দ্রাবক নিয়ে সপ্তম শ্রেণির ৪র্থ এস্যাইনমেন্ট এর বিজ্ঞান বিষয়ের নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।
তবে কোনোভাবেই সরাসরি কপি করবেনা। শুধুমাত্র মৌলিক আইডিয়া সংগ্রহ করে নিজের মত করে গুছিয়ে লিখবে।
আজকের আলোচনা থেকে তোমরা যা জানতে পারবে-
প্রশ্ন ১: লিথিয়াম, পানি, খাবার লবন, চক, কার্বন, চুন, নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম, অক্সিজেন, আয়ােডাইড, লােহা, ক্লোরিন ইত্যাদি কিছু পদার্থ।
- ক) মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?
- খ) অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
- গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত পদার্থগুলােকে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে প্রকাশ করে মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ আলাদা কর।
- ঘ) উল্লেখিত পদার্থগুলাের মধ্যে কাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়? কারণ বিশ্লেষণ কর।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ১ : চিনিকে কেন যৌগিক পদার্থ বলা হয়?
চলো তাহলে আমরা আজকের আলোচনায় ফিরে যাই-
ক. মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর: আমরা জানি প্রত্যেকটি পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। যেসকল পদার্থের অতি ক্ষুদ্রতম কণিকা এক অভিন্ন উপাদান দিয়ে গঠিত তাকে মৌলিক পদার্থ বলে।
অর্থাৎ যে সকল পদার্থ একটি মাত্র উপাদান দিয়ে গঠিত তাকে মৌলিক পদার্থ বলে।
খ) অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উত্তর: অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য:
- সংজ্ঞা: মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা কে অনু বলে আর অনুর ক্ষুদ্রতম কণা কে পরমাণু বলে।
- অবস্থান: পরমাণু স্বাধীনভাবে থাকতে পারে না কিন্তু অন্য স্বাধীনভাবে থাকতে পারে।
- ক্ষুদ্রতম কণা: অনুর ক্ষুদ্রতম কণা কে পরমাণু বলে আর পরমাণুর ক্ষুদ্রতম কণা কে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন বলে।
- গঠন: অনু অনেকগুলো ক্ষুদ্রতম পরমাণু দিয়ে গঠিত আর পরমাণু ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন দিয়ে গঠিত।
- দুই বা ততোধিক একই ধরনের পরমাণু মিলে একটি মৌলিক পদার্থ গঠন করে আর দুই বা ততোধিক ভিন্নধর্মী পদার্থের পরমাণুর মিলে একটি যৌগিক পদার্থের অণুর গঠন করে।
- পরমাণু প্রতীক দিয়ে চিহ্নিত করা হয় আর অনু সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত পদার্থগুলােকে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে প্রকাশ করে মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ আলাদা কর:
উত্তর: উদ্দীপকে উল্লেখিত পদার্থসমূহের প্রতীক সংকেত ও মৌলিক ও যৌগিক পদার্থ আলাদা করা হল-
মৌলিক পদার্থ সমূহ:
পদার্থের নাম | প্রতীক | সংকেত |
লিথিয়াম | Li | |
কার্বন | C | |
নাইট্রোজেন | N | N2 |
অক্সিজেন | O | O2 |
লোহা | Fe | |
ক্লোরিন | C1 | C12 |
পটাশিয়াম | k | |
আয়োডাইড | I |
যৌগিক পদার্থ সমূহ:
পদার্থের নাম | সংকেত |
পানি | H2O |
খাবার লবন | NaCl |
চক | CaCO3 |
চুন | CaO |
উত্তর: সার্বজনীন দ্রাবক: উপরে উল্লেখিত পদার্থগুলোর মধ্যে পানি একটি সার্বজনীন দ্রাবক।ঘ) উল্লেখিত পদার্থগুলাের মধ্যে কাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়? কারণ বিশ্লেষণ কর;
পানি সার্বজনীন দ্রাবক হওয়ার কারণ:
পানি একটি সার্বজনীন দ্রাবক, কারণ এটি জৈব ও অজৈব অনেক পদার্থকে দ্রবীভূত করে যা অন্য দ্রাবক এর পক্ষে সম্ভব নয়।
এখন আমরা একটি পরীক্ষার মাধ্যমে জানবো পানি সত্যিকারঅর্থে সার্বজনীন দ্রাবক কিনা:
পরীক্ষণ এর নাম: পানি সার্বজনীন দ্রাবক এর কারণ বিশ্লেষণ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
পানি, টেস্ট টিউব, নানারকম পদার্থ (যেমন খাবার লবণ, সোডা, টেস্টিং সল্ট, বিট লবণ, ফিটকিরি, চিনি, ভিনেগার, স্পিরিট, ভিটামিন সি ট্যাবলেট, গ্লুকোজ ইত্যাদি)
পরীক্ষণ পদ্ধতি:
- ১. প্রথমে আমরা টেস্টটিউবে ৫ মিলি লিটার এর মত পানি নিব।
- ২. টেস্টটিউব নেওয়া পানির সাথে কিছু খাবার লবণ যোগ করে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিব।
- ৩. এভাবে প্রত্যেকটি জৈব ও অজৈব পদার্থ গুলো কে পানিতে মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে পর্যবেক্ষণ করব।
- ৪. এরপর আমরা অন্য একটি দ্রাবক যেমন স্পিরিট দিয়ে উপরে উল্লেখিত সবগুলো জৈব ও অজৈব পদার্থ গুলো দ্রবীভূত করার চেষ্টা করব।
পর্যবেক্ষণ:
- ১. আমরা দেখতে পেলাম পানি অজৈব ও জৈব পদার্থ গুলো দ্রবীভূত করতে সক্ষম।
- ২. অন্য দ্রাবক ইসপিরিট উপরে উল্লেখিত জৈব ও অজৈব পদার্থের মধ্যে সবগুলোকে দ্রবীভূত করতে পারেনি।
সিদ্ধান্ত:
যেহেতু পানি সবগুলো জৈব ও অজৈব পদার্থ কে দ্রবীভূত করতে সক্ষম সেহেতু আমরা পানিকে সার্বজনীন দ্রাবক বলতে পারি।
বিশ্লেষণ:
পানি সবগুলো অজৈব ও জৈব পদার্থকে নিজের মধ্যে দ্রবীভূত করতে পেরেছে কিন্তু অন্য একটি দ্রব্য যেমন ইসপিরিট নিজের মধ্যে অন্য কোন জৈব ও অজৈব পদার্থ কে দ্রবীভূত করতে পারেনি। সুতরাং পানি একটি সার্বজনীন দ্রাবক।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ১ : চিনিকে কেন যৌগিক পদার্থ বলা হয়?
উত্তর: চিনিকে যৌগিক পদার্থ বলার কারণ:
যৌগিক পদার্থের সংজ্ঞা থেকে আমরা পাই, যে সকল পদার্থ অনেকগুলো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা অর্থাৎ পরমাণু দিয়ে গঠিত সে গুলোকে যৌগিক পদার্থ বলে।
মৌলিক পদার্থকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করে অন্য কোনো বস্তুতে রূপান্তরিত করা যায় না। আবার যৌগিক পদার্থকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করলে একাধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়। চিনিকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করলে C, H ও O মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়। তাই চিনিকে যৌগিক পদার্থ বলা হয়।
এই ছিল তোমাদের জন্য মৌলিক পদার্থের গঠন, অনু ও পরমাণুর পার্থক্য, সার্বজনীন দ্রাবক নিয়ে আজকের আলোচনা।
তোমাদের জন্য এটি পাঠিয়েছেন, আরিয়ান আহমেদ ভূঁইয়া, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
তোমাদের এস্যাইনমেন্ট সংক্রান্ত যেকোন সমস্যার সমাধান পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ ডট কম এর ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করো <Join Now>; গ্রুপে দেশের অভিজ্ঞ শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নিচ্ছে।
প্রতি সপ্তাহের এস্যাইনমেন্ট তোমার ফেসবুক ওয়ালে পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি Like & Follow করে রাখো;
ইউটিউবে বিভিন্ন তথ্য পেতে বাংলা নোটিশ এর ইউটিউব চ্যানেল Subscribe করে রাখুন;
তোমার জন্য নির্বাচিত কিছু তথ্য:
- বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি আদায় প্রসঙ্গে মাউশি বিজ্ঞপ্তি
- মৌলিক পদার্থের গঠন, অনু ও পরমাণুর পার্থক্য, সার্বজনীন দ্রাবক
- একজন সুনাগরিকের গুণাবলি ও আমায় এলাকার নির্বাচনী আচরণ বিধি
Kk
Good and good