সর্বশেষ আপটেড

ব্যাপ্তির নিয়ম উল্লেখপূর্বক উদাহরণের সাহায্যে ব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থের হাস-বৃদ্ধি

২০২১ সালের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের জন্য এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- ব্যাপ্তির নিয়ম উল্লেখপূর্বক বাস্তব উদাহরণের সাহায্যে পদের ব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থের হাস-বৃদ্ধি নিয়মের যথার্থতা যাচাই।

আজকের আলোচনার সঠিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার চতুর্থ সপ্তাহের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদানকৃত যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।

আমরা এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ এর যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র এসাইনমেন্টের দেওয়া নির্দেশনা সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রশ্নে উল্লেখিত নির্দেশনাসমূহ ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব যাতে তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে সুবিধা হয়।

এইচএসসি ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহ যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট

এইচএসসি ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহ যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম:

ব্যাপ্তির নিয়ম উল্লেখপূর্বক বাস্তব উদাহরণের সাহায্যে পদেরব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থের হাসবৃদ্ধির নিয়মের যথার্থতা যাচাই;

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

  • পদের ব্যাপ্তির ধারণা;
  • পদের ব্যাপ্তির সাধারণ নিয়ম উল্লেখ করে A; E, I এবং O বাক্যে ব্যাখ্যা;
  • উদাহরণসহ ব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থ ব্যাখ্যা;
  • বাস্তবউদাহরণের সাহায্যে পদের ব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থের হ্রাসবৃদ্ধির নিয়মের বিশ্লেষণ;

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর

এইচএসসি ২০২১ পরীক্ষার্থী তোমাদের জন্য যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্রের চতুর্থ অ্যাসাইনমেন্ট এর একটি বাছাইকরা নমুনা উত্তর প্রস্তুত করে দেয়া হলো।

ক) ব্যাপ্তির ধারণা উপস্থাপন

ব্যাপ্তির হলো একটি পদ দ্বারা নির্দেশিত প্রতিটি ব্যক্তি বা ব্যক্তিবাচক বুঝনোর একটি বিশেষ ধর্ম বা গুণ (property)। ব্যাপ্তির ইংরেজি প্রতিশব্দ distribution দ্বাদশ শতকে উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন distributio থেকে পদকে নির্দেশনা তত্ত্বের অংশ হিসেবে প্রকাশ করার জন্য distributio শব্দটি ব্যবহার করা হতো এবং সার্বিক মানক (universal quantifier, যেমন: সব, সকল, যে কোন ইত্যাদি) ব্যবহার করে এর দ্বারা একটি পদের স্বধর্ম নির্দেশিত হতো। যেমন, কুকুর পদটির ক্ষেত্রে ‘সকল কুকুর হয় বিশ্বস্ত’; এখানে কুকুর পদটি ব্যাপ্য। কারণ প্রত্যেকটি কুকুরই নির্দেশ করা হয়েছে।

বিপরীতভাবে, ‘একটি কুকুর পিয়নকে তাড়া করেছে’-এ বাক্যে একই পদ কুকুর ব্যাপ্য নয়; কারণ এখানে একটি মাত্র কুকুরকে নির্দেশ করা হয়েছে। দ্বাদশ শতক থেকেই ব্যাপ্তির ধারণাটি সহানুমানের বৈধতা নিরূপণের কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

ব্যাপ্তির মানে হলো ব্যাপকতা বা প্রসারতা। একটি যুক্তিবাক্যে একটি পদ কতটুকু ব্যাপ্তি বা ব্যাপকতা নিয়ে ব্যবহৃত হয় তাই হলো ঐ পদের ব্যাপ্তি। সহজভাবে বলা যায় যে, যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত দু’টি পদ যে সব শ্রেণিকে নির্দেশ করে সেসব শ্রেণির সকল সদস্য না কতিপয় সদস্যকে প্রকাশ করছে তা বোঝানোর জন্য ব্যাপ্তি কথাটি ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ তাদের ব্যক্ত্যর্থের দিক থেকে যতটুকু বিস্তার লাভ করে তাকে পদের ব্যাপ্তি বলে। পদের ব্যাপ্তি সম্পর্কে যুক্তিবিদ এইচ.ডব্লিউ.বি. যোসেফ (H.W.B. Joseph) বলেন, “একটি পদ যখন তার সমগ্র ব্যক্ত্যর্থ কোনো যুক্তিবাক্যে নির্দেশ করে তখন পদটি পূর্ণব্যাপ্য; আর তা না হলে অব্যাপ্য।”

যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত পদসমূহ দুইভাবে তাদের ব্যক্ত্যর্থকে প্রকাশ করতে পারে। যেমন:

  • ক. পূর্ণ ব্যাপ্য পদ
  • খ. অপূর্ণ ব্যাপ্য পদ

খ) ব্যাপ্তির নিয়ম এর ব্যাখ্যা

গুণ ও পরিমাণের যুক্তভিত্তিতে যুক্তিবাক্যকে চার ভাগে ভাগ করা হয়; যথা:

  • সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্য (A),
  • সার্বিক নঞর্থক যুক্তিবাক্য (E),
  • বিশেষ সদর্থক যুক্তিবাক্য (I) ও
  • বিশেষ নঞর্থক যুক্তিবাক্য (O)।

A বা সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্য:

A যুক্তিবাক্যের উদ্দ্যেশ পদ ব্যাপ্য; কিন্তু বিধেয় পদ অব্যাপ্য। এ যুক্তিবাক্যটি একটি সার্বিক বাক্য বলে এর উদ্দেশ্যে পদ ব্যাপ্য। কারণ A বাক্যে উদ্দেশ্য পদ পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ সহকারে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি একটি সদর্থক যুক্তিবাক্য বলে এর বিধেয় পদ অব্যাপ্য। কারণ এর বিধেয় পদটি পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হয় না। যেমন: ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ একটি সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্য। এই যুক্তিবাক্য ‘মানুষ’ পদটি সামগ্রিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ বলতে পৃথিবীর সকল মানুষকেই নির্দেশ করা হয়েছে। কাজেই বাক্যটিতে উদ্দেশ্য ‘মানুষ’পদটি, ব্যাপ্য হয়েছে। কিন্তু বিধেয় ‘মরণশীল’ পদটি সামগ্রিক অর্থে গ্রহণ করা হয়নি। ‘মরণশীল’ পদে আংশিক ব্যক্ত্যর্থ মানুষের ক্ষেত্রে স্বীকার করা হয়েছে। কারণ মরণশীল জীবের সবাই মানুষ নয়। মানুষ ছাড়াও অনেক মরণশীল জীব আছে। মরণশীল জীবের ব্যক্ত্যর্থ খুবই ব্যাপক। এর একটি অংশকেই শুধু মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়। তাই উল্লিখিত উদাহরণের মরণশীল পদটি অব্যাপ্য।

E বা সার্বিক নঞর্থক যুক্তিবাক্য:

E যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য। E যুক্তিবাক্যটি একটি সার্বিক যুক্তিবাক্য বলে এর উদ্দেশ্য পদটি পূর্ণ ব্যাপ্য হয়। কারণ E বাক্যে উদ্দেশ্য পদ পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ সহকারে ব্যবহৃত হয়। আবার, ঊ বাক্যটি একটি নঞর্থক যুক্তিবাক্য বলে এর বিধেয় পদটি পূর্ণ ব্যাপ্য। কারণ, E বাক্যের বিধেয় পদও পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ সহকারে ব্যবহৃত হয়। যেমন: ‘কোনো মানুষ নয় দেবতা’। এ যুক্তিবাক্যে উদ্দেশ্য ‘মানুষ’ পদটি সামগ্রিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে মানুষ বলতে পৃথিবীর সকল মানুষকে নির্দেশ করা হয়েছে। কাজেই এ যুক্তিবাক্যে ‘মানুষ’ পদটি ব্যাপ্য। আবার, দেবতা পদটিকেও সামগ্রিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ‘দেবতা’ পদের সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকেই ‘মানুষ’ পদটির ক্ষেত্রে অস্বীকার করা হয়েছে। মানুষ ও দেবতার মধ্যে আসলে কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই এ যুক্তিবাক্যে দেবতা পদটিও ব্যাপ্য।

I বা বিশেষ সদর্থক যুক্তিবাক্য:

I যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই অব্যাপ্য। I বাক্যটি একটি বিশেষ যুক্তিবাক্য বলে এর উদ্দেশ্য পদ আংশিক ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হয়। আবার I যুক্তিবাক্যটি একটি সদর্থক যুক্তিবাক্য বলে এর বিধেয় পদটি পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই বিধেয় পদটিও অব্যাপ্য। যেমন: ‘কিছু গরু হয় লাল’। এই যুক্তিবাক্যে উদ্দেশ্য ‘গরু’ পদটিকে আংশিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে গরু শ্রেণির একটি অংশের উপর একটি বক্তব্য আরোপ করা হয়েছে। কাজেই উদ্দেশ্য গরু পদটি অব্যাপ্য। আবার বিধেয় ‘লাল’ পদটিকেও আংশিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ‘লাল’ পদটির আংশিক ব্যক্ত্যর্থ ‘গরু’ শ্রেণির কতিপয় সদস্যের উপর আরোপ করা হয়েছে। কেননা লাল বস্তুর সবই গরু নয়। গরু ছাড়াও জগতে আরো অনেক লাল বস্তু রয়েছে। ‘লাল’ পদের ব্যক্ত্যর্থ খুবই ব্যাপক। এর একটি অংশকেই শুধু গরুর ক্ষেত্রে স্বীকার করা হয়েছে। কাজেই বিধেয় লাল পদটিও অব্যাপ্য।

O বা বিশেষ নঞর্থক যুক্তিবাক্য:

O যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য কিন্তু বিধেয় পদটি ব্যাপ্য। কারণ, O যুক্তিবাক্যটি একটি বিশেষ বাক্য বলে এর উদ্দেশ্য পদটি পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই এর উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য। কিন্তু O যুক্তিবাক্যটি একটি নঞর্থক যুক্তিবাক্য বলে এর বিধেয় পদটি পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হতে পারে। তাই এরবিধেয় পদটি পূর্ণ ব্যাপ্য। যেমন: ‘কিছু গরু নয় লাল’। এই যুক্তিবাক্যে উদ্দেশ্য ‘গরু’ পদটি আংশিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে ‘গরু’ শ্রেণির একটি অংশ সম্পর্কে একটি বক্তব্য অস্বীকার করা হয়েছে। কাজেই উদ্দেশ্য ‘গরু’ পদটি অব্যাপ্য কিন্তু বিধেয় ‘লাল’ পদটি এ যুক্তিবাক্যে সামগ্রিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ ‘লাল’ পদের সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থকেই ‘গরু’ শ্রেণির কতিপয় সদস্য সম্পর্কে অস্বীকার করা হয়েছে। কাজেই উল্লিখিত যুক্তিবাক্যে বিধেয় লাল পদটি ব্যাপ্য।

গ) ব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থ

কোন পদকে ব্যবহার করার সময় আমরা প্রথমে চিন্তা করি কোন কোন বস্তুর উপর পদটি প্রযোজ্য এবং পরে চিন্তা করি পদটি যে সমস্ত বস্তুর উপর আরোপিত তাদের সকলের মধ্যে কী কী গুণ বর্তমান। এদিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় পদের দুটি দিক আছে। একটি হলো সংখ্যার দিক, আরেকটি হলো গুণের দিক। সংখ্যার দিকটাকে বলা হয় পদের ব্যক্ত্যর্থ (Denotation)। আর গুণের দিকটাকে একটা বিশেষ অর্থে বলা হয় জাত্যর্থ (Connotation)। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, ব্যক্ত্যর্থের দিক থেকে পদটি তার পরিমাণ বা সংখ্যার নির্দেশ দেয় এবং জাত্যর্থের দিক থেকে তার আবশ্যিক গুণের নির্দেশ দেয়। আর পদ মানেই তার মধ্যে ব্যক্ত্যর্থ অথবা জাত্যর্থ কিংবা উভয়ের উপস্থিতি অনিবার্য।

ব্যক্তার্থ:

একটি পদের ব্যক্তার্থ বলতে ঐ পদ একই অর্থে যে বস্তু বা বস্তুগুলোর উপর আরোপ করা যায় সেই বস্তু বা বস্তুগুলোকে বুঝায়। যুক্তিবিদগণ ব্যক্ত্যর্থের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন- কোন পদ একই অর্থে যে বিশেষ বস্তু বা বস্তুসমষ্টির উপর প্রযোজ্য হয় সেই বিশেষ বস্তু বা বস্তু সমষ্টিইাহল ঐ পদের ব্যক্ত্যর্থ। উদাহরণস্বরূপ ‘মানুষ’ পদটি মানুষের (অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমস্ত মানুষের) প্রতি আরোপ করা যায়। তাই ‘মানুষ’ পদের ব্যক্ত্যর্থ হল সব মানুষ।

জাত্যর্থ:

একটি পদের জাত্যর্থ বলতে ঐ পদ যে গুণ বা গুণাবলীর বিশেষভাবে উল্লেখ করে সেই গুণ বা গুণাবলীকে বুঝায়। অর্থাৎ যে গুণ বা গুণাবলী কোন শ্রেণীর সকল বস্তুতেই বর্তমান বা যে গুণ আছে বলে ঐ বস্তুগুলো এরূপ হয়েছে সেই গুণ হল ঐ শ্রেণীবাচক পদের জাত্যর্থ। যুক্তিবিদগণের মতে- যখন কোন পদ বিশেষ বস্তু বা বস্তু সমষ্টির অন্তর্গত সাধারণ ও অনিবার্য গুণ বা গুণসমষ্টিকে নির্দেশ করে তখন সেই সাধারণ ও আবশ্যিক গুণকেই পদটির জাত্যর্থ বলে। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ পদটির জাত্যর্থ হলো প্রাণিত্ব (Animality) বা জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি (Rationality)।

কারণ এ দুটি গুণ মানুষের মানুষ হিসাবে তার আবশ্যিক গুণ এবং এ গুণ দু’টি আছে বলেই মানুষ- মানুষ। অতএব, আমরা বলতে পারি, ব্যক্ত্যর্থ ব্যক্তি বা বস্তুকে এবং জাত্যর্থ ব্যক্তি বা বস্তুর অন্তর্গত আবশ্যিক গুণকে নির্দেশ করে। এক কথায় আমরা বলতে পারি, ব্যক্ত্যর্থ পদের সংখ্যা বা পরিমাণের দিক নির্দেশ করে এবং জাত্যর্থ পদের মধ্যকার আবশ্যিক গুণের নির্দেশ করে। উল্লেখ্য পদের এরূপ তাৎপর্য অনুসারে কোন কোন যুক্তিবিদ্ ব্যক্তর্থকে পদের বিস্তৃতি এবং জাত্যর্থকে পদের গভীরতা বলে অভিহিত করেছেন।

ঘ) যর্থাথতা যাচাই

ক. পদের ব্যক্ত্যার্থ বাড়লে জাত্যর্থ কমে:

মানুষ পদের ব্যক্ত্যর্থ হচ্ছে ‘সকল মানুষ’। এখন অন্যান্য প্রাণীকে এর সাথে যুক্ত করে এর ব্যক্ত্যর্থ বাড়ালে ব্যক্ত্যর্থ দাঁড়াবে ‘সকল প্রাণী’ (সকল মানুষ + অন্যান্য প্রাণী)। কিন্তু এতে করে মানুষ পদের জাত্যর্থ জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি থেকে বুদ্ধিবৃত্তি বাদ পড়ে সকল প্রাণীর জাত্যর্থ দাঁড়াবে শুধু ‘জীববৃত্তিতে’। কারণ অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে ‘বুদ্ধিবৃত্তি ‘ নেই। সুতরাং এর দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ব্যক্ত্যর্থ বাড়লে জাত্যর্থ কমে।

খ. পদের ব্যক্ত্যার্থ কমলে জাত্যর্থ বাড়ে:

মানুষ শ্রেণী থেকে অসৎ মানুষদের বাদ দিয়ে এর সংখ্যা বা ব্যক্ত্যর্থ কমালে ব্যক্ত্যর্থ দাঁড়াবে ‘সকল সৎমানুষ’। সকল মানুষ>সকল অসৎ মানুষ। মানুষের জাত্যর্থ জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তির সাথে আরেকটি জাত্যর্থ এসে যোগ হয়ে সকল সৎ মানুষের জাত্যর্থ হবে জীববৃত্তি + বুদ্ধিবৃত্তি + সততা। অর্থাৎ জাত্যর্থ বেড়ে যাবে। এতে প্রমাণ করা গেল যে, ব্যক্ত্যর্থ কমলে জাত্যর্থ বাড়ে।

গ. পদের জাত্যর্থ বাড়লে ব্যক্ত্যার্থ কমে:

মানুষ পদের জাত্যর্থ হচ্ছে ‘জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি। এখন এর সাথে সভ্যতা যোগ করলে জাত্যর্থ দাঁড়াবে জীববৃত্তি + বুদ্ধিবৃত্তি + সভ্যতা। ফলে এ তিনটি জাত্যর্থধারী পদের ব্যক্ত্যর্থ হবে ‘সকল সভ্য মানুষ’। আর এতে করে মানুষ পদের ব্যক্ত্যর্থ কমে যাবে। কারণ সকল মানুষের ব্যক্ত্যর্থের চেয়ে সকল সভ্য মানুষের ব্যক্ত্যর্থ কম। কারণ এখানে অসভ্য মানুষেরা বাদ পড়েছে। ফলে প্রমাণিত হল যে, জাত্যর্থ বাড়লে ব্যক্ত্যর্থ কমে।

ঘ. পদের জাত্যর্থ কমলে ব্যক্ত্যার্থ বাড়ে:

মানুষ পদের জাত্যর্থ জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি থেকে বুদ্ধিবৃত্তিকে বাদ দিলে এর জাত্যর্থ দাঁড়াবে কেবল জীববৃত্তি-তে। এতে করে মানুষ পদের ব্যক্ত্যার্থ বেড়ে গিয়ে সকল মানুষ থেকে সকল প্রাণীতে দাঁড়াবে। কারণ জীববৃত্তি গুণটি সকল প্রাণীতেই বর্তমান। আর সকল প্রাণীর সংখ্যা সকল মানুষের চেয়ে বেশী। সুতরাং এতে প্রমাণিত হল যে, জাত্যর্থ কমলে ব্যক্ত্যার্থ বাড়ে। ব্যক্ত্যার্থ এবং জাত্যর্থের বাড়া-কমার নিয়মটি ছকের সাহায্যে আরও ভালভাবে বুঝানো যেতে পারে।

ব্যক্ত্যার্থ ও জাত্যর্থর হ্রাস-বৃদ্ধি

উপরের ছকে জীবের ব্যক্ত্যার্থ সবচেয়ে বেশী, কিন্তু জ্যত্যর্থ সবচয়ে কম। মানুষের ব্যক্ত্যার্থ জীবের চেয়ে কম, কিন্তু জাত্যর্থ বেশী। শিক্ষিত মানুষের ব্যক্ত্যার্থ মানুষের চেয়ে কম, কিন্তু জাত্যর্থ বেশী। এ ছকে শিক্ষিত মানুষ থেকে মানুষের এবং মানুষ থেকে জীবের দিকে গমন করলে দেখা যায় যে, ব্যক্ত্যর্থ ক্রমেই বাড়ে এবং জাত্যর্থ থেকে শিক্ষিত মানুষের দিকে গমন করলে জাত্যর্থ ক্রমেই বাড়ে এবং ব্যক্ত্যার্থ ক্রমেই কমে। অর্থাৎ এর দ্বারা প্রমাণিত যে, ব্যক্ত্যার্থ বাড়লে জাত্যর্থে কমে এবং জাত্যর্থ বাড়লে ব্যক্ত্যর্থ কমে।

এই ছিল তোমাদের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- ব্যাপ্তির নিয়ম উল্লেখপূর্বক বাস্তব উদাহরণের সাহায্যে পদেরব্যক্তার্থ ও জাত্যর্থের হাস-বৃদ্ধির নিয়মের যথার্থতা যাচাই।

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লে-স্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ