সর্বশেষ আপটেড

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনস্বার্থে আইনের প্রয়োগ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গণবিজ্ঞপ্তি – বাংলা নোটিশ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক করোনা ভাইরাসের (COVID-19) সংক্রমণকে বৈশ্বিক মহামারি (Pandemic) ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক মানুষের আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়া , এবং সংক্রমণ রোধে শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উপরে ভরসা করা, মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদানে বিরত থাকা আর গুজব প্রতিহত করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনাভাইরাস কে মহামারী ঘোষণার প্রেক্ষিতে ১২ মার্চ ২০২০ একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এই বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতি করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সর্তকতা অবলম্বন করার অনুরোধ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গণবিজ্ঞপ্তি হুবহু তুলে ধরা হলো-

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণকে একটি বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাব হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের চলমান প্রস্তুতি এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবু পরিবর্তনশীল বিশ্বে ও জাতীয় পরিস্থিতির আলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর কতিপয় ধারার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হতে পারে।

এই আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধিকারের মধ্যে রয়েছে-

ধারা ১ (চ):
বাসগৃহ, অন্যান্য গৃহ, ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্র বা কোন স্থাপনায় সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করলে বা অনুরূপ রোগের সংক্রমণ এর আধার হিসেবে বিবেচিত হলে, উক্ত স্থান বা স্থাপনা পরিদর্শন ও তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

ধারা ১ (জ):
সংক্রামক রোগে তথ্য রয়েছে এরূপ কোন ব্যক্তিকে উক্ত রোগের বিষয়ে অধিদপ্তরের তথ্য প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান।

ধারা ১ (ট):
সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এই রূপ কোন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অন্তরীণ (কোয়ারান্টাইন) রাখা বা পৃথককরণ (আইসোলেশন)।

ধারা ১ (ত):
সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে উড়োজাহাজ, জাহাজ, জলযান, বাস-ট্রেন, অন্যান্য যানবাহন দেশে আগমন, নির্গমন বা দেশের অভ্যন্তরে স্থান হতে অন্য স্থানে চলাচল নিষিদ্ধ করণ।

অন্য সংশ্লিষ্ট ধারা গুলোতে যা রয়েছে তা হলো:

ধারা ১০: সংক্রামক রোগের তথ্য প্রদান-

১. যদি কোনো চিকিৎসক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন এবং উক্ত রোগে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি বাসগৃহ, প্রাঙ্গণ, এলাকায় সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হন, তাহলে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করবেন;
২. যদি কোন বোর্ডিং, আবাসিক হোটেল বা অস্থায়ী বাসস্থানের মালিক বা দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তির যুক্তিসঙ্গত কারণে ধারণা হয় যে, উক্ত স্থানে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাহলে তিনি অনতিবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসককে অবহিত করবেন;

ধারা ১১: সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি-

২. মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সংক্রামক রোগ নির্মূল করা সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে, সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ নিয়ন্ত্রিত করিতে পারিবেন;

ধারা ১৪: রোগ আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামরিক বিচ্ছিন্নকরণ-

যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর এরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোন সংক্রামিত ব্যক্তি কে বিচ্ছিন্ন করা না হইলে, তাহার মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তির সংক্রমিত হতে পারেন; তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে অন্য কোন স্থানে স্থানান্তর বা জনবিচ্ছিন্ন করা যাইবে;

ধারা ১৮: যানবাহন জীবানুমুক্ত করণের আদেশ প্রদানের ক্ষমতা-

ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি এরূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোনো যানবাহন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, বা উহাতে সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি রয়েছে; তা হইলে তিনি উক্ত যানবাহন জীবানুমুক্ত করণের জন্য উক্ত গাড়ির মালিক বা স্বত্বাধিকারী, তত্ত্বাবধায়কে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন;

ধারা ২০: মৃতদেহের সৎকার

১. যদি কোন ব্যক্তির সংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন বা করিয়াছেন বলিয়া সন্দেহ হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নির্দেশনা মোতাবেক দাফন বা সৎকার করিতে হইবে;

ধারা ২৫: দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন এর অপরাধ ও দণ্ড-

১. যদি কোন ব্যক্তি-
ক. মহাপরিচালক সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং
খ. সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোন নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন; তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য একটি দন্ডনীয় অপরাধ।
২. যদি কোন ব্যক্তি এই ধারার উপধারা (১) এর অধীন কোন অপরাধ সংগঠন করেন তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ মাসের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ধারা ২৬: মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদানের অপরাধ ও দণ্ড-

১. যদি কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভূল তথ্য প্রদান করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ;
২. যদি কোন ব্যক্তি এই ধারার উপধারা (১) এর অধীন কোন অপরাধ সংগঠন করেন তাহলে তিনি অনধীক ২ মাস কারাদণ্ড অথবা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

ধারা ২৭: ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ- এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধ অভিযোগ দায়ের তদন্ত বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

বিদেশ থেকে প্রত্যাগত কিছু প্রবাসী বা তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিবর্গ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আরোপিত কোয়ারেন্টাইন অর্থ সঠিকভাবে প্রতিপালন করছেন না। অনেকেই মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকলকে বর্ণিত আইন অনুযায়ী এবং নির্দেশিত পন্থায় যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছে। ব্যর্থ এর ক্ষেত্রে আইনের সংশ্লিষ্ট শাস্তিমুলক ধারা প্রয়োগ করা হবে।

অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ
মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গণ বিজ্ঞপ্তি

আরও পড়ুন:

করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ আপডেট দেখুন

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ