সপ্তম শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা। আজ আমরা জানবো অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামি উৎসবের পরিকল্পনা তৈরি বিষয়ে। তোমাদের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ এর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের মূল্যায়নের দিন এই কাজ করতে দেয়া হয়েছে। নিজেদের উদযাপিত উৎসব সমূহ পর্যবেক্ষণ করে করে এবং পাঠ্যবই থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে এই অ্যাসাইনমেন্টটি সমাধান করতে হবে।
মুসলিম সমাজে অর্থ্যাৎ ইসলামে অনেক উৎসব আছে যা ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক আমরা সবাই যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকি। এসব উৎসবে অংশগ্রহন করে আমাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়।
অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামি উৎসবের পরিকল্পনা তৈরি
সাধারণত বড়রাই এই ধরনের ইসলামি অনুষ্ঠান যেমন ঈদ উল ফিতর, ঈদ উল আযহা, মিলাদুন নবী, আশুরা, ইসলামি শরীয়াহ ভিত্তিক বিবাহ উৎসবগুলো আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এবার ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই তাদের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ এর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের দিন তারে পূর্বের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামি উৎসবের পরিকল্পনা তৈরি করবে।
তাহলে চলো জেনে নিই ঠিক কি কি কাজ তোমাদের করতে হবে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের মূল্যায়নের দিন বা পরীক্ষার দিন। এই আর্টিকেল ফলো করলে তুমি খুব সহজেই ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অষ্টম শ্রেণি ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের নির্ধারিত কাজগুলো অনায়েসে করে ফেলতে পারবে।
এছাড়াও নবম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট পরিবার ও সমাজে আমার ভূমিকা সম্পর্কে লেখাটি প্রবেশ করুন। আর অষ্টম শ্রেণির জীবন ও জীবিকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একটি সবুজ প্রকল্পের প্রস্তাবনা প্রণয়ন করাও শিখতে পারবেন।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪
শ্রেণি: অষ্টম, বিষয়: ইসলাম শিক্ষা
শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা
প্রজেক্ট: অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামি উৎসবের পরিকল্পনা তৈরি
তোমরা নিশ্চয়ই ইদ, ইদে মিলাদুন্নবী, বিয়ে ইত্যাদি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছ, আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছ। এরকম একটি ইসলামি/সামাজিক অনুষ্ঠানে তুমি ইসলামি যেসব রীতিনীতি পালন করেছ, করতে দেখেছ বা শুনেছ সেই অভিজ্ঞতার আলোকে নিচের কাজগুলো করো।
কাজ-১: ইসলামি উৎসবের কথা বলি
ইসলামের বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য এবং তোমার অভিজ্ঞতার আলোকে ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব-
অনুষ্ঠানগুলোর নাম লেখো।
কাজ-২: অভিজ্ঞতা বিনিময় করি
তোমার একজন বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে নিচের ছকের মতন একটি ছক বানিয়ে পূরণ করো।
নমুনা ছক
| আমি ইসলামি যে উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো দেখেছি। | |
| আমার বন্ধু ইসলামি যে উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো দেখেছে। | |
| বন্ধুর দেখা উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো সঙ্গে আমার দেখা অনুষ্ঠানের যেসব ভিন্নতা খুঁজে পেয়েছি। |
কাজ-৩: বিধি-বিধানের কথা জানাই
তুমি ইসলামের বেশ কিছু বিধি-বিধান সম্পর্কে জেনেছ। তোমার দেখা উৎসব/অনুষ্ঠানগুলোতে ইসলামের যেসব বিধি-বিধানের প্রয়োগ হয়েছে সেগুলো লেখো ।
কাজ-৪: ইসলামি উৎসব/অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা তৈরি করি
মনে করো, তোমরা বিদ্যালয়ে একটি ইসলামি অনুষ্ঠানের আয়োজন করছো। সেই অনুষ্ঠানের জন্য চারজন বন্ধু আলোচনা করে একটা পরিকল্পনা তৈরি করে উপস্থাপন করো।
পরিকল্পনায় থাকবে :
১. সময় ও স্থান নির্বাচন;
২. আমন্ত্রিত অতিথি নির্বাচন;
৩. দায়িত্ব বন্টন;
৪. নিমন্ত্রণের চিঠি;
৫. অনুষ্ঠানসূচি/আলোচ্যসূচি;
৬. অনুষ্ঠানসংশ্লিষ্ট কুরআন/হাদিসে বানী/প্রার্থনামূলক হামদ বা নাথ।
সপ্তম শ্রেণি ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ইসলাম শিক্ষা নমুনা সমাধান
এই পর্যায়ে আমরা সপ্তম শ্রেণি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামি উৎসবের পরিকল্পনা তৈরি করবো।
যাতে তোমরা পরীক্ষার সময় নিজেরে অর্জিত জ্ঞান এবং আমাদের দেখানো পদ্ধতি ব্যবহার ভালো এর পারফরমেন্স উপহার দিতে পার এবং মূল্যায়ন রেকর্ডে অন্যন্য হিসেবে অন্তভূক্ত হয়।
কাজ-১: ইসলামি উৎসবের কথা বলি
মুসলিম হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইসলামী আচার অনুষ্ঠান পালন করি। এসব অনুষ্ঠান ইসলামি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। নিচে তোমাদের জন্য বেশ কয়েকটি ইসলামি ও সামাজিক উৎসব ও অনুষ্ঠানের উদাহরণ দেওয়া হলো।
তোমাদের সপ্তম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন এর দিন কাজ-১: ইসলামি উৎসবের কথা বলি অংশে এখান থেকে কয়েকটি লিখলেই হবে।
ইসলামি ধর্মীয় উৎসব
১. ঈদুল ফিতর: রমজান মাসের শেষে পালিত হয়। এটি মুসলমানদের জন্য একটি বড় ধর্মীয় উৎসব।
২. ঈদুল আযহা: কুরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত। এটি হজের সময় পালিত হয়।
৩. মহররম: ইসলামের প্রথম মাস। এই মাসে আশুরা পালিত হয়, যা শিয়া মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
৪. শবে বরাত: এটি একটি পবিত্র রাত, যেখানে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
৫. লাইলাতুল কদর: রমজান মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
৬. ইসলামিক নববর্ষ: হিজরি নববর্ষ, যা ইসলামের নতুন বছরের সূচনা।
৭. ইসলামিক নবমী: হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নবুওয়াত প্রাপ্তির দিন।
৮. ইসলামিক শবেবরাত: শবেবরাতের রাতে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
৯. ইসলামিক রজব মাস: রজব মাসের ২৭তম রাতে মিরাজের ঘটনা স্মরণ করা হয়।
সামাজিক অনুষ্ঠান বা উৎসব
বাংলাদেশের মানুষের উদযাপিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠান হলো:
১. পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। এটি বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উৎসব, যেখানে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়।
২. বসন্ত উৎসব: বসন্তের আগমনে উদযাপিত হয়। এটি রঙের উৎসব হিসেবে পরিচিত।
৩. নববর্ষ: ইংরেজি নববর্ষ, যা সারা বিশ্বে পালিত হয়।
৪. স্বাধীনতা দিবস: ২৬শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দিন।
৫. বিজয় দিবস: ১৬ই ডিসেম্বর, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দিন।
৬. পহেলা ফাল্গুন: বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন, যা বসন্তের আগমনের প্রতীক।
৭. নবীনবরণ: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে আয়োজিত অনুষ্ঠান।
কাজ-২: অভিজ্ঞতা বিনিময় করি
চলো এবার ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ এর ৭ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের দ্বিতীয় কাজ ইসলামি উৎসব বা সামাজিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে একটি ছক পূরণ করবো।
নিজেদের শেয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে নির্ধারিত ছক পূরণ করে খাতায় লিখবো। যা দেখে শিক্ষক আমাদের মূল্যায়ণ করবেন।
নিচের ছকের মাধ্যমে ইসলামি অনুষ্ঠান বা উৎসব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো
| আমি ইসলামি যে উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো দেখেছি | ১. ঈদ-উল-ফিতর ২. ঈদ-উল-আযহা ৩. রমজান ৪. মিলাদুন্নবী |
| আমার বন্ধু ইসলামি যে উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো দেখেছে | ১. লাইলাতুল কদর ২. আশুরা ৭. শবে বরাত |
বন্ধুর দেখা উৎসব/অনুষ্ঠানগুলো সঙ্গে আমার দেখা অনুষ্ঠানের যেসব ভিন্নতা খুঁজে পেয়েছি
আমি এবং আমার সহপাঠির সাথে ইসলামি উৎসব যেগুলো আমি দেখেছি এবং সে দেখেছে তার একটি তালিকা উপরে আছে এখন। আমার এবং তার দেখা অনুষ্ঠান সমূহের মধ্যে ভিন্নতা নিচের ছকে দেওয়া হলো।
| ভিন্নতা পয়েন্ট | আমার দেখা ইসলামি উৎসব / অনুষ্ঠান (ঈদ উল ফিতর) | বন্ধুর দেখা ইসলামি উৎসব / অনুষ্ঠান (মিলাদুন্নবী) |
|---|---|---|
| উদযাপনের সময় | রমজান মাসের শেষে উদযাপিত হয়। | হিজরি ক্যালেন্ডারের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে উদযাপিত হয়। |
| উদ্দেশ্য | রমজান মাসের রোজা শেষ করার আনন্দে উদযাপিত হয়। | প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিন উপলক্ষে উদযাপিত হয়। |
| প্রধান কার্যক্রম | বিশেষ নামাজ আদায়, নতুন পোশাক পরা, যাকাত-উল-ফিতর দান করা, এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা। | নবীর জীবনী ও তাঁর শিক্ষা নিয়ে আলোচনা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন, এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করা। |
| ধর্মীয় গুরুত্ব | রোজার মাসের শেষে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করা। | নবীর জীবন ও শিক্ষা থেকে শিক্ষা গ্রহণ এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ। |
১. ঈদ-উল-ফিতর
ঈদ-উল-ফিতর রমজান মাসের শেষে উদযাপিত হয়। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
সাদাকাতুল ফিতর: ঈদের নামাজের আগে গরীবদের মধ্যে ফিতরা বিতরণ করা।
ঈদের নামাজ: ঈদের দিন সকালে বিশেষ নামাজ আদায় করা।
তাকবির: ঈদের নামাজের আগে তাকবির বলা।
সামাজিক মিলন: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে মিলিত হওয়া এবং আনন্দ ভাগাভাগি করা।
২. ঈদ-উল-আযহা
ঈদ-উল-আযহা হজের সময় উদযাপিত হয় এবং কুরবানির সাথে সম্পর্কিত। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
কুরবানি: নির্দিষ্ট পশু কুরবানি করা এবং এর মাংস গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা।
ঈদের নামাজ: ঈদের দিন সকালে বিশেষ নামাজ আদায় করা।
তাকবির: ঈদের নামাজের আগে তাকবির বলা।
সামাজিক মিলন: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে মিলিত হওয়া এবং আনন্দ ভাগাভাগি করা।
৩. রমজান
রমজান মাসে মুসলমানরা রোজা রাখে। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
রোজা: ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও অন্যান্য ইন্দ্রিয়সুখ থেকে বিরত থাকা।
তারাবি নামাজ: রাতে বিশেষ তারাবি নামাজ আদায় করা।
ইফতার: সূর্যাস্তের পর ইফতার করা।
সাহরি: ভোরের আগে সাহরি খাওয়া।
৪. মিলাদুন্নবী
মিলাদুন্নবী নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মদিন উদযাপন করা হয়। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
মিলাদ মাহফিল: নবীর জীবনী ও শিক্ষার উপর আলোচনা সভা।
দরুদ পাঠ: নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করা।
সামাজিক সেবা: গরীবদের মধ্যে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করা।
৫. লাইলাতুল কদর
লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকের একটি বিশেষ রাত। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
ইবাদত: সারারাত ইবাদত করা।
কুরআন তিলাওয়াত: কুরআন তিলাওয়াত করা।
দোয়া: আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
৬. আশুরা
আশুরা মহররম মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
রোজা: আশুরার দিন রোজা রাখা।
মহররমের স্মরণ: কারবালার ঘটনার স্মরণ করা।
৭. শবে বরাত
শবে বরাত শাবান মাসের ১৫ তারিখে উদযাপিত হয়। এর প্রধান বিধিবিধানগুলো হলো:
ইবাদত: সারারাত ইবাদত করা।
কবর জিয়ারত: মৃত আত্মীয়দের কবর জিয়ারত করা।
দোয়া: আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
