আনন্দধারা: সবাই মিলে বনভোজন আয়োজন
বনভোজন মানে মানে হলো বনে গিয়ে ভোজন। বড় ছোট সবাই জীবনে আনন্দধারা বয়ে আনতে প্রায়ই এমন আয়োজন করে। বনভোজনে গিয়ে খেলা ধুলা, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান আয়োজন ছাড়াও বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে হাসি আনন্দে মেতে উঠে সবাই।
বড়রা চাইলেই যেকোন মুহুর্তে বনভোজন করতে পারে অর্থ্যাৎ বিভিন্ন আনন্দধারা মূলক কাজ করতে পারে। কিন্তু ছোটদের জন্য এগুলো কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ছোট বা মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কিভাবে সবাই মিলে আনন্দধারা বা বনভোজন আয়োজন করতে পারে।
আনন্দধারা আয়োজন করতে তাদের কিভাবে প্লান করতে হবে, কাকে কি দায়িত্বপালন করতে হবে তার বিস্তারিত বিবরণ ধাপে ধাপে জানিয়ে দিব। এমন আরও তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতো পারো।
আনন্দধারা আয়োজন কাজের ধাপ
তোমরা অষ্টম শ্রেণির সবাই মিলে বনভোজনে যাবে। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তোমাদের সাথে থাকবেন। কিন্তু আয়োজনের সব দায়িত্ব তোমরা নেবে বলে ঠিক করেছ।
তোমরা শিক্ষকবৃন্দের সাথে একটা মিটিং করে আয়োজনে কী কী বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে তার একটা তালিকা করে নিয়েছ এবং কয়েকটি কমিটি করে তোমাদের মধ্যে দায়িত্বগুলো ভাগ করে নিয়েছ।
তোমার উপর দায়িত্ব পরেছে বনভোজনের দিনে খেলাধূলা ও বিনোদনের আয়োজন করা। এছাড়াও সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব পড়েছে তোমাদের কয়েক জনের উপর। তোমরা পুরো আয়োজনের নাম দিয়েছ ‘আনন্দধারা”।
আনন্দধারা আয়োজনকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তোমাকে কিছু পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তুমি সেই পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু কার্যক্রম সম্পাদন করবে। আর এভাবেই তোমাদের আয়োজন সবার জন্য বয়ে আনবে সত্যিকারের আনন্দ। তাহলে শুরু করা যাক………
বনভোজন আয়োজন কাজে যা করতে হবে
কাজ ১ (একক কাজ): বনভোজনের দিনে কী কী খেলা যায় এ নিয়ে তোমরা সবার ভোট নিয়ে ঠিক হল দাড়িয়া বান্ধা, চোখ বেঁধে ছবিতে কপালে টিপ পড়িয়ে দেওয়া ও সাঁতারের আয়োজন করা হবে।
সাঁতার নিয়ে প্রথমে শিক্ষকদের আপত্তি ছিল, তোমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে যাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় অনুমতি পাওয়া গেল।
তুমি ঠিক করলে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে যেন সমস্যায় পড়তে না হয়। নীচের প্রশ্নের আলোকে তোমার প্রস্তুতির কাজের তালিকা খাতায় লিখ-
যারা সাঁতারে অংশগ্রহণ করবে তাদের প্রস্তুতি ও সুরক্ষার জন্য তুমি কী কী কাজ করবে? | তুমি যে কাজগুলো করার সিদ্ধান্ত নিলে তার কারণ কী? |
কাজ ২ (দলগত কাজ): শিক্ষকের নির্দেশনা তোমরা দল গঠন করেছ। এবার দলে নিজের খাতায় লেখা কাজের তালিকা নিয়ে নীচের বিষয়গুলোর আলোকে আলোচনা কর ।
১. কী চিন্তা থেকে তারা নিজেদের কাজগুলো ঠিক করেছে?
২. অন্যরা যে কাজগুলোর তালিকা করেছে তার মধ্যে কোন কোন কাজের সাথে তুমি একমত? কারণ কী?
৩. কোনগুলোর সাথে একমত নও? কারণ কী?
৪. প্রস্তুতির কাজগুলো করতে কারো সহযোগিতার প্রয়োজন আছে কী? কার?
৫. জরুরী প্রয়োজনে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য কী করা যেতে পারে?
কাজ ৩ (একক কাজ): এবার নিজের জায়গায় ফিরে যাও। এবার দলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পালা। তাহলে খাতায় লিখে নাও।
১. দলের আলোচনা থেকে কোন নতুন বিষয়গুলো সম্পর্কে নতুন করে জানলে?
২. এই কাজগুলো তোমার প্রস্তুতিতে কী ভূমিকা রাখবে?
৩. তোমার খাতায় চূড়ান্ত তালিকাটি তৈরি কর।
কাজ ৪ (একক কাজ): বনভোজনের দিন চলে এসেছে। তোমরা সবাই সকাল সকাল পৌঁছে গেছ। সবাই বনভোজনের জায়গার আশে পাশে ঘুরে দেখছে। বেশি দূরে যাওয়া যাবে না শিক্ষক তা বলে দিয়েছেন।
ওদিকে রান্নার জন্য দক্ষ রাধুনি কাজ করছেন। তার সাহায্যকারী কয়েকজন শাক সবজি ও মুরগি কাটছেন। তোমার সামনেই দুজন একটা বড় কড়াই নিয়ে এলেন এবং যারা শাক সবজি কাটছিলেন তারা কাটা শাক সবজি পরে ধুয়ে নেবেন বলে তাড়াহুরা করে তাতে রাখছেন।
অন্যদিকে একজন সকালে খেয়ে আসতে পারেননি বলে কেক খাচ্ছেন। কেকটাতে একটা গন্ধ পেয়েছেন, কিন্তু খেয়ে নিচ্ছেন। এই দলের সাথে তোমাদের একদল সহপাঠীও সহযোগিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে তোমার করনীয় খাতায় লিখ।
১. বনভোজনে সবার জন্য নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে তুমি তাদেরকে কী কী বিষয়ে সচেতন করবে?
২. কেন তুমি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে চাও?
কাজ ৫ (একক কাজ): সারাদিন খুব আনন্দ করে ফেরার সময় তোমার পাশে যে বন্ধু বসেছিল তার সাথে গল্প করার সময় জানতে পারলে সে যখন কোনো কাজের দায়িত্ব নিতে যায় ভীষন মানসিক চাপ হয়। কাজ করতে ভয় লাগে।
মনে হয় সে পারবে না তখন অন্যরা তাকে নিয়ে হাসবে। সে তোমার কাছ থেকে পরামর্শ চায়। নীচের প্রশ্নের আলোকে তোমার পদক্ষেপ খাতায় লিখ।
১. মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার জন্য বন্ধুকে তুমি কী পরামর্শ দেবে?
২. এই পরামর্শ তাকে কীভাবে সাহায্য করবে বলে তুমি মনে কর?
৩. তোমার কী মানসিক চাপ হয়? কখন?
কাজ ৬ (জোড়ার কাজ): এবার শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী জোড়া তৈরি করবে। কাজ ৫ নং এ নিজেদের লেখা উত্তরগুলো নিয়ে নীচের প্রশ্নের আলোকে আলোচনা কর ও প্রয়োজনীয় নোট নাও।
১. কোন কোন কাজ বা কৌশলগুলো ইতিবাচক? কয়েকটি উদাহরণ লিখ।
২. তোমার উল্লেখ করা নেতিবাচক কাজ বা কৌশলগুলো শরীরে ও মনে কী ধরণের প্রভাব ফেলে?
৩. মানসিক চাপের পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে কার কাছে সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে?
কাজ ৭ (একক কাজ): দলগত আলোচনার অভিজ্ঞতা থেকে নীচের প্রশ্নগুলো উত্তর লিখ।
বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া নতুন কোন কোন ইতিবাচক কৌশল তুমি নিজের মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনায় পরবর্তীতে ব্যবহার করতে চাও তার একটি তালিকা খাতায় লিখ।
১. এই কৌশলগুলো ব্যবহারের ফলে তোমার জীবনে কী ফলাফল আসবে বলে তুমি মনে কর?
২. নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মানসিক চাপ নিয়ে সকলের জানা প্রয়োজন এমন ৩টি মেসেজ লিখ।
৩. বনভোজন শেষে আনন্দ নিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসা হল। আনন্দধারা আয়োজনের সবগুলো কার্যক্রম শেষ করার জন্য ধন্যবাদ।