বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার প্রতিবন্ধকতাসমূহ
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা ৮-১০ জন শিশুর মত স্বাভাবিক হয়না। তারা কিছুটা অপূর্ণতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে অথবা পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার স্বীকার হয়। এই সকল শিশুদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলা হয়।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা আমাদের সমাজের মানুষের কারণে নিজেকে বিকশিত করার
সুযোগ পায়না বা সমাজের নিষ্ঠুর নিয়মের কারণে তাদের বিকশিত হওয়া সম্ভব হয়না।
আজ আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে
প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিয়ে আলোচনা করবো এবং এই প্রতিবন্ধকতা সমূহ প্রতিকারের উপায় নিয়ে জানবো।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং এগুলো দূরীকরণের উপায়:
আমাদের আশেপাশে এরকম অনেক শিশু দেখা যায় যারা স্বাভাবিক শিশুদের মত হয়না।
তাদের আচার-আচরণ ও দৈহিক গঠন স্বাভাবিকের তুলনায় ধীর এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ সমস্যাগ্রস্থ।
এদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ভালোভাবে চোখে দেখতে পায় না, কারো কারো হাঁটাচলা
করতে অসুবিধা, কিছু শিশু আছে যারা ঠিকমত কথা বলতে পারেনা
আবার অনেকেই আছে যারা অন্যের কথা শুনতে পায়না।
আবার কেউ কেউ আছে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যারা অনেক বড় হয়েও ছোটদের মতো আচরণ করে। উপরে উল্লেখিত শিশুদেরকে আমরা প্রতিবন্ধী বা বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন শিশু বলে থাকি।
আমাদের আশপাশে থাকা এসকল বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন বা প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য আমাদের অবশ্যই কোন না কোন দায়িত্ব পালন করা উচিত।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হওয়ার প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- প্রথমত, এদের প্রতিবন্ধকতার প্রধান কারণ হলো পরিবার। যত শীঘ্র সম্ভব শিশুর জন্য পরিবারকে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ৷ এক্ষেত্রে পিতা-মাতার সাথে শিশুর পারস্পারিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে৷ ৷
- সমাজে বিকশিত হওয়ার দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা হলো সমাজ। কারণ সামাজিক ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করে এইসব শিশুদের ভবিষ্যৎ ৷ সমাজ যদি এদের অযোগ্য ও অবাঞ্ছিত মনে করে, এদের উঠে দাঁড়ানোর কোন স্থান থাকবে না ৷ তাই এইসব শিশুদের পক্ষে জনমত গড়ে তোলা আবশ্যক ৷
- সমবয়সীরা আরেকটা প্রতিবন্ধকতা ৷ দেখা যায়, সমবয়সীরা তাদের সাথে মিশতে চায় না ৷ যা সমাজে বিকশিত হতে বাধা সৃষ্টি করে ৷
- বৈষম্য ও কুসংস্কার হলো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। সমাজের সর্বস্তরে এরূপ একটি বিশ্বাস আছে যে, প্রতিবন্ধীত্ব একটি অভিশাপ এবং এটি পাপ কাজের শাস্তি। এরূপ বিশ্বাস বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হতে বাধা সৃষ্টি করে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূরীকরণের উপায়-
- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে পারি।
- বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
- সব সময় উৎসাহ এবং সঙ্গ দিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে পারি।
- বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদেরকে সঙ্গ দিতে পারি।
- প্রতিবন্ধকতার ধরন অনুযায়ী প্রতিবন্ধী শিশুদের বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারি। যেমন- গান বলা, গল্প শোনানো সহ অন্যান্য খেলা যেগুলোতে তারা অংশগ্রহণ করতে পারে।
- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নানাভাবে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারি।
- বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সাথে পরিবারের একটি সুন্দর সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারি।
এভাবে আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সঙ্গে এবং তাদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করে তাদেরকে সমাজের জনসম্পদে পরিণত করতে পারি।
আরো দেখুন-
- করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রতি মাউশির বিশেষ নির্দেশনা
- এমপিও কমিটির বিশেষ সভা আগামীকাল – মাউশি
সকল স্তরের শিক্ষা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি বিজ্ঞপ্তি, চাকুরির পরীক্ষা, এডমিট কার্ড, পরীক্ষার রুটিন, সরকারি বেসরকারি বৃত্তি, উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য সবার আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি Follow করে রাখুন।
ইউটিউবে সর্বশেষ আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ডট কম এর ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের যেকোন বিজ্ঞপ্তি, খবর, নোটিশ ও জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন