তথ্য ভান্ডারমাদ্রাসা অ্যাসাইনমেন্ট

কৃষি প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়ন সম্ভব

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আজ তোমাদের সাথে কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি নিয়ে আলোচনা করবো। আজকের আলোচনার মুখ্য বিষয় হলো- কৃষি প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়ন সম্ভব।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়তি মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে। বদরপুর গ্রামের কৃষক সমাবেশে কৃষিবিদ ড. হাসান ফসল উৎপাদন, গৃহপালিত প্রাণী পালন, মৎস্যচাষ ও বনায়নের উপর নানা ধরনের কৃষি প্রযুক্তির ধারণা ব্যক্ত করেন।

তুমি কি মনে করো কৃষি প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন সম্ভব? নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তরের মাধ্যমে তোমার মতামত উপস্থাপন করো।

  1. কৃষি কৃষি প্রযুক্তি কি?
  2. কৃষি প্রযুক্তির বিষয়গুলো কি কি?
  3. বিষয় ভিত্তিক কৃষি প্রযুক্তিগুলোর তালিকা তৈরি করো।
  4. জমি চাষ না করে কিভাবে তুমি দানা জাতীয় ফসল চাষ করবে?
  5. বিদ্যুৎবিহীন গ্রামীণ পরিবেশে একজন কৃষক কিভাবে ডিম সংরক্ষণ করবে?
  6. বন্যা মৌসুমে হাওর এলাকায় তুমি কোন প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করবে এবং কেন?
  7. তুমি গবাদিপশুর একটি ফার্ম করতে চাইলে শীত মৌসুমে পশুগুলোর জন্য কিভাবে কাঁচা ঘাসের অভাব পূরণ করবে?

১. কৃষি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও কলাকৌশলকে কৃষি প্রযুক্তি বলা হয়।

২. কৃষি প্রযুক্তির বিষয়গুলো হলো –

  • ফসল উৎপাদন,
  • গৃহপালিত প্রাণী পালন,
  • মৎস্য চাষ,
  • বনায়ন।

৩. বিষয়ভিত্তিক কৃষি প্রযুক্তিগুলোর তালিকা –

  • ফসল উৎপাদন- বিভিন্ন ফসলের উচ্চ ফলনশীল জাত, লবণ সহনশীল জাত, গোবর সার, জীবাণু সার, রাসায়নিক সার, সার ব্যবহারের মাত্রা, কীটনাশক, কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা, সাথী ফসল, সবুজ সার, পাওয়ার টিলার, লোলিফট পাম্প, গভীর নলকূপ, সেঁউতি, দোন ইত্যাদি।
  • গৃহপালিত প্রাণী পালন- উন্নত জাতের গবাদিপশু, উন্নত জাতের হাঁস-মুরগি, গরু মোটাতাজাকরণ, কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ, একত্রে হাঁস-মাছ-ধান চাষ, হাঁস-মুরগির সুষম খাদ্য, উন্নত পদ্ধতিতে বাচ্চা উৎপাদন, উন্নত পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ, পশু-পাখির রোগ দমন ইত্যাদি।
  • মৎস্য চাষ- খাঁচায় মাছ চাষ, মাছ ধরার বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন: পলো, জাল, বড়শি, পুকুরের পানি শোধন, তেলাপিয়া ও নাইলোটিকার চাষ, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি।
  • বনায়ন- সামাজিক বনায়ন, কৃষি বনায়ন, বৃক্ষ ও মাঠ ফসল চাষ পদ্ধতি, বনজ ও ফলদ উদ্ভিদ চাষ পদ্ধতি, বৃক্ষ ও গো-খাদ্য চাষ পদ্ধতি, চারা উৎপাদন পদ্ধতি ইত্যাদি।

৪. জমি চাষ না করে শূন্য চাষ পদ্ধতিতে দানা জাতীয় ফসল চাষ করা যায়।

যেমন জমি চাষ না করে ভুট্টা চাষ করা যায়। বর্ষার পানি নেমে গেলে জমি কাদাময় থাকে।

সেই জমিতে ভুট্টার বীজ রোপণ করলে ভালো ফলন হয়। এতে অর্থ আয় হয় এবং শ্রম কম লাগে।

৫. বিদ্যুৎবিহীন গ্রামীণ পরিবেশে একজন কৃষক মাটির হাঁড়িতে ডিম সংরক্ষণ করবে।

সাধারণত ডিম ৫-১০ দিনের বেশি ভালো থাকেনা।

ঘরের মেঝেতে গর্ত করে সেই গর্তে হাঁড়ি বসিয়ে ডিম রাখা হয়।

গর্তে হাঁড়ির চারদিকে কাঠ-কয়লা রেখে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলে ডিম ঠান্ডা থাকে এবং ২০-২৫ দিন ডিম ভালো থাকে।

৬. বন্যা মৌসুমে হাওর এলাকায় আমি খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করব।

খাঁচায় মাছের চাষ আমাদের দেশে নতুন হলেও উত্তর আমেরিকায় অনেক আগে থেকেই এর ব্যবহার চলে এসেছে। যেসব এলাকায় নদী-নালা, হাওর, খাল-বিল আছে সেসব এলাকার কৃষকেরা এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। নদীতে বা বিলে বা যেকোনো উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচা বানিয়ে পুকুরের আকার দেওয়া হয়। স্রোত হীন বা কম স্রোতের পানিতে খাঁচা বসাতে হবে। বেশি স্রোতে খাঁচার ব্যবস্থাপনা কঠিন ও ব্যয়সাধ্য। খাঁচা খুঁটি বা প্ল্যাটফর্ম দ্বারা বসাতে হবে। খুঁটির চেয়ে প্ল্যাটফর্ম বেশি ভালো। তেলের ড্রাম দ্বারা প্ল্যাটফর্ম করা যায়। প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করলে যেকোনো গভীরতা বসানো যায়। খাঁচায় মাছের চাষ হল নিবিড় চাষ।

৭. আমি গবাদিপশুর একটি ফার্ম করতে চাইলে শীত মৌসুমে পশুগুলোর জন্য সাইলেজ পদ্ধতিতে ঘাস সংরক্ষণ করে কাঁচা ঘাসের অভাব পূরণ করবো।

শীতকালে অনেক স্থানেই ঘাসের অভাব দেখা যায়। বর্ষাকালে যখন ঘাস প্রচুর জন্মে, তখনই শুকনা মৌসুমের জন্য গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হয়। এ জন্য কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতিকে সাইলেজ বলা হয়। এতে ঘাসের পুষ্টিমানের কোনো পরিবর্তন হয় না। যে নির্দিষ্ট স্থানে বা গর্তে ঘাস সংরক্ষণ করা হয়, তাকে বলা হয় সাইলোপিট।

সাইলোপিটে বায়ুরোধক অবস্থা তৈরি করতে হয়। বায়ুরোধক অবস্থায় ঘাসে ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়। এই ল্যাকটিক এসিড কাঁচা ঘাস সংরক্ষণে কাজ করে।

সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি আলোচনা করা হলো –

  • কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের জন্য প্রথমেই শুকনা ও উঁচু জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।
  • নির্ধারিত স্থানে এক মিটার গভীর, এক মিটার প্রস্থ এবং এক মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গর্ত তৈরি করতে হবে।
  • ১ ঘনমিটার একটি গর্তে প্রায় ৭০০ কেজি কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ করা যায়।
  • কাঁচা ঘাসের শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটাগুড় একটি চাড়িতে নিতে হবে।
  • এরপর চিটাগুড় এর সাথে সমপরিমাণ পানি মিশাতে হবে।
  • গর্তের তলায় পলিথিন বিছালে ভালো হয়। পলিথিন না বিছালে পুরু করে খড় বিছাতে হবে এবং চারপাশে ঘাস সাজানোর সাথে সাথে ঘরের আস্তরন দিতে হবে।
  • এরপর ধাপে ধাপে ৭০০ কেজি কাঁচা ঘাস দিয়ে ২০-৩০ কেজি শুকনা খড় দিতে হবে।
  • প্রতিটি ধাপে ১৫ থেকে ২০ কেজি চিটাগুড়-পানির মিশ্রণ সমভাবে ছিটাতে হবে।
  • এভাবে ধাপে ধাপে ঘাস ও খড় বিছিয়ে ভালোভাবে পা দিয়ে পাড়াতে হবে, যাতে বাতাস বেরিয়ে যায়।
  • ঘাস সাজানো শেষ হলে খড়ের আস্তরন দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  • সর্বশেষে পলিথিনের উপর ৭.৫- ১০ সেন্টিমিটার মাটি পুরু করে দিতে হবে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কৃষি প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়ন সম্ভব।

আরো দেখুন-

সকল স্তরের শিক্ষা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি বিজ্ঞপ্তি, চাকুরির পরীক্ষা, এডমিট কার্ড,

পরীক্ষার রুটিন, সরকারি বেসরকারি বৃত্তি, উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য সবার

আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি Follow করে রাখুন।

ইউটিউবে সর্বশেষ আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ডট কম এর ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন।

আপনার প্রতিষ্ঠানের যেকোন বিজ্ঞপ্তি, খবর, নোটিশ ও জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ