বসত বাড়িতে গবাদিপশু ও হাঁসমুরগীর খামার তৈরি করতে চাইলে নির্ধারিত সম্পূরক খাবার প্রয়ােগের উপর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ
তোমাদের জন্য প্রণীত সপ্তম সপ্তাহের কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর–(বসত বাড়িতে গবাদিপশু ও হাঁসমুরগীর খামার তৈরি করতে চাইলে নির্ধারিত সম্পূরক খাবার প্রয়ােগের উপর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ) এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা ২০২২ নমুনা উত্তর নিয়ে হাজির হলাম।
তোমরা যারা সরকারি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসমূহের দশম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছো তোমাদের সপ্তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর কৃষি শিক্ষা বিষয়ের একটি নির্ধারিত কাজ দেয়া হয়েছিল। যথাযথ মূল্যায়ন নির্দেশনা অনুসরণ করে তোমাদের জন্য এসএসসি ২০২২ সপ্তম সপ্তাহ কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান (বসত বাড়িতে গবাদিপশু ও হাঁসমুরগীর খামার তৈরি করতে চাইলে নির্ধারিত সম্পূরক খাবার প্রয়ােগের উপর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ) দেওয়া হল।
এসএসসি ২০২২ সপ্তম সপ্তাহ কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট
অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম:
বসত বাড়িতে গবাদিপশু ও হাঁসমুরগীর খামার তৈরি করতে চাইলে নির্ধারিত সম্পূরক খাবার প্রয়ােগের উপর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
প্রথম অধ্যায় পাঠ্যবই এর প্রথম অধ্যায়ের ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
- সম্পূরক খাদ্যের পরিচিতি
- খাদ্যের উৎস
- সম্পূরক খাদ্যের উপকারিতা
- পশু পাখির সম্পূরক খাদ্যের প্রকারভেদ
- পশু পাখির সম্পূরক খাদ্য তৈরি ও প্রয়ােগ।
এসএসসি ২০২২ সপ্তম সপ্তাহ কৃষি শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
ক) পরিচিতি ও উৎসঃ
মাছ ও পশুপাখি আঁশ জাতীয় খাবার ও দানাদার খাদ্য থেকে তাদের পুষ্টি উপাদানগুলো পেয়ে থাকে। কিন্তু এ খাবার খাওয়ার পরও মাছ, পশুপাখির কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তাই মাছ ও পশুপাখি থেকে দ্রুত ও অধিক উৎপাদন পেতে প্রচলিত খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিনই কিছু অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ খাদ্যকে সম্পূরক খাদ্য বলে। যেমন : মাছের সম্পূরক খাদ্য খৈল, ভুসি, লবণ, ফিশমিল ইত্যাদি। সম্পূরক খাদ্য তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান ব্যবহার করা হয়। উৎসের উপর ভিত্তি করে এসব উপাদানকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
- ক) উদ্ভিদজাত
- খ) প্রাণিজাত।
নিচে এদের কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো-
উদ্ভিদজাত
উদ্ভিদজাত খাদ্য উপাদানের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য উপাদান হচ্ছে- চালের কুঁড়া, গম ও ডালের মিহিভুসি, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, আটা, চিড়াগুড়, খুদিপানা, রান্না ঘরের উচ্ছিষ্ট, বিভিন্ন নরম পাতা যেমন- মিষ্টিকুমড়া, কলাপাতা, বাঁধা কপি ইত্যাদি।
প্রাণিজাত
প্রাণিজাত কয়েকটি খাদ্য উপাদান হচ্ছে শুটকি মাছের গুঁড়া বা ফিশমিল, রেশম কীট মিল, চিংড়ির গুঁড়া (স্রিম্প মিল), কাকড়ার গুঁড়া, হাঁড়ের চূর্ণ (বোন মিল), শামুকের মাংস, গবাদিপশুর রক্ত (ব্লাড মিল) ইত্যাদি।
খ) সম্পূরক খাদ্যের উপকারিতা
১.মাছকে নিয়মিত সম্পূরক খাবার সরবরাহ করলে অধিক ঘনত্বে পোনা ও বড় মাছ চাষ করা যায়।
২.অল্প সময়ে বড় আকারের সুস্থসবল পোনা উৎপাদন করা যায়।
৩.পোনার বাঁচার হার বেড়ে যায়।
৪.মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৫.অল্প দিনে এদের ওজন বৃদ্ধি পায়।
৬.মাছের দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে।
৭.গরু ও হাস-মুরগির বৃদ্ধি দ্রুত হয়।
৮.মাছ পুষ্টির অভাবজনিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে।
৯.সর্বোপরি কম সময়ে জলাশয় থেকে অধিক মাছ ও আর্থিক মুনাফা পাওয়া সম্ভব হয়।
গ)পশু-পাখির সম্পূরক খাদ্য প্রস্তুত প্রক্রিয়াঃ
পশুপাখির সম্পূরক খাদ্য
পশুপাখির উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এদেরকে প্রচলিত খাবারের সাথে বিশেষ খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এতে পশুপাখির দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে এবং পরিপুষ্টি লাভ করে । পশুপাখির মাংস, ডিম ও দুখ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় । তাই পশুপাখি পালনে সম্পূরক খাদ্যের অধিক গুরুত্ব রয়েছে। বিভিন্ন সম্পূরক খাদ্য তৈরি পদ্ধতিঃ
ক) ইউরিয়া মোলাসেস খড়ঃ ইউরিয়ার সাহায্যে খড় প্রক্রিয়াজাতকরণ
উপকরণঃ
খড় -১৯০ কেজি,
ইউরিয়া -১ কেজি,
পানি -২০ লিটার,
একটি মাঝারি আকারের পাত্র, বস্তা ও মোটা পলিথিন।
তৈরির পদ্ধতি
১। প্রথমে একটি বালতিতে ১ কেজি ইউরিয়া ২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে ।
২।ডোলের চারদিকে গোবর ও কাদা মিশিয়ে লেপে শুকিয়ে নিতে হবে ।
৩। এবার ডোলের মধ্যে অল্প অল্প খড় দিয়ে ইউরিয়া মেশানো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে ।
৪। সমস্ত খড় সম্পূর্ণ পানি বারা মিশিয়ে ডোলের মুখ বস্তা ও মোটা পলিথিন দিয়ে বেঁধে দিতে হবে ।
৫। দশ দিন পর খড় বের করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে ।
খ) ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক; দানাদার খাদ্যের সাহায্যে ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরিকরন-
উপকরন
গমের ভুসি : ৩ কেজি
ঝোলাগুড় -৬ কেজি
লবণ : ৩৫ গ্রাম
খাবার চুন -৫০০ গ্রাম
ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স : ৫০ গ্রাম এবং
কাঠের ছাচ (১ কেজি ব্লক তৈরির জন্য) তৈরির জন্য
পদ্ধতি
১.ভিটামিন মিনারেলের মিশ্রনে ঝোলাগুড়সহ জ্বাল দিয়ে সামান্য ঘন করতে হবে।
২.কড়াই চুলা থেকে নামিয়ে এর মধ্যে ইউরিয়া, চুর,লবণ,গমের ভুসি যোগ করে ভালভাবে মিশাতে হবে।
৩.এরপর ছাচের মধ্যে কিছু ভুসি ছিটিয়ে মিশ্রিত দ্রব্যগুলো ভরে ব্লক তৈরি করতে হবে।
৪.ব্লকগুলো শুকনো আলো বাতাসযুক্ত স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
গ) বাজারে তৈরি সম্পূরক খাদ্য :
পশুপাখির উৎপাদন চলমান রাখার জন্য এদেরকে বাজারে তৈরি বিভিন সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে ।
১. আমিষ সম্পূরক খাদ্য – যেমন, প্রোটিন কনসেনট্রেট
২, খনিজ সম্পূরক – ভিটামিন ও খনিজ প্রিমিক্স ৩. খাদ্যপ্রাণ সম্পূরক – ভিটামিন ও খনিজ প্রিমিক্স ।
ঘ) কাফ স্টার্টার:
বাছুরের খাবার উপযোগী বিশেষ দানাদার খাদ্য মিশ্রণ যাতে ২০% এর অধিক পরিপাচ্য আমিষ ও ১০% এর কম আঁশযুক্ত খাদ্য থাকে । কাফ স্টটারের একটি নমুনা নিম্নে দেওয়া হলো-
পশুপাখির সম্পূরক খাদ্যের প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
ক) ইউরিয়া মেলাসেস খড়ের প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- ১। একটি গরুকে দৈনিক ২-৩ কেজি ইউরিয়া মেশানো খড় খাওয়াতে হবে।
- ২। খড়ের সাথে দৈনিক ৩০০ গ্রাম ঝোলাগুড়রমিশিয়ে দিতে হবে।
খ) ইউরিয়া মেলাসেস ব্লকের প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- ১.গরুকে ৩০০ গ্রাম ব্লক জিহ্বা দিয়ে চেটে খেতে দিতে হবে।
- ২.প্রথমে ব্লক জিহ্বা দিয়ে চেটে খেতে না চাইলে ব্লকের উপর ভুসি ও লবন ছিটিয়ে দিতে হবে।
গ) গবাদি পশুকে অ্যালজি খাওয়ানোর প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- ১। সব বয়সের গরুকে অর্থাৎ বাছুর, বাড়ন্ত গরু, দুধের বা গর্ভবতী গাভী, হালের ৰলদ. সবাইকে সাধারণ পানির পরিবর্তে অ্যালজির পানি খাওয়ানো যায় ।
- ২। এ ক্ষেত্রে গরুকে আলাদা করে পানি খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই ।
- ৩। আ্যালজি পানি দানাদার খাদ্য. অথবা খড়ের সাথে মিশিয়েও খাওয়ানো যায় ।
- 8 । অ্যালজির পানিকে গরম করে খাওয়ানো উচিত নয়, এতে আযালজির খাদ্যমান নষ্ট হতে পারে ।
- ৫। খামারের ৫টি গরুর জন্য ৫টি কৃত্রিম পুকুরে অ্যালজি চাষ করতে হয় যাতে একটির আ্যালজির পানি শেষ হলে পরবর্তীটি খাওয়ানোর উপযুক্ত হয়।
ঘ) কাফ স্টার্টারের প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
বাছুরের বয়স অনুসারে দৈনিক ০.৫ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত খাওয়ানো যায়।
এসএসসি ২০২২ সপ্তম সপ্তাহ অন্যান্য অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান দেখুন-
[ninja_tables id=”11139″]দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সবার আগে পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখ। বাংলা নোটিশের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখ এবং প্লে স্টোর থেকে আমাদের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন