উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক
এইচএসসি ২০২১ ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। আজ তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি এইচএসসি ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক শিরোনামে।
আজকের আলোচনার সঠিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার পঞ্চম সপ্তাহের ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদানকৃত উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
এইচএসসি ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
অ্যাসাইনমেন্ট : উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি) :
উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে:-
- ১) ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
- ২) শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
- ৩) মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
- ৪) সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
- • উপকরণের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে হবে।
উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র এইচএসসি ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা
ভূমির ধারণা :
ভূমি হলো মানুষের জন্য প্রকৃতির দেয়া বিশেষ উপহার, যা ছাড়া পৃথিবীর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। ভূমি বলতে শুধু পৃথিবীর উপরিভাগ কে বোঝায় না,বরং প্রকৃতিপ্রদত্ত সব সম্পদ যা অকাতরে দান করেছে। যেমন মাটি, পানি, আলো-বাতাস, নদ নদী, সমুদ্র, আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদি বোঝায়। ভূমি প্রকৃতির উপাদান বলে এর কোন উৎপাদন ব্যয় নেই। এজন্য এরদোগান কেউ বাড়াতেও পারে না আবার কমাতেও পারেনা। শুধু তাই নয় ভূমির মালিকানা স্থানান্তরযোগ্য হলেও ভৌগোলিকভাবে ভুমি স্থানান্তর যোগ্য নয়।
নিচে ভূমির বৈশিষ্ট ব্যাখা করা হলো:
১. প্রকৃতির দান: ভূমির ভূমি এমন একটি উপাদান।যা মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। মানুষ চাইলে ভুমি তৈরির বা উৎপাদন করতে পারে না। প্রকৃতির দান বা উপহার হিসেবে এর কোনো উৎপাদন খরচ নেই। মাটির উর্বরতা,সূর্যের আলো ,আবহাওয়া,জলবায়ু , বৃষ্টিপাত,খনিজ সম্পদ,বনজ সম্পদ সৃষ্টিকর্তা মানুষের অবাধে দান করেছে।
২. উৎপাদন ব্যয় নেই: ভূমি প্রকৃতির এমন একটি উপাদান,যা মানুষ কখনই উৎপাদন করতে পারে না এবং পারবেও না । ফলে এর কোনো উৎপাদন ব্যয় বা খরচ নেই।
৩.সীমিত যোগান :ভূমির যোগান সীমিত। পৃথিবীর শুরুতে সৃষ্টিকর্তা যে পরিমাণ ভূমি আমাদেরকে দান করেছে আজও সেই পরিমাণ ভূমি আছে। কেননা এরদোগান বাড়ানো মানুষের ক্ষমতা এবং সাধ্যের বাইরে।
৪.স্থানান্তর যোগ্য নয়: ভূমির একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো তা ভৌগোলিকভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা যায় না ।তবে উৎপাদনের অন্যান্য উপাদান গুলোকে ভূমিতে এনে উৎপাদন করা কাজ সম্পন্ন করা হয় ।
৫.আদিম ও অক্ষয় :ভূমি পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম ও অক্ষয় উপাদান ।বলা হয় ভূমির উর্বরতা আদিম ও অবিনশ্বর। কিন্তু এই ধারণাটি পুরোপুরি সত্য নয়। কেননা অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের মত ভূমির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়।
৬.গুণগত ভিন্নতা :ভূমির প্রাকৃতিক দান হলেও এর গুণগত ভিন্নতা আছে। যেমন রাজশাহীর ভূমি আম উৎপাদনের জন্য যতটা কার্যকর সে তুলনায় অন্যান্য অঞ্চলের ভূমিকা অত্যন্ত কতটা কার্যকর নয়।
৭.ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বৃদ্ধির প্রভাব :ভূমির ক্ষেত্রে করো ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি টি সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। একটি নির্দিষ্ট ভূমিতে শ্রম ও মূলধনের পরিমাণ বাড়িয়ে সমান অনুপাতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয় না। যোগান সীমিত বলে পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে একই জমিতে বেশি পরিমাণে মূলধন বিনিয়োগ করতে হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে মোট উৎপাদন বাড়লেও প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যায়।
৮.বিকল্প ব্যবহার :পৃথিবীতে প্রতিবছর জনসংখ্যার পরিমাণ বাড়ছে ।কিন্তু ভূমির পরিমাণ কখনো বাড়েনি জনসাধারণের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী ভূমির বিকল্প ব্যবহার দেখা যায়।
তাই বলা যায় ভূমি হলো অবিনশ্বর। এর কোন ক্ষয় নাই অর্থাৎ ভূমি প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদ যা চিরস্থায়। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ভূমিক্ষয় পরিলক্ষিত হলেও কখনো ধ্বংস হয় না।
শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা
শ্রমের ধারণা :
শ্রম বলতে মানুষের দৈহিক বা শারীরিক পরিশ্রম কে বোঝায় কিন্তু অর্থনৈতিক শ্রম বলতে মানুষের শারীরিক ও মানসিক কর্মপ্রচেষ্টা কে বোঝায় যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। অর্থাৎ যে পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায় না তা কখনোই শ্রম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। কোন ধরনের অর্থ উপার্জনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য না থাকলে তাকে শ্রম বলা যায় না। আবার কেউ যদি শুধু নিজের ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি এবং প্রাপ্তি লাভের জন্য পরিশ্রম করে তাহলেও তাকে শ্রম হিসেবে বিবেচিত হবে না।
যেমন মিস রুমা তার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় 5 কেজি বেশি তাই তিনি ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিশ্রম করেন তখন তাকে বলা যাবে না। ভাবে মিস ফারজানা নিজের সন্তুষ্টি লাভের জন্য বাগান করার লক্ষ্যে প্রচুর পরিশ্রম করেন। তবে তাও শ্রম হিসেবে বিবেচিত হবে না। কিন্তু তার বাগান করার পিছনে যদি অর্থ উপার্জনের বিষয়টি জড়িত থাকে তবে তা শ্রম হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ শ্রম বলতে ওইসব শারীরিক এবং মানসিক পরিশ্রম কে বোঝায় যার মাধ্যমে আয় বা অর্থ উপার্জিত হয়।
নিচে শ্রম এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো :
মানবিক উপাদান: শ্রম এমন একটি বিষয় যার প্রকৃত উৎস হল মানুষ। মানুষ ছাড়া অন্য কোন উৎস থেকে শ্রম পাওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে শ্রমকে শারীরিক মানসিক এবং জীবন্ত উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
শ্রমিক ও শ্রম অবিচ্ছিন্ন :শ্রমিক থেকে শ্রমকে কখনো আলাদা করা যায় না। উভয়ের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান থাকায় শ্রমিক এবং শ্রমের সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন। শ্রম যেখানে শ্রমিক ও সেখানে।
দর কষাকষির ক্ষমতা কম :উৎপাদনের মৌলিক উপাদান গুলোর পারিশ্রমিকের ব্যাপারে মালিকের সাথে দরকষাকষি সুযোগ থাকলেও শ্রম এর ক্ষেত্রে তেমন সুযোগ নেই।অর্থাৎ মালিকের সাথে শ্রমিকের দরকষাকষির ক্ষমতা খুবই কম।ফলে দর কষাকষির এই তারা কম পরিশ্রমে কাজ করে থাকে।
মালিকানা হস্তান্তর যোগ্য নয় :ভূমি এবং মূলধনের ক্ষেত্রে মালিকানা হস্তান্তর যোগ্য হলেও শ্রমিক তার নিজস্ব শ্রম হস্তান্তর করতে পারে না। কেননা শ্রমিক নিজেই তার শ্রমের যোগান দাতা।
শ্রমকে সংরক্ষণ করা যায় না: উৎপাদনের উপাদান গুলোর মধ্যে ভূমি ও মূলধন ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা গেলেও একজন শ্রমিকের কখনো সংরক্ষণ করা যায় না ।কারণ একজন শ্রমিকের অনুপস্থিতিতে তার শ্রম, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিঃশেষ হয়ে যায়।
ব্যক্তিগত উপস্থিতি :শ্রমিকের শ্রম কাজে লাগানোর জন্য তাকে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে এবং সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয়। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মার্শালের ফরম বিক্রির জন্য অবশ্যই কার্যক্ষেত্রে উপস্থিত থাকতে হয় ।
শ্রম গতিশীল: শ্রম উৎপাদনে গতিশীল উপাদান। কারণ শ্রমিক এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে পারে ।তবে ভৌগলিক অবস্থান দেশ জাতীয় ভাষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে শ্রমের গতিশীলতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
শ্রমের যোগান পরিবর্তনশীল :শ্রমের যোগান দেশে কর্মক্ষম মানুষ ও তাদের কাজের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। জন্মহার শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে শ্রমের যোগান বাড়ানো যায়। অন্যদিকে মৃত্যু হার বেড়ে যাওয়া শিক্ষার অভাব ইত্যাদির কারণে শ্রমের যোগান কমে যায়। এজন্যই বলা হয় শ্রমের যোগান পরিবর্তনশীল।
তাই বলা যায় উৎপাদনের জীবন্ত উপাদান হিসেবে শ্রম এর উপযুক্ত কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় যাতে উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ থেকে আলাদা করেছে।
মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা
মূলধনের ধারণা :
সাধারন অর্থে মূলধন বলতে ব্যবসায় নিয়োজিত অর্থ বা সম্পর্কে বোঝায়। মূলত যেসব সম্পদ আয়-উপার্জনের ব্যবহৃত হয় তাকে মূলধন বলে। কিন্তু অর্থনীতিতে মানুষের শ্রম এর মাধ্যমে তৈরি সেসব দ্রব্য সামগ্রী কে বোঝায় যা বর্তমানে ভোগে ব্যবহৃত না হয়ে ভবিষ্যৎ উৎপাদনে সহায়তা করে। মূলধনকে উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান বলা হয়। অর্থাৎ মূলধন ছাড়া উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
তাছাড়া উৎপাদনের চারটি উপাদানের মধ্যে মূলধন অন্যতম। মূলধন উৎপাদনের একটি মৌলিক উপাদান। প্রতিষ্ঠান সাফল্য বা ব্যর্থতা অনেকাংশে মূলধনের ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত মূলধন প্রয়োজন। কারণ মূলধনী উৎপাদনে চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
মূলধনের বৈশিষ্ট্য :
মূলধন উৎপাদনশীল : মূলধন উৎপাদন কাজে সরাসরি সাহায্য করে যেমন যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ইত্যাদি মূলধন। এগুলো উত্পাদন প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয় ও পণ্য উৎপাদন করে। এ অর্থে মূলধনকে উৎপাদনশীল বলা হয়।
অতীত শ্রমের ফল :মূলধন মানুষের অতীত শ্রমের ফল শ্রমের যে অর্জিত অংশ ভোগ না করে সঞ্চয় করে রাখা হয় তাই মূলধন।
মূলধন অস্থায়ী :মূলধন চিরস্থায়ী নয়।মূলধন ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং অকেজো হয়ে পড়ে যেমন দালানকোঠা যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।
মূলধনের উৎপাদন খরচ :বিদ্যামান মূলধন সৃষ্টি হয় মানুষের শ্রমের মাধ্যমে। অতএব মূলধন উৎপাদনের শ্রম খরচ সহ অন্যান্য খরচ আছে।
উৎপাদন বেড়ে যাওয়া :যে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের মূলধন যত বেশি সে প্রতিষ্ঠানে আয়ও তত বেশি হবে। মূলধনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মূলধন উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে রাখে।
সঞ্চয় থেকে সৃষ্টি: মূলধন সৃষ্টি হয় সঞ্চয় থেকে ।আর সঞ্চয় সৃষ্টি হয় মানুষের আয় থেকে। সঞ্চিত অর্থ উৎপাদনে ব্যবহার করলে তা মূলধনে পরিণত হয়।
ভবিষ্যৎ আয়ের এর উৎস :মূলধন মানুষের ভবিষ্যৎ আয়ের উৎস। একজন মানুষ সব সময় সমান পরিমাণ পরিশ্রম করতে পারে না। যুবক বয়সে যে পরিমাণ উৎপাদন করতে পারে বৃদ্ধ বয়সে সে পরিমাণ উৎপাদন করতে পারে না। তাই তার যখন বেশি পরিশ্রম করার বয়স তখন সে বেশি পরিশ্রম করে অতিরিক্ত পরিমাণ সঞ্চয় করে স্থায়ী সম্পত্তি অর্জন করে থাকে।
সুতরাং মূলধন উৎপাদনের মৌলিক উপাদান তাই মূলধন এর বৈশিষ্ট্যসমূহ অন্যান্য উপাদান থেকে এটি কে পৃথক করেছে।
সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা
সংগঠনে ধারণা :
নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে উৎপাদনের উপাদান গুলোকে একত্রিত করে এদের মধ্য সমন্বয়সাধন পূর্বক কোন প্রতিষ্ঠান গঠন পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের কাজকে সংগঠন বলে। উৎপাদন উপকরণসমূহের সর্বশেষ ব্যর্থ উপকরণ হলো সংগঠন। সংগঠন উৎপাদনের উপকরণ সমূহ একত্রিত করে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করেন। প্রকৃতপক্ষে ভূমি শ্রম মূলধন একত্রিত করে তাদের সমন্বয় সাধন করার প্রক্রিয়াকে সংগঠন বলে। সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য হল একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সেখানে শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দেওয়া যাতে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকর্মীর মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়। উৎপাদনের উপাদান হিসেবে সংগঠনের কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
নিচের সংগঠনের বৈশিষ্ট্য সমূহ বর্ণনা করা হলো :
গোষ্ঠী বা দল :সংগঠন হতে হলে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি দল থাকতে হবে। কোন এক ব্যক্তিকে নিয়ে কোন সংগঠন গঠিত হতে পারে না।
উদ্দেশ্য : সংগঠনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল উদ্দেশ্য। মূলত সংগঠনে একটি উদ্দেশ্য কে কেন্দ্র করে মানবীয় ও মানবীয় উপাদানসমূহ একত্রিত করা হয়। সাধারণ মুনাফা লাভের আশায় উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদান গুলো সংগ্রহ করা ও তাঁদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করাই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য।
সম্পর্ক নির্ণায়ক :সংগঠন প্রতিষ্ঠান কর্মরত কর্মীবাহিনীর সম্পর্ক নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ কে কার অধীনে কি কাজ করবে তা নির্ণয় করা সংগঠন।
শ্রম বিভাগ :শ্রম বিভাগ হল যে কর্মীর যে বিষয়ে দক্ষ অভিজ্ঞ তাকে সে ধরনের কাজ বন্টন করা। সংগঠন শ্রমিকদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ বন্টন করে।যা সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে।
দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন :প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন করা অবশ্যক ।সঠিকভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন না করা গেলে সংগঠন কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে না। কাজ বিন্যাস সংগঠনের মাধ্যমে উৎপাদনের জন্য যাবতীয় কাজ গুলো সঠিক ভাবে বিন্যাস করা হয়।
সমন্বিত প্রচেষ্টায় :সমন্বিত প্রচেষ্টার সংগঠনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।কোন কোন ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি সংগঠনের মধ্যে একসঙ্গে কাজ করে।
উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক
আদর্শ ঐক্য :সংগঠনের নির্দেশ করে দেয় কে কার অধীনে কি কাজ, কি দায়িত্ব পালন করবে। এর ফলে এখানে আদেশের ঐক্য থাকে।
নিয়ন্ত্রণ :সংগঠন প্রতিষ্ঠান কাজগুলোর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এখানে পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা,তা যাচাই করা হয়।ভুল হলে সংশোধন করা হয়।
পরিবর্তনশীলতা :সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সংগঠনের কাঠামো পরিবর্তন করতে হতে পারে। তাই সংগঠনের কাঠামো পরিবর্তনের সুযোগ থাকতে হবে।
মনোভাব পরিবর্তন :সংগঠন কর্মীদের মনোভাব পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করে।এর ফলে কর্মীদের কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
কাজের পরিসর নির্ণয়:প্রতিষ্ঠানে কাজ এর পরিসর কেমন হবে তা নির্ণয় করে সংগঠন। অর্থাৎ,সংগঠনে কতজন লোক নিয়োগ করা হবে এবং একজন লোকের নিয়ন্ত্রণে একজন কাজ করবে তা সংগঠনের মাধ্যমে ঠিক করা হয়।
তাই বলা যায়, একটি ব্যবস্থাপনা সংগঠনের উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা প্রয়োজন, তা না হলে সংগঠনটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
উপকরণের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ
উৎপাদন বলতে কোন কিছু তৈরি বা সৃষ্টি করাকে বুঝায়। মানুষ কেবল প্রকৃতি থেকে পাওয়া বিভিন্ন বস্তুর আকার আকৃতি পরিবর্তন করে তা ব্যবহার উপযোগী এবং আকর্ষণীয় পণ্যের রূপান্তর করতে পারে। তাই বলা যায়, যেসব প্রাকৃতিক এবং অফ প্রাকৃতিক উপকরণ এর সাহায্যে পণ্যসামগ্রী এবার সেবারও অনুগত ও রোগ গত পরিবর্তন করে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা যায, সে গুলোকে গোত্র উপাদান ও উপকরণ বলে।
উপাদান করতে হলে কিছু উপাদানে প্রয়োজনীয়তা আছে। যেমন :কেউ যদি দান ভাগ্য মতন করতে চাই, তাহলে শুধু জমি হলেই চলবে না। সেখানে বীজ বাচ্চারা, কৃষকের শ্রম, প্রয়োজনে মূলধন এবং সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা আছে। তাই বলা যায়, উৎপাদনের সাথে এরূপ উপকরণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে উৎপাদনের প্রধান উপকরণ বা উপাদান হলো চারটি। যথা :ভূমি, শ্রম,মূলধন ও সংগঠন।
ভূমি :
ভূমি হল উপাদান এর প্রধান উপাদান। সাধারণ অর্থে, ভূমি বলতে পৃথিবীর উপরিভাগে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে বমি বলতে শুধু পৃথিবীর উপরিভাগ কে বোঝে না,বরং পৃথিবীর সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদকে বুঝায় । যেমন: আবহাওয়া, জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, সূর্যের আলো, বাতাস, পানি, মাটির উর্বরতা শক্তি, বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ ইত্যাদি ভূমি অন্তর্ভুক্ত।
শ্রম :
পণ্য বা সেবা সামগ্রী উপাদানের জন্য ব্যবহৃত মানুষের সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক কর্মপ্রচেষ্টা কে শ্রম বলে। কিন্তু অর্থনীতিতে মানুষের সব প্রচেষ্টাকে শ্রম বলে না। যেমন: কেউ যদি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ছাড়া কেবল আনন্দ বা তৃপ্তি লাভের জন্য পরিশ্রম করে, তখন তার শ্রমিক নেবে বিবেচিত হয় না ।অর্থনীতিতে শ্রমিক মানুষের সেসব প্রচেষ্টাকে বোঝায়, যেখানে পরিশ্রম এর বিনিময় কিন্তু অর্থ বা মুনাফা অর্জন করা যায়। সব কাজেই কমবেশি শারীরিক ও মানসিক শ্রমের সমন্বয় ঘটে।
মূলধন :
মূলধন উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটিআই সৃষ্টি করে। সাধারণ অর্থে, মূলধন না বলতে কোন ব্যবসায়ীকে নিয়োজিত অর্থ কি বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে উৎপাদিত দ্রব্যের যে অংশ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে মূলধন বলে। তাই বলা যায়, ব্যবসায় নিয়োজিত অর্থ ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল প্রভৃতি উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হলে তা মূলধন হিসেবে বিবেচিত হবে।
সংগঠন :
উৎপাদনে চতুর্থ উৎপাদনকে হলো সংগঠন। এর মাধ্যমে অন্যান্য তিনটি উৎপাদনকে একত্রিত করা হয়।উৎপাদনে প্রয়োজনীয় উপকরন সমুহ একত্র করে সকলের সহযোগিতা দিতে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করাকে সংগঠন বলে। অর্থাৎ, সংগঠনের কাজ হল সংগঠিত করা। উৎপাদনের মাত্রা বাড়ানোর ফলে এ সংগঠনের গুরুত্ব ইতিমধ্যে সবার কাছে অনুরোধ আবৃত হচ্ছে। কেননা সংগঠন ছাড়া কোনভাবেই উৎপাদন কাজের পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
তাই বলা যায়, উৎপাদনের সব উপাদান অথবা উপকরণ নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য অধিকারী। কোন কিছু উপাদান করতে হলে প্রত্যেকটি উপকরণের সমন্বয় খুবই জরুরী।
এই ছিল তোমাদের এইচএসসি ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক।
এইচএসসি ২০২১ ৫ম সপ্তাহের অন্যান্য এসাইনমেন্ট সমাধান দেখুন
[ninja_tables id=”10994″]আরো দেখুন-
প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লে-স্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।