বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সময় ও ঋতুগত পার্থক্যের কারণ

তোমাদের জন্য নবম শ্রেণীর পঞ্চম অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ ইংরেজি, বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় এর মধ্যে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় থেকে তৃতীয় অধ্যায়ের একটি নির্ধারিত কাজ দেয়া হয়েছে। তোমাদেরকে বাংলাদেশের জুলাই মাসের সকাল ১০টার সময়ে জাপান, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় নির্ণয় করতে হবে এবং বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সময় ও ঋতুগত পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

তোমাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে নবম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের তৃতীয় অধ্যায় থেকে বাংলাদেশের জুলাই মাসের সকাল ১০টার সময়ে জাপান, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় নির্ণয় এবং বাংলাদেশের সাথে উল্লিখিত দেশসমূহের স্থানীয় সময় ও ঋতুগত পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা নিয়ে একটি নমুনা প্রতিবেদন দেয়া হলো।

নবম শ্রেণীর পঞ্চম অ্যাসাইনমেন্ট বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এর উত্তর

২০২০ শিক্ষাবর্ষের মত ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ও শিখন শেখানো কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পঞ্চম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবই থেকে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে যথা সময়ে পঞ্চম সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের এ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকের নিকট জমা দিতে হবে।

অধ্যায়- তৃতীয়
শিরোনাম- সৌরজগৎ ও ভূমন্ডল।
শিখনফল-

  • সৌরজগতের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • সৌরজগতের গ্রহগুলোর বর্ণনা করতে পারব;
  • পৃথিবী গ্রহে জীব বসবাস এর কারণ ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • ভূ-অভ্যন্তরের গঠন বর্ণনা করতে পারব ;
  • সৌরজগৎ ও গ্রহসমূহের অবস্থানে এঁকে দেখাতে পারব ;
  • নিরক্ষরেখা, সমাক্ষরেখা, দ্রাঘিমারেখা, মূল মধ্যরেখা, আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • বিশ্বের সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কাল্পনিক রেখা গুলির ভূমিকা নির্ণয় করতে পারব ;
  • বাংলাদেশ ও পৃথিবীর যেকোনো দেশের সময়ের পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা এবং সময় নির্ণয় করতে পারব;
  • বিভিন্ন রেখার অবস্থান এর চিত্র আঁকতে পারব;
  • পৃথিবীর গতির ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব;
  • আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতির ধারণার ব্যাখ্যা এবং পৃথিবীর উপর এ গতির প্রভাব বর্ণনা করতে পারব;
  • দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • পৃথিবীতে ঋতু পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • বার্ষিক গতির সাথে বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে পারব;
  • নতুন পরিস্থিতিতে গাণিতিক জ্ঞান প্রয়োগ করে সময় নির্ণয় করতে পারব ;
  • জোয়ার ভাটার ধারণা, কারণ ও শ্রেণীবিভাগ ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • পৃথিবীর উপর জোয়ার-ভাটার প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারব ;
  • পরিবেশের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি ও অভিযোজন সক্ষম হব।

পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নম্বর ও শিরোনাম/ বিষয়বস্তু –

  • ৩.১ সৌর জগৎ-৫
  • ৩.২ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সময় নির্ণয়-৪
  • ৩.৩ পৃথিবীর গতি-৪
  • ৩.৪ জোয়ার ভাটা-২

নির্ধারিত কাজ-

বাংলাদেশের জুলাই মাসের সকাল ১০টার সময়ে জাপান, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় নির্ণয় কর। বাংলাদেশের সাথে উল্লিখিত দেশসমূহের স্থানীয় সময় ও ঋতুগত পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা কর।

নির্দেশনা-

  1. সময়ের পার্থক্যের ক্ষেত্রে দ্রাঘিমারেখার ভূমিকা উল্লেখ করবে।
  2. স্থানগুলোর স্থানীয় সময় নির্ণয় করবে।
  3. ঋতু পরিবর্তনের চিত্র অংকন করবে।
  4. বার্ষিক গতির ফলাফল ও অবস্থানের ভিত্তিতে উল্লেখিত দেশগুলির ঋতুর পার্থক্য ব্যাখ্যা করবে।

নবম শ্রেণীর পঞ্চম অ্যাসাইনমেন্ট বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এর উত্তর

পৃথিবীর সময় ও স্থান নির্ণয়ের জন্য দ্রাঘিমা রেখার প্রয়োজন হয়। পুরো পৃথিবী 360 ডিগ্রী এর অন্তর্ভুক্ত। এই 360˚ কে কেন্দ্র করে গ্রিনিচ মান মন্দির কে ০ ডিগ্রি ধরে ১৯৮০ সালে সমগ্র পৃথিবীর জন্য একটি আন্তর্জাতিক সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই 360˚ থেকে কোনো দেশের দ্রাঘিমা জেনে সেদেশের সময় নির্ধারণ করা যায়। তেমনিভাবে কোন দেশের জিএমটি সময় জেনে দ্রাঘিমার সাহায্যে সে দেশ কোথায় অবস্থিত তা জানা যায়। তাই বলা যায় সময়ের পার্থক্য এর ক্ষেত্রে বা সময় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্রাঘিমা রেখার গুরুত্ব অপরিসীম।

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও কানাডার স্থানীয় সময় নির্ধারণ :

কোন দেশের সময়ের পার্থক্যের জন্য দ্রাঘিমারেখা অথবা আন্তর্জাতিক প্রমাণ সময়ের প্রয়োজন হয়। আর পৃথিবীতে একটি স্বীকৃত প্রমাণ সময় হল জিএমটি (GMT- Greenwich Mean Time Zone) অর্থাৎ গ্রিনিচ মান মন্দির কে ০ ডিগ্রী ধরে যে সময় নির্ধারণ করা হয়। নিচে উল্লেখিত দেশগুলির দ্রাঘিমা রেখার সাহায্যে তাদের সময় বের করা হলো –
আমরা জানি,
বাংলাদেশে = ৯০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত
যুক্তরাষ্ট্র = -৬০ ডিগ্রী দ্রাঘিমা রেখা অবস্থিত
কানাডা = -৬০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত
জাপান = ১৩৫ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত।

সুতরাং, উল্লেখিত ডিগ্রী দ্রাঘিমা থেকে জিএমটি সময় বের করলে আমরা জানতে পারব বাংলাদেশে যখন দশটা বাজে তখন অন্য দেশগুলোর সময় কত।
যুক্তরাষ্ট্র = -৬০ ডিগ্রী
আমরা জানি,
১˚ = ৪ মিনিট
সুতরাং, ৬০˚ = ৬০ X ৪
বা, ২৪০ মিনিট।

আবার, ২৪০÷৬০ = ৪ ঘণ্টা (৬০ মিনিট = ১ ঘণ্টা)
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র জিএমটি – ৪ ঘণ্টা পিছিয়ে (যেহেতু -৬০˚ ছিল, তাই ‘-‘ মাইনাস হবে)।

বাংলাদেশ =৯০˚
৯০ X ৪ = ৩৬০ (১˚=৪ মিনিট)
আবার,
৩৬০÷৬০=৬ ঘণ্টা (৬০ মিনিট=১ ঘণ্টা)
অর্থাৎ, বাংলাদেশ জিএমটি ৬ ঘণ্টা এগিয়ে।
সুতরাং, জিএমটি ঘড়ি অনুযায়ী বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ ঘণ্টা আগে। তাই এটা প্রমাণিত যে, বাংলাদেশে জুলাই মাসে যখন সকাল ১০ টা বাজে তখন যুক্তরাষ্ট্রে রাত ১২ টা বাজে।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্রাঘিমা রেখা সমান হওয়ায় বলা যায়, কানাডাতেও রাত ১২ টা বাজে।

জাপান =১৩৫˚
১৩৫ X ৪=৫৪০ মিনিট (১ডিগ্রি =৪ মিনিট)
আবার,
৫৪০÷৬০=৯ ঘণ্টা

অর্থাৎ, জাপান জিএমটি অনুযায়ী ৯ ঘণ্টা এগিয়ে।
যেহেতু, বাংলাদেশ জিএমটি থেকে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে অর্থাৎ জাপান বাংলাদেশ থেকে ৩ ঘণ্টা এগিয়ে, তাই বাংলাদেশে যখন জুলাই মাসের সকাল ১০ টা, তখন জাপানের সময় দুপুর ১টা।

পঞ্চম অ্যাসাইনমেন্ট নবম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এর উত্তর

ঋতু পরিবর্তনের চিত্র অংকন :

স্থানীয় সময়ের পার্থক্যের কারণ :

পৃথিবীটা গোলাকার হওয়ার কারণে সূর্যের আলো পৃথিবীর চারপাশে সমানভাবে পড়ে না। যার ফলে পৃথিবীর কোথাও সকাল হলে, অন্য পাশে রাত। আবার কোথাও ভোর হলে, অন্য পাশে সন্ধ্যা হয়। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশগুলোতে একদেশে ভোর পাঁচটা হলে, অন্য দেশের সন্ধ্যা ছয়টা।

আবার এক দেশে সকাল আটটা হলে, আরেক দেশে সন্ধ্যা নেমে আসে। আর পৃথিবীর এই রাতদিন হওয়ার কারণ হল আহ্নিক গতি। যদি পৃথিবীর আহ্নিক গতি না থাকতো, তাহলে দেখা যেত পৃথিবীতে এক পাশে সর্বদা দিন থাকতো, আরেক পাশে রাত থাকতো।

তাই বুঝা যায়, এই আহ্নিক গতির কারণে স্থানীয় সময়ের পার্থক্য হয়ে থাকে।

ঋতুর পার্থক্যের কারণ :

সময়ের পার্থক্য যেমন আহ্নিক গতির কারণে হয়ে থাকে, তেমনই ঋতুর পার্থক্য হওয়ার কারণ হলো বার্ষিক গতি। পৃথিবী নিজ অক্ষে অবিরাম ঘুরতে ঘুরতে নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারপাশে একবার পরিক্রম করার নাম বার্ষিক গতি।

নিচে বিভিন্ন দেশের ঋতুর পার্থক্য হওয়ার কারণ তুলে ধরা হলো-

  • কোন স্থানে দিবাভাগের পরিমাণ রাতের পরিমাণ হতে দীর্ঘ হলে, সেই স্থানে বায়ুমণ্ডল অধিকতর উষ্ণ থাকে। যার ফলে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র তাপের তারতম্য হয় এবং ঋতুর পরিবর্তন ঘটে।
  • সূর্যকে পরিক্রমণ কাল পৃথিবীর সব সময় ৬৬.৫° কোণে হেলে ঘুরতে থাকে। যার কারণে বিভিন্ন স্থানে সূর্য রশ্মির পতনে কৌণিক তারতম্য ঘটে এবং ঋতু পরিবর্তন হয়।
  • সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্বের বৃদ্ধির ফলে সূর্যতাপে তারতম্য হয় এবং ঋতুর পরিবর্তন ঘটে। এই সকল কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ঋতুর পার্থক্য দেখা দেয়।

পৃথিবীতে বহু দেশ রয়েছে। এই দেশগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রয়েছে এবং এদের সময় এর ভিন্নতা রয়েছে। পাশাপাশি সকল দেশে ভিন্ন ভিন্ন মৌসুম হয়ে থাকে।

হয়তোবা অনেক দেশে গ্রীষ্মকাল থাকে। কিন্তু সে গ্রীষ্মকালের মধ্যেও পার্থক্য থাকে। কোথাও বা বর্ষাকাল হয়। আবার কোথাও বা একদমই বৃষ্টি হয় না অথবা নাতিশীতোষ্ণ হয়। আবার কোথাওবা বরফ শীতল হয়ে থাকে।

নবম শ্রেণীর পঞ্চম অ্যাসাইনমেন্ট বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এর উত্তর

এই ছিল তোমাদের নির্ধারিত কাজের নমুনা উত্তর। তোমরা কোন ভাবেই এটিকে হুবহু কপি করবে না। তবে এর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিজের মেধা মনন কে কাজে লাগিয়ে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।

আরো দেখুন-

প্রতিসপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট এবং অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত যেকোন সহযোগিতা পেতে নিচের Download From PlayStore বাটনে ক্লিক করে বাংলা নোটিশ ডট কম এন্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে নাও।

তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার জন্য বাংলা নোটিশ ফেসবুক গ্রুপে দেশের বিভিন্ন নামকরা বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আলোচনা করছে। তুমিও যোগ দিয়ে বিভিন্ন তথ্য পেতে পারো- গ্রুপ লিংক- facebook.com/groups/banglanotice

নিয়মিত বাংলা নোটিশ ডট কম ভিজিট করুন এবং ফেসবুক পেইজ Like & Follow করে রাখুন; ইউটিউবে আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন।

বাংলা নোটিশ এর প্রশ্ন উত্তর অংশে যোগদিয়ে তোমার মনে থাকার কি কোন বিশেষ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারো। যোগ দেওয়ার জন্য নিচের প্রশ্নোত্তর বাটনে ক্লিক করুন।

                                                                               প্রশ্নোত্তর দেখুন

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *