সমাজ ও সভ্যতা গঠনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান
৭ম শ্রেণির ১ম সপ্তাহের বাংলা এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২- সমাজ ও সভ্যতা গঠনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। এখান থেকে শুরু হচ্ছে-
৭ম শ্রেণির ১ম সপ্তাহের বাংলা এসাইনমেন্ট ২০২২
এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ সমাজ ও সভ্যতা গঠনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান।
নির্দেশনাঃ
- পাঠ্যবই থেকে ‘কুলি-মজুর’ কবিতা পড়তে হবে।
- একজন শ্রমজীবী মানুষের সাক্ষাৎকার নেওয়ার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
কাজের ধাপঃ
- শ্রমজীবী মানুষের পরিচয় দিতে হবে।
- বিভিন্ন পেশার মানুষের তালিকা তৈরি করতে হবে।
- সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে একজন শ্রমজীবী মানুষের জীবন যাপনের বিররণ লিখতে হবে
- সমাজ ও সভ্যতা নির্মাণে শ্রমজীবী মানুষের অবদান নিয়ে লিখতে হবে।
ক. শ্রমজীবীর পরিচয়
কোনাে ব্যক্তি তার যােগ্যতা ও কাজের উপযােগী হয়ে কোন অর্থ উপার্জনের কাজে নিয়ােজিত থাকেন তাকে। শ্রমিক বলা হয়। শ্রমিক মূলত তার শ্রম বিক্রয় করেন এবং এক পক্ষকে তার উপযুক্ত মূল্য পরিশােধ করে। থাকেন। আবার অন্য ভাবে বলা যেতে পারে যে, কোন প্রতিষ্ঠান বা কার্যসম্পাদনের জন্য কিছু সংখ্যক লােক তাদের শ্রমের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকেন তাদেরকেও শ্রমিক বলা হয়। যে ব্যক্তি শ্রমের বিনিময়ে তার। জীবিকা নির্বাহ করে থাকে তাকে শ্রমজীবী বলা হয়।
খ. বিভিন্ন পেশার মানুষের তালিকা
- ইজারাঃ নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অন্যের জমিতে বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দেয়।
- কল কারখানার শ্রমিকঃ যারা বিভিন্ন কারখানায় শ্রমের বিনিময়ে নিজেদের জীবিকা সরবরাহ করে।
- কৃষকঃ যারা মাঠে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে থাকেন।
- কুলিঃ যারা স্টেশন থেকে অন্যের মালামাল নিজের মাথায় বহন করে নিয়ে মাল যায়।
- জেলেঃ যারা নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
- তাঁতিঃ যারা সুতা দিয়ে পােশাক তৈরি করে বিক্রি করে। কুমারঃ যারা মাটি দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করে।
- কামারঃ লােহা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র যেমন: দা, বটি, কঁচি ইত্যাদি তৈরি করে।
গ.সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে একজন শ্রমজীবী মানুষের জীবন যাপনের বিবরণ
একজন শ্রমজীবী মানুষের জীবন-যাপনের বিবরণঃ একজন শ্রমজীবী মানুষ হল এমন একজন ব্যক্তি যে তার কপালের ঘামের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে জীবন পরিচালনা করে। তিনি সুস্থ, শক্তিশালী এবং দৃঢ়চেতা তিনি তার পরিবারের সাথে একটি ছােট্ট কুড়ে ঘরে থাকেন এবং একটি অধম জীবনযাপন করেন।
তিনি সাধারণত কৃষি বা নির্মাণ কাজে নিযুক্ত হন। তিনি তার নিয়ােগকর্তার নির্দেশ অনুসারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। খুব ভােরে ঘুম থেকে উঠে কাজের সন্ধানে বের হয়। তার কাজে দক্ষতার চেয়ে শক্তি প্রয়ােজন। তিনি ভাের থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেন। সন্ধ্যায় তার মজুরি পায়। তার আয় খুবই কম এবং কখনও কখনও যুক্তিসঙ্গত মজুরিও অর্জন করতে পারে না। তারপর সে বাজারে যায়, তার নিত্যপ্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র কিনে তার বাড়িতে ফিরে আসে। সারাদিন পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য খাবার কিনে দেন।
তার সুখ দুঃখ দুটোই আছে। বেশি উপার্জন করলে সে আনন্দ পায় । যখন তিনি তা করতে ব্যর্থ হন, তখন তিনি ব্যথিত হন। সে জানে না আনন্দ কাকে বলে। পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার উপার্জন খুবই কম হওয়ায় তার সন্তানরা সঠিক শিক্ষা পায় না এবং তার পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
ঘ.সমাজ ও সভ্যতা নির্মাণে শ্রমজীবী মানুষের অবদান
১। সভ্যতার বিনিমণিঃ একজন রাজমিস্ত্রি এবং শ্রমিক সভ্যতা সৃষ্টি করে থাকে। বড় বড় শহরের বড় বড় অট্টালিকা তৈরি পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান রয়েছে একজন রাজমিস্ত্রির। বলা যায় সভ্যতার বিনির্মাণ শুরু হয় রাজমিস্ত্রির হাত ধরে।
২। রাস্তা-ঘাট নির্মাণঃ আমাদের চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট নির্মাণ করে রাজমিস্ত্রিরা। তারা সঠিকভাবে কাজ করে রাস্তাঘাট নির্মাণ করে বলেই আমরা অনায়াসে একস্থান থেকে অন্যস্থানে খুব দ্রুত যেতে পারি।
৩। অবকাঠামােগত উন্নয়ন: একটি দেশের দেশের অবকাঠামােগত উন্নয়নে রাজমিস্ত্রি শ্রমজীবী মানুষদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের স্থাপনা যেমনঃ সেতু, উড়াল সড়ক, রাস্তা, বাঁধ, বিমান বন্দর, সমুদ্র বন্দর, স্টেডিয়াম, ভাস্কর্য, কৃত্রিম জলাধার, পানি-গ্যাস তেল সঞ্চালন লাইন, পয়ােনিষ্কাশন লাইন সহ নগরায়নের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে।
৪। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করাঃ একজন রাজমিস্ত্রি,শ্রমিক যখন উঁচু উঁচু ভবন নির্মাণের কাজ করেন তখন তাদের জীবনের অনেক ঝুঁকি থাকে। ১৫/২০ তলা ভবনের কাজে যখন একজন নির্মাণ শ্রমিক রাজমিস্ত্রি বিভিন্ন জিনিসপত্র ওঠানামার কাজ করেন তখন যে কোন মুহূর্তে তাদের মৃত্যু ঘটতে পারে।
সমাজ ও সভ্যতা গঠনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান
৫। বাংলার ঐতিহ্যের ধারকঃ কামার পেশায় কর্মরত শ্রমজীবী সারা I বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত বিভিন্ন জিনিস বানিয়ে বাংলার মানুষের ঐতিহ্য ধারণ করার কাজ করে যাচ্ছেন।
৬। দৈনন্দিন যন্ত্রপাতি প্রস্তুতঃ কামার পেশায় কর্মরত ব্যক্তিরা দৈনন্দিন। জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেমন দা,কাচি, বঁটি, কুড়াল ইত্যাদি বানিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। চামড়া এবং চামড়া দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাকচিক্য ধরে রাখার জন্য তাদের অবদান অনস্বীকার্য। ওদের কাজের মাধ্যমে আমাদের সৌন্দর্য এবং সভ্য হতে সাহায্য করে।
এটিই তোমাদের ৭ম শ্রেণির ১ম সপ্তাহের বাংলা এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২- সমাজ ও সভ্যতা গঠনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
আরো দেখুন-
সকল স্তরের শিক্ষা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি বিজ্ঞপ্তি, চাকুরির পরীক্ষা, এডমিট কার্ড, পরীক্ষার রুটিন, সরকারি বেসরকারি বৃত্তি, উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য সবার আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি Follow করে রাখুন। ইউটিউবে সর্বশেষ আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ডট কম এর ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন। আপনার প্রতিষ্ঠানের যেকোন বিজ্ঞপ্তি, খবর, নোটিশ ও জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।