সর্বশেষ আপটেড

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা

এইচএসসি ২০২১ মানবিক বিভাগের প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। আজ তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের সমাজকর্ম ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

আজকের আলোচনার সঠিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ৬ষ্ঠ সপ্তাহের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদানকৃত সমাজকর্ম ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ সমাজকর্ম অ্যাসাইনমেন্ট

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ সমাজকর্ম অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট : শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি) :

  • বিদ্যালয়ের সমাজকর্মের ধারণা
  • বিদ্যালয়ের সমাজকর্মের গুরুত্ব
  • শিক্ষার্থীর উন্নয়নে (পাঠে মনোযোগী ও নিয়মিতকরণ) বিদ্যালয় সমাজকর্মী এর ভূমিকা ও কাজ (শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের সাথে)

এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের সমাজকর্ম ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর

ক) বিদ্যালয়ের সমাজকর্মের ধারণাঃ

পেশাদার সমাজকর্মের একটি প্রায়োগিক শাখা হচ্ছে বিদ্যালয় সমাজকর্ম। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাবলীকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় সমাজকর্ম পরিচালিত হয়। সমাজকর্মের জ্ঞান ও কলাকৌশল প্রয়োগ করে সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় পরিবেশের সাথে কাঙ্খিত সমন্বয় সাধনে সাহায্য করা এবং সমাজকর্মী কর্তৃক শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ এবং পরিবার ও সমাজের প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত ও সমন্বয় করার প্রচেষ্টাকে বিদ্যালয় সমাজকর্ম বলা হয়।

সমাজকর্ম অভিধানের (১৯৯৫) সংজ্ঞা অনুযায়ী, “বিদ্যালয় সমাজকর্ম সমাজকর্মের এক বিশেষায়িত শাখা যা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের সাথে সন্তোষজনক সামঞ্জস্যবিধানে সহায়তা করে এবং এই উদ্দেশ্য অর্জনে বিদ্যালয়, পরিবার ও সমষ্টির প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন এবং প্রভাবিত করে (School social work is the specialty in social work oriented toward helping students make satisfactory school adjustment and coordinating and influencing the efforts of the school, the family and the community to help achieve this goal.) ”

বিদ্যালয় সমাজকর্ম বিদ্যালয় পরিবেশে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ ও বিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সামঞ্জস্যবিধানের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয় সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্কুল পালানো, অমনোযোগিতা, উচ্ছৃংখল ও আক্রমনাত্মক আচরণ, বিদ্যালয় পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যহীনতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সুতরাং বলা যায়, বিদ্যালয় সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের সেই বিশেষ শাখা যা সমাজকর্মের জ্ঞান, দক্ষতা, মূলবোধ, কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিদ্যালয় পরিবেশে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পায়।

বিদ্যালয় সমাজকর্মের ইতিহাস

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে সর্বপ্রথম আমেরিকায় বিদ্যালয় সমাজকর্মের যাত্রা শুরু হয়। ১৯০৬ ও ১৯০৭ সালে আমেরিকায় বোস্টন, হার্ডফোর্ড (কানেক্‌টিকাট) এবং নিউইয়র্ক শহরের কমিউনিটি এজেন্সিগুলোর সহায়তায় প্রথম বিদ্যালয় সমাজকর্মের প্রয়োগ শুরু হয়। শিক্ষার্থী, তার পরিবার ও বিদ্যালয়ের মাঝে কার্যকর যোগাসূত্র স্থাপনের লক্ষ্যে বোস্টনে ১৯০৬ সালে West End Neighbourhood Association and Women’s Education Association নামে দুটি সংস্থার উদ্যোগে হোম এবং স্কুল ভিজিটর (Home and School Visitor) নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তীতে সংস্থা দুটিকে অনুকরণ করে আরো অনেক সংগঠন এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

আমেরিকায় বিদ্যালয় সমাজকর্মের বিকাশে প্রথম উৎস হিসেবে সেটেলমেন্ট হাউজ এবং Henry Barnard School গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে বোস্টন, নিউইয়র্ক সিটি, শিকাগো এবং হার্ডফোর্ড এর বিদ্যালয়গুলোতে এ কার্যক্রম শুরু হয়। নিউইয়র্ক শিক্ষাবোর্ড ১৯১৪ সালে প্রথম বারের মত সরকারি স্কুল ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত বাজেট হতে এই খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ শুরু করে। বিদ্যালয় সমাজকর্ম বিকাশে প্রনোদনার দ্বিতীয় উৎস হিসেবে Marry Richmond এর নাম অগ্রগণ্য। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন ও বিকাশে বিদ্যালয় সমাজকর্মের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে অনুভব করতে সক্ষম হয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

এই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৫ সালে আমেরিকায় National Association of School Social Work গঠিত হয় যা পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে National Association of Social Workers (NASW) এর সঙ্গে অঙ্গীভূত হয়। American National Association of School Social Work বিদ্যালয় সমাজকর্মের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল সোশ্যাল ওয়ার্ক কাউন্সিল গঠন করে। ১৯৭০-১৯৮০ সালে আমেরিকায় বিদ্যালয় সমাজকর্ম কার্যক্রমে বিশেষ সেবা সহায়তার অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করে।

আমেরিকায় প্রণীত Education of All Handicapped Children’s Act, 1975 এবং Individuals with Disability Education Act, 1990 অনুযায়ী বিদ্যালয় সমাজকর্মকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিদ্যালয় সমাজকর্মে সনদ পরীক্ষা শুরু হয় ১৯৯২ সালে। অবশেষে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংস্থারূপে ‘The American Council for School Social Work’ গঠিত হয়। বাংলাদেশে ১৯৬৬ সালের দিকে বিদ্যালয় সমাজকর্মের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সমাজকল্যাণ বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে ১৯৬৯ সালে শিল্পনগরী ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি বিদ্যালয়ে স্কুল সমাজকর্ম প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে আরো ৮টি বিদ্যালয়কে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ সালে তৎকালীণ সামরিক সরকারের আমলে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত বিদ্যালয় সমাজকর্ম কার্যক্রমটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

খ) বিদ্যালয় সমাজকর্মের গুরুত্ব

শিশুর প্রতিভা বিকাশ ও শিক্ষা লাভে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয় পরিবেশকে শিশুর জন্য শিক্ষাবান্ধব ও সৃজনশীল করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিবাভকদের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্ম গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয় সমাজকর্মের মূল দর্শন হচ্ছে শিক্ষার্থীর প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশে বাধা সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোর মূলোৎপাটন। শিক্ষার্থীদের জৈব-মনো-সামাজিক অবস্থা নির্ণয় (bio-psycho-social assessment), কেস ব্যবস্থাপনা, আচরণ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, মানসিক স্বাস্থ্য নীতি ও কর্মসূচি পরিকল্পনা, সম্পদ উন্নয়ন, স্কুল ও বিশেষ শিক্ষা সম্পর্কিত সেবা এবং থেরাপিউটিক হস্তক্ষেপ (therapeutic intervention) হচ্ছে বিদ্যালয় সমাজকমের্র ক্ষেত্র। এসব ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেবা প্রদান করে থাকেন।

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্রেণি ও পরিবেশ থেকে আগত। ফলে অনেপকই বিদ্যালয় পরিবেশে খাপখাওয়াতে সক্ষম হয় না যা ঝুঁকির কারণ হিসেবে দেখা দেয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভাবপর হয় না। এক্ষেত্রে বিদ্যালয় পরিবেশে শিক্ষার্থীদের সামাঞ্জস্যবিধান, স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন, পবিবার ও সমষ্টির কার্যাবলীকে প্রভাবিত করে শিক্ষার উদ্দেশ্য অর্জনে বিদ্যালয় সমাজকর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়া, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া তথা শিক্ষা বিমুখতার পেছনে বিদ্যমান পারিবারিক, শারীরিক, মনোস্তাত্ত্বিক ও মেধাগত কারণ নির্ণয় করে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে বিদ্যালয় সমাজকমের্র বিকল্প নেই বললেই চলে। বিদ্যালয়ের সকল বিত্ত শ্রেণি ও পেশাভুক্ত পরিবেশের সন্তানেরা অধ্যয়ন করে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন পেশা ও আয়ভুক্ত পরিবারের শিক্ষার্থীর মধ্যকার হীনমন্যতা ও প্রতিহিংসা দূর করে বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক ও বাঞ্ছিত শিক্ষা-আচরণ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকমের্র প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

বিদ্যালয় পরিবেশে শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক আচরণ যেমন- স্কুল পালানো, বখাটে ও অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠা, বিদ্যালয়ভীতি, বিদ্যালয়বিমুখতা, আক্রমণাত্মক আচরণ, ধূমপান বা মাদকে আসক্ত হওয়া, যৌন হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদির পেছনে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ও মনো-সামাজিক কারণ চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীকে সক্ষম করে তোলার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকমের্র গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।শিল্পসমাজে শিশু-কিশোররা বিভিন্ন ধরনের মনো-সামাজিক সমস্যার কারণে সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়ে যা বিদ্যালয় জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। পিতা-মাতার স্নেহবঞ্চনা, বৈরি পারিবারিক পরিবেশ, আর্থিক ও মানসিক দৈনতা, শিক্ষক কর্তৃক বঞ্চনা, পারিবারিক ভাঙ্গন বা বিচ্ছিন্নতা, অসুস্থতা, প্রতিবন্ধিতা প্রভৃতি কারণ শিক্ষার্থীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমস্যাগ্রস্ত করে থাকে।

শিক্ষার্থীর সাথে সংশ্লিষ্ট এসব বিয়য়ের উপর তথ্য অনুসন্ধান, বিশ্লেষণ, সমস্যার কারণ নির্ণয় এবং সমাধান পরিকল্পনা প্রণয়নে বিদ্যালয় সমাজকর্মী তার পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োগ করে থাকেন। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের বিপথগামীতা, স্কুল ও বাড়ি থেকে পলায়ন, অপরাধ ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়াসহ জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা করার ক্ষেত্রে পাঠমুখী করে তোলা একান্ত আবশ্যক। এক্ষেত্রে পিতা-মাতা ও শিক্ষকের পাশাপাশি বিদ্যালয় সমাজকর্মী, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, প্রচারক, গবেষক ও বিশ্লেষক হিসেবে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক কার্যাবলী পালন করে থাকেন। সমাজকমের্র একটি স্পন্দনশীল শাখা হিসেবে বিদ্যালয় সমাজকর্ম একশ বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীর বহুমুখী সমস্যার প্রতিরোধ ও প্রতিকার করে আগামী দিনের সৃজনশীল নাগরিক ও জাতীয় উপযুক্ত কর্ণধার হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস চালাচ্ছে। ফলে বর্তমানে সারাবিশ্বেই বিদ্যালয় সমাজকমের্র গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয় সমাজকর্মীরা চারটি মডেল অনুশীলন করেন যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো- ঐতিহ্যগত ক্লিনিক্যাল মডেল, বিদ্যালয় পরিবর্তন মডেল, কমিউনিটি স্কুল মডেল এবং সামজিক মিথস্ক্রিয়া মডেল।

বিদ্যালয় সমাজকর্মের গুরুত্বের তালিকাঃ

  • ১. বিদ্যালয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ
  • ২. সুনাগরিক গঠন
  • ৩. বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে তোলা
  • ৪. বিদ্যালয় ও গৃহের মধ্যে সংযোগ সাধন
  • ৫. সমন্বয় সাধন
  • ৬. তথ্য সংগ্রহ
  • ৭. সামঞ্জস্য বিধান
  • ৮. সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধন
  • ৯. মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার সমাধান
  • ১০. পরিপূর্ণ মেধার বিকাশ

গ) শিক্ষার্থীদের মনোযোগীকরন ও নিয়মিতকরনে সমাজকর্মের ভূমিকাঃ

ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নয়নে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকাঃ-

বিদ্যালয় সমাজকর্মী শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে বহুমুখী ভূমিকা পালন করে থাকে। তিনি একজন পেশাদার সমাজকর্মী। বিদ্যালয়ের ছাত্র- ছাত্রীদের সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অত্যধিক। বিদ্যালয় সমাজকর্মীর মূল কাজ হলো শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে তাদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। নিম্নে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা আলোচনা করা হলো –

  • ১ঃ শিক্ষক ও প্রশিক্ষক এর ভূমিকা
  • ২ঃ মনোসামাজিক সমস্যার সমাধান
  • ৩ঃ সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন
  • ৪ঃ সক্ষমকারীর ভূমিকা পালন
  • ৫ঃ সমস্যার সমাধান
  • ৬ঃ গৃহ পরিদর্শন
  • ৭ঃ পরামর্শ প্রদান করা
  • ৮ঃ পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করা
  • ৯ঃ পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন
  • ১০ঃ সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধন

নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলঃ

বিদ্যালয় সমাজকমের্র মূল দর্শন হচ্ছে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নয়ন আনয়ন করা। তাই বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পরিপূরক হিসেবে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। বিদ্যালয় সমাজকর্মীরা বিদ্যালয় পরিবেশে সমাঞ্জস্যবিধানে ব্যর্থ, ঝরে পড়া, অমনোযোগী, স্কুল পালানো, অপরাধপ্রবণ, মাদকাসক্তিসহ ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে শিক্ষকদের পাশাপাশি গতিশীল ও বহুমুখী ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিদ্যালয় সমাজকর্মীদের অন্যতম ভূমিকা হলো শিক্ষার্থীদের হতাশা, নৈরাশ্য, মানসিক চাপ, যন্ত্রনা ও অসহায়ত্বের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে পরিবর্তন প্রতিনিধি হিসেবে ভূমিকা পালন।

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং অগ্রগতি, সমুন্নত ও গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে পরামর্শক, উদ্বুদ্ধকারী, তথ্য সরবারহকারী, তথ্য উদ্ঘাটনকারী ও সাহায্যকারী হিসেবে বিদ্যালয়ে সমাজকর্মীরা বহুমুখী ভূমিকা পালন করে থাকেন। শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও আবেগীক সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয় সমাজকর্মী শিক্ষার্থীকে প্রত্যক্ষ সেবা প্রদান করে থাকেন। বিদ্যালয় সংক্রান্ত নীতি, পরিবেশ ও অনুশীলন যা শিক্ষার্থীদের কর্মবিমুখতা বা ত্রুটিপূর্ণ বিকাশের জন্য দায়ী তা পরিবর্তন আনয়নে পরিবর্তনকারী হিসেবেও ভূমিকা পালন করে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

এছাড়া সমষ্টিকে স্কুলের প্রস্তাবনা ও কর্মসূচির সম্পর্কে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। শিক্ষার্থীকে দলীয় ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে পারস্পারিক মিথস্ক্রিয়ার জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তোলে ও ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিদ্যালয়ের সর্বজনীন সমস্যা সমাধানের জন্য ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী (mediator) এবং সহায়তাকারী (facilitator) হিসেবে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিদ্যালয় সমাজকর্মী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেবাপ্রদান করে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে যে ভূমিকা পালন করে থাকেন তা নিম্নের ছকের মাধ্যমে তুলে ধরা হলোঃ

বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা প্রসঙ্গে Charles Zastrow (২০০৮:৩৪৫) তাঁর “Introduction to Social Work and Social Welfare : Empowering People” গ্রন্থ বলেন, “ School work is a relatively new role of the social worker।” তিনি আরো বলেন, “ It is practical necessary for any school social worker to understand the dynamics of behavior because social workers have been and will continue to be closely involved with problematic behavior in children।” বিদ্যালয় সমাজকর্মীর আধুনিক ও সনাতন ভূমিকার মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় যা ভূমিকা নিম্নের ছকের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো-

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রোমানা দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। স্কুলের শিক্ষকেরা রোমানার সাথে যোগাযোগ করা সত্ত্বেও তারা রোমানাকে স্কুলে পাঠাচ্ছে না। রোমানার মতো আরো অনেক শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণি পাশ করার আগেই ঝরে পড়ছে। এছাড়া এই শ্রেণির অধিকাংশ নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ালেখায় অমনযোগী, একাকিত্বতা, হতাশা ও চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শ্রেণিশিক্ষক এ সমস্যা সমাধানের জন্য বিদ্যালয় সমাজকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নিলেন। বিদ্যালয় সমাজকর্মী উক্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য সামাজিক গবেষণা করলেন। এক্ষেত্রে তিনি সামাজিক জরিপ, কেস স্ট্যাডি ও গৃহ পরিদর্শন করলেন।

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

এর মাধ্যমে বিদ্যালয় সমাজকর্মী জানতে পারলেন যে, উক্ত এলাকার অধিকাংশ জনগণ নিরক্ষর ও দারিদ্র্য কবলিত। তারা নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত নয়। এছাড়া ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা দেখিয়ে দেয়ান জন্য গৃহশিক্ষক রাখার সামার্থ্য তাদের নেই। বিদ্যালয় শিক্ষকরাও ততটা ভাল করে পড়া বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। এছাড়া এই গ্রামে বয়ঃসন্ধি পরপরই মেয়ে শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। স্কুলে যাওয়ার পথে যৌনহয়রানির শিকার হতে হয়। তাই ‘উপযুক্ত পাত্র’ পেলেই বাল্য বিবাহ দিয়ে দেয়া হয়।

এক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মী মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন এবং গ্রামের সামাজিক পরিবেশ উন্নয়নে বিদ্যালয়, পরিবার ও সমাজে ভূমিকা পালন করে 21/34 এছাড়া সমাজকর্মী গতিশীলতা আনয়নকারী, সমন্বয় ও সংযোগ সাধনকারী, সচেতনতা সৃষ্টিকারী, শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকেন। পরিবর্তন প্রতিনিধি হিসেবে বিদ্যালয়ের পরিবেশগত উন্নয়ন এবং সমাজ ও পরিবেশের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক ও কাঙ্খিত পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পিতা মাতার মধ্যে সংযোগ সাধনের জন্য অনুঘটকের ভূমিকাও পালন করে থাকেন।

ঘ) শিক্ষক ও অভিভাবকের সাথে সমাজকর্মীর করণীয়ঃ

শিক্ষকের করণীয়ঃ

শ্রেণিতে শিক্ষার্থীকে শেখানোর প্রক্রিয়া হলো বিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। শিক্ষক এই প্রক্রিয়ার মূল চালিকাশক্তি। শিক্ষক নির্দেশনা প্রদান করবেন এবং শিক্ষার্থী নির্দেশনা অনুসরণ করে শিখতে সক্ষম হবে। শিক্ষককে অবশ্যই গণিতের ওপর সৃজনশীল জ্ঞানের লালন ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। শিক্ষককেন্দ্রিক কৌশল ব্যবহারের পরিবর্তে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কৌশল ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা আগ্রহ ও আনন্দের সঙ্গে শিখে থাকে। শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা ও প্রবণতা এবং পাঠের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শিক্ষক পদ্ধতি ও কৌশল নির্বাচন করে থাকেন।

অংশগ্রহণমূলক পাঠদান

শিক্ষক-শিক্ষার্থী পরস্পরের মধ্যে সমন্বয়ে পাঠদান ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক সহায়তাকারী বা সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করবেন এবং শিক্ষার্থীদের চিন্তনদক্ষতা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দেবেন। সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক অংশগ্রহণমূলক পাঠদানের ওপর।

বাস্তব উপকরণ ব্যবহার করা

শিখনপ্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো শ্রেণিকক্ষে বাস্তব উপকরণ ব্যবহার করে শ্রেণিপাঠ আকর্ষণীয় করে তোলা। গণিত শিখন শেখানো কার্যক্রম আরও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে পাঠ-সংশ্লিষ্ট কোনো বাস্তব ঘটনা বা উদাহরণ বা উপকরণ ছবি, চিত্র, সারণি, চার্ট, পোস্টার কিংবা মডেল ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক নিজে সহজলভ্য উপকরণ তৈরি করতে পারেন। গণিতে এ পদ্ধতি শিখনের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর এবং শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। উপকরণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

দলীয় কাজ পরিচালনা করা

শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রমে বৈচিত্র্য আনার ক্ষেত্রে দলীয় কাজ একটি সফল শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক পদ্ধতি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীর কাছে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় হলো দলগত কাজ। এর মাধ্যমে শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে পাঠে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এতে বিভিন্ন মেধার শিক্ষার্থীর সমন্বয়ের মাধ্যমে শিখন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে পারস্পরিক আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের বৈচিত্র্য সৃষ্টিই সৃজনশীলতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

একক বা জোড়ায় কাজ করানো

শিক্ষক অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে শিখন কার্যক্রম আনন্দদায়ক করার জন্য একক বা জোড়ায় কাজ দিতে পারেন। এতে শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে দুজনে আলোচনার মাধ্যমে বা এককভাবে তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

অনুশীলনের মাধ্যমে পাঠদান

গণিতে অনুশীলনের বিকল্প নেই। সাধারণত অনুশীলনের মাধ্যমেই অভিজ্ঞতা অর্জন হয়ে থাকে। কাজেই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে থাকেন। ফলে নতুন পরিস্থিতিতে তাদের অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগ করার যোগ্যতা অর্জনে সক্ষম হবে।

শিক্ষক একজন সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করবেন

শিক্ষক কখনো শিক্ষার্থীকে নিজে কাজ করিয়ে দেবেন না। এতে শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। একজন শিক্ষকের কাজ হলো শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা কোনো নির্দিষ্ট পাঠ কীভাবে শিখবে এবং কীভাবে পড়বে তা ঠিক করে দেওয়া। শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে কাজটি করবে, শিক্ষক শুধু ওই কাজ সম্পাদনে সহায়ক উপায়-উপকরণ প্রদর্শন ও জোগান দেবেন। শিক্ষার্থীদের কাজের মাধ্যমে শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেবেন। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরাই সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করবে এবং প্রশ্নের সঠিক উত্তর ও পূর্ণাঙ্গভাবে লেখার যোগ্যতা অর্জন করবে।

অভিভাবকের করণীয়ঃ

বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা

আপনার সন্তানকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি ও শ্রেণির পাঠগ্রহণে উত্সাহ দেওয়া প্রয়োজন। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে নিজেকে প্রস্তুত করার উপযুক্ত জায়গা হলো শ্রেণিকক্ষ। শ্রেণির কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষক সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণয়ন কৌশল, অনুশীলন, নম্বর বণ্টন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান দান করেন। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন-উত্তর তৈরির বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে বুঝতে পারবে এবং সে অনুসারে তা প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে।

সন্তানকে নোট-গাইড মুখস্থ করা থেকে বিরত রাখা

সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের অনুশীলনের ক্ষেত্রে বাজারের প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের গাইড ও নোট বই সংগ্রহ করা এবং তা মুখস্থ করা থেকে আপনার সন্তানকে বিরত রাখবেন।

বাসায় শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা

প্রত্যেক অভিভাবককে তাঁর বাসার পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষা দীর্ঘস্থায়ী ও বাস্তবভিত্তিক করার জন্য সব শিক্ষার্থীকে বাসায় নিয়মানুসারে অধ্যবসায় করা প্রয়োজন। অভিভাবকের সচেতনতায় বাসায় শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়ে থাকে।

সন্তানের শিখন অগ্রগতির খোঁজখবর রাখা

প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত তার সন্তানের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া। শিক্ষা বিষয়ে সর্বশেষ সংস্কার সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত করা। একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক হিসেবে তার সন্তানের বিদ্যালয়ের প্রতিদিনের শ্রেণির কাজ, বাড়ির কাজ ও অনুশীলনমূলক পরীক্ষার অগ্রগতির খোঁজ রাখা প্রয়োজন। ফলে নিজ নিজ সন্তানেরা তাদের কাজের প্রতি আরও যত্নবান হবে।

বিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও পরামর্শ প্রদান

অভিভাবক বিদ্যালয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ উন্নয়নকল্পে তাঁরা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান করে থাকেন।

পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সমস্যা

বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের বিভিন্ন সমস্যা জড়িত। প্রয়োজনে পাঠের বিষয়বস্তুকে বাস্তব জীবনের কোনো ঘটনার সঙ্গে মিল বা সম্পর্ক রেখে তা গল্পাকারে সন্তানদের বলা যেতে পারে। তখনই শিক্ষা দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং বাস্তব জীবনে নিজেও তা কাজে লাগাতে পারবে।

এটিই তোমাদের এইচএসসি ২০২১ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের সমাজকর্ম ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতকরণ ও পাঠে মনোযোগী করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয় সমাজকর্মীর ভূমিকা পর্যালোচনা।

আরো দেখুন-

প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।

আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নোটিশ ডট কম এর প্রকাশক ও সম্পাদক জনাব আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২০ নভেম্বর, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বাবা আবদুল গফুর ভূঁইয়া এবং মা রহিমা বেগম। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল আরিয়ান বয়স ৫ বছর। মেয়ে ফাবিহা জান্নাত বয়স ১ বছর। আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া এর শিক্ষাজীবন আনসার আহাম্মদ ভূঁইয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ঢাকা থেকে বিপিএড সম্পন্ন করেন। আজিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ লাকসাম উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছুদিন ক্লাস করার পর। পারিবারিক কারণে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজ এ কিছুদিন রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করার পর ভালো না লাগায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি নানা রকম সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবন কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি ২০১৯ সালে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় কুয়েত পারি জমান। কিন্তু সেখানকার কাজের পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পুনরায় আবার বাংলাদেশে ফিরে এসে পূর্বের পদে কাজে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্বপ্ন গ্রাফিক্স এন্ড নেটওয়ার্ক নামে একটি মাল্টিমিডিয়া এবং প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী সেই সাথে স্বপ্ন ইশকুল নামক একটি কম্পিউটার ট্রেণিং ইনস্টিটিউট এর মালিকানায় আছেন যেখানে তিনি নিজেই ক্লাস পরিচালনা করেন। লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্ম ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখা-লেখি ও সাহিত্য কর্মের সাথে জড়িত আছেন। ২০১১ সালে রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ম্যাগাজিনে তার প্রথম লেখা বন্ধু চিরন্তন প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

অ্যাডস্ ব্লকার পাওয়া গেছে!

দয়া করে আমাদের সাপোর্ট করার জন্য আপনার এডস্ ব্লকার ডিজেবল করে পেইজটি রিলোড করুন! ধন্যবাদ