পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত: সম্পর্ক বিশ্লেষণ
এইচএসসি ২০২২ ১১শ সপ্তাহের গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার নিমিত্তে আজকের আর্টিকেলে আলোচনার বিষয়- এইচএসসি ২০২২ গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন ১ম পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান– পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত: সম্পর্ক বিশ্লেষণ।
এইচএসসি ২০২২ ১১শ সপ্তাহের গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট
এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত: সম্পর্ক বিশ্লেষণ।
নির্দেশনা :
- গৃহ ব্যবস্থাপনায় প্রেষণা সৃষ্টিকারী উপাদানসমূহের ধারণা
- মূল্যবােধ বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
- লক্ষ্য নির্ধারণের উপায়
- মান নির্ধারণের মাধ্যম
- পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত:সম্পর্ক বিশ্লেষণ
এইচএসসি ২০২২ ১১শ সপ্তাহের গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
গৃহ ব্যবস্থাপনায় প্রেষণা সৃষ্টিকারী উপাদানসমূহের ধারণা
প্রেষণা ব্যক্তিকে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে এবং লক্ষ্য অর্জনের দিকে ধাবিত করে। অর্থাৎ প্রেষণা ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী আচরন করতে অনুপ্রাণিত করে। গৃহ ব্যবস্থাপনার প্রেষণা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলাে হচ্ছে :
- ১. মূল্যবােধ
- ২. লক্ষ্য
- ৩. মান।
গৃহ ব্যবস্থাপনার মূল্যবােধ : ব্যক্তির কাছে যেসব বিষয় প্রিয় এবং যেসব বিষয়ে ব্যক্তির আচার-আচরণ ও কার্যাবলী কে প্রভাবিত করে বিধান করে তাই মূল্যবােধ। মূল্যবােধ মানুষের একটি আর্থিক সম্পদ, মানুষের ইচ্ছার মানদন্ড। এটি কোন বস্তু বা পরিস্থিতির মূল্য সম্পর্কে ব্যক্তির অনুভূতি বা কোন উদ্দীপকের প্রক্রিয়াকে বােঝায়। ব্যক্তির । আচরণে মূল্যবােধের প্রভাব খুব বেশি। এটি মানুষের আদর্শ ও রীতিনীতি কে নিয়ন্ত্রণ কর। সমাজে মানুষের কাছে কাজের মূল্যায়ন করতে মানুষকে উদ্দেশ্যমূলক অর্থপূর্ণ আচরণ করতে সহায়তা করে।
মূল্যবােধের বৈশিষ্ট্য :
- নিজস্ব মূল্যবােধ ব্যক্তির নিকট উত্তম।
- মূল্যবােধ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত অবস্থা যা চেতন বা অবচেতন মনে অবস্থান করে
- বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মূল্যবােধ স্থায়ী হওয়ার প্রবণতা রাখে।
- আত্ম সৃজনশীলতা মূল্যবােধের প্রকাশ ঘটায়।
লক্ষ্য : প্রত্যেক মানুষের জীবনেই লক্ষ্য থাকে । লক্ষ্য বিহীনভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না। মানুষ যা চায় যা হতে চায় তাই তার জীবনের লক্ষ্য। কোন কাজের সমাপ্তি কে লক্ষ্য বলে। আবার কোন কাজের সমাপ্তি ঘটালেই আরেকটি লক্ষ্যের উদ্ভব হয়। তবে সবক্ষেত্রেই লক্ষ্য সমান তৃপ্তিদায়ক নাও হতে পার। কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হলে সুখ ও পরিচিতি আসে। তবে মানুষ সবসময়ই লক্ষ্যে পরিতৃপ্তি পেতে চায়।
মূল্যবােধ বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
মূল্যবােধের বিকাশ ব্যাক্তির নিজস্ব পরিমন্ডলকে কেন্দ্র করে মূল্যবােধের বিকাশ ঘটে। শৈশবে মা যখন শিশুকে যত্ন করে দুধ খাওয়ান তখন শিশু মায়ের উপর আস্থা অর্জন করে, ফলে মাকে সে খুব মূল্য দেয়।
এভাবেই পরিবার, সম্প্রদায়, সমাজ ও বিশ্বের সদস্য হিসেবে ব্যাক্তি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তা থেকেই ব্যাক্তির মূল্যবােধ গড়ে ওঠে; যেমন পরিবার থেকে সৎ পথে চলা, বড়দের সম্মান করা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার মূল্যবােধ। সমাজ থেকে সামাজিক রীতিনীতি অনুসারে চলা এবং বিশ্বে মানুষ হিসেবে মানবগােষ্ঠীর প্রতিফলিত হয় । কল্যাণ কামনা ইত্যাদি মূল্যবােধ ব্যাক্তির জীবনে আবার দৈনন্দিন জীবনে অভিজ্ঞতা এবং বিশ্বায়নের যুগে তথ্যের আদান প্রদানের মাধ্যমেও কিছু মূল্যবােধ গড়ে ওঠে; যেমন সময়মতাে কাজ করা। যােগাযােগ ও তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ও মােবাইল ফোনের ব্যবহার ।
মূল্যবােধের বিকাশ অবিরাম ধারায় চলতে থাকে। পরিবারের মাধ্যম শিশুকাল থেকে মুল্যবােধ গঠনের ভিত্তি রচিত হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে কিছু মূল্যবােধ দৃঢ় হয় এবং কিছু মূল্যবােধ পরিশােধিত মার্জিত ও সুন্দর রূপ ধারণ করে। কিছু মূল্যবােধ জন্মগত এবং কিছু মূল্যবােধ অর্জিত।
মূল্যবােধ বিকাশের ভিত্তি হলাে :
- (১) ব্যক্তির জৈবিক ও জন্মগত চাহিদা,
- (২) পারিবারিক ঐতিহ্য, রীতিনীতি,
- (৩) ধর্ম ও বিশ্বাস,
- (৪) দল,
- (৫) শিক্ষা ও সংস্কৃতি
লক্ষ্য নির্ধারণের উপায়
১. আপনার জীবনের লক্ষ্য গুলাে নির্ধারণ করুন। আপনি আপনার জীবনের জন্য যাত্ৰা কি সম্পর্কে নিজেকে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করুন। যেমন – আমি খুশি হতে চাই বা আমি জীবনে মানুষকে সহায়তা করতে চাই। তার জন্য আমাকে বা আপনাকে যা করতে হবে তা নির্ধারণ করাই হল সম্ভাব্য লক্ষ নির্ধারণ করা।
২. দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ : একে দূরত্ব বা চূড়ান্ত লক্ষ্যও বলা হয়। এই লক্ষ্য অর্জন সময় সাপেক্ষ। এই লক্ষ্য সব সময় মানুষকে মনে অবস্থান করে। এটি একটি গ্রামের লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে । যেমন : লক্ষ্য নিজেই পেশা গ্রহণ করে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করা।
৩. স্বল্পমেয়াদী বা মধ্যবর্তী লক্ষ্য : একটু দূরে যাওয়ার লক্ষ্য থাকে। দীর্ঘমেয়াদি বা চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করতে হলে স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য অর্জন করতে হয়। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জন করতে হলে স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্যে নবান্ন হতে হয়। যেমন – শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে শিক্ষার্থীকে পাবলিক পরীক্ষাগুলােতে অধিক কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হতে হবে।
৪. তৎকালীন লক্ষ্য : একেবারে নিকটবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে তৎকালীন লক্ষ । এটি স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিবর্তন করতে হয়। যেমন ছাত্রছাত্রীরা স্কুল -কলেজে যায় পড়াশােনা করার জন্য
মান নির্ধারণের মাধ্যম
মূল্যবােধ ও লক্ষ্য থেকে সৃষ্ট মানদণ্ডকেই মান বলে। মান ব্যক্তির নিজ সত্তা ও সমাজের দাবী থেকে সৃষ্টি হয়। সম্পদ ব্যবহারে গুণগত ও পরিমাণগত পরিমাপ পরিমানই হলাে মান। যেমন – লক্ষ্য হচ্ছে বাড়ি তৈরি করা। তবে বাড়িটি কেমন হবে তা নির্ভর করে কি ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হবে তার ওপর। আবার জীবন যাপনের মান নির্ভর করে – নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্য ও সেবা কর্মের ভােগ, ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা, আরাম – বিলাসিতার বস্তু এবং বস্তুর পদ্ধতির উপর। মূল্যবােধের ভিত্তিতে মান কে দুই ভাগে এবং জীবনযাত্রার ওপর ভিত্তিতে মান কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। নিম্নে মানের মােট ৪ টি ভাগ উল্লেখ করা হলাে :
১. প্রচলিত মান : সামাজিক বিধি নিষেধ ও নিয়মকানুন কে ভিত্তি করে এই মান সৃষ্টি হয় । এইমান সহজে পরিবর্তিত হয় না যেমন – আমাদের দেশে ছেলেরা শার্ট প্যান্ট এবং মেয়েরা সেলােয়ার-কামিজ পরিধান করে।
২. নমনীয় মান : পরিস্থিতি ও অবস্থা অনুযায়ী মান নির্ধারিত হয় এই নমনীয় মান। নমনীয় মান মানুষকে স্বাধীনভাবে চলার এবং পছন্দ করার সুযােগ দান করে। যেমন – মেয়েটি বিজ্ঞান বিভাগে পড়বে নাকি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়বে এটা স্বাধীনভাবে বাছাই করার সুযােগই হচ্ছে নমনীয় মান
৩. পরিমাণগত মান : পরিমাণগত সাধারণত কোন কিছুর ও জনঘনত্ব পরিমাণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করতে পরিমাণগত মান যেমন – কিলােমিটার, লিটার, মিটার, ইত্যাদি ব্যবহৃতুয়
৪. গুনগত মান : গুনগত মান ভঙ্গুর জ্ঞান বা বৈশিষ্ট্য দ্বারা বিবেচনা করা হয়। একজন ব্যক্তি কি ধরনের গুণগতমানসম্পন্ন দ্রব্য সামগ্রিক বা সেবা ক্রয় বা ভােগ করবে তার নির্ভর করে ঐ ব্যক্তির উচিত পর্যন্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও মনােবােধের ওপর।
পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত:সম্পর্ক বিশ্লেষণ
মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নিম্নে পরিবারের সদস্যদের সচেতনতা মূল্যায়ন করা হলাে : মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মান পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং গৃহ | ব্যবস্থাপনার চালিকাশক্তি | মূল্যবােধকে ভিত্তি করে লক্ষ্য ও মান গড়ে ওঠে। আবার লক্ষ্য ও মান একে অপরকে এবং উভয় একত্রে মূল্যবােধকে প্রভাবিত করে।
মূল্যবােধ সচেতন হয়ে লক্ষ্য স্থির করতে হয়। লক্ষ্য স্থির করে সম্পদ ব্যবহারে গুণগত ও পরিমাণগত মান নির্ধারণ করলেও কৃতকার্য হওয়া যায় । মূল্যবােধ সুস্পষ্ট নয়। লক্ষ্য সুস্পষ্ট পরিমাপের মাধ্যম এর তুলনায় অধিক সুস্পষ্ট। লক্ষ্য – শিক্ষক হওয়া, মান – নিয়মিত পড়াশােনা করা । পরীক্ষায় ভালাে ফল করা। মূল্যবােধজ্ঞান অর্জন করা । মূল্যবােধ ব্যবস্থাপনায় প্রেরণা যােগায় । লক্ষ্য দিক নির্দেশনা দেয় এবং মান ফলাফল প্রকাশ করে ।
লক্ষ্য ও মানের তুলনায় মূল্যবােধ অধিকতর ব্যাপক। ব্যক্তিতে মূল্যবােধের তারতম্য ঘটে। মূল্যবােধের লক্ষ্যের ভিত্তি লক্ষ্যের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য থাকে। তবে কিছু লক্ষ্য যাপন । সবার ক্ষেত্রে একই রকম। যেমন – সচ্ছলভাবে জীবন লক্ষ্যের মত মান মূল্যবােধ থেকে উৎপন্ন হয়। মানের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিস্বাতন্য থাকে।
যেমন- সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের জীবন যাত্রার মান ভিন্ন। ধনী পরিবারের জীবনযাত্রার মান ও দরিদ্র পরিবারে জীবনযাত্রার মানের অনেক তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। একটি লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক মূল্যবােধ উদ্যোগ করতে পারে। আবার একটি মূল্যবােধ একাধিক লক্ষ্যের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে। যেমন- লক্ষ্য পড়াশােনায় ভালাে ফল। ভালাে ফল মর্যাদা বৃদ্ধি করে ও উচ্চতর শিক্ষার সুযােগ সৃষ্টি করে।
এই ছিল তোমাদের এইচএসসি ২০২২ ১১শ সপ্তাহের গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান- পারিবারিক জীবনে মূল্যবােধ, লক্ষ্য ও মানের আন্ত: সম্পর্ক বিশ্লেষণ।
আরো দেখুন-
- গ্রামীণ ও শহর সমাজে পরিবারের পরিবর্তনশীল ভূমিকা আলোচনা কর
- একটি কম্পিউটার ল্যাবের সকল কম্পিউটার টুইস্টেড পেয়্যার ক্যাবলের মাধ্যমে একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটারের সাথে যুক্ত হওয়ায় ডেটা স্থানান্তরের গতি কম পাওয়া যায়। এতে ব্যবহৃত নেটওয়ার্কটির টাইপ, মাধ্যম এবং টপােলজির বিশ্লেষন
- মিয়োসিস প্রফেজ-১ এর উপপর্যায় পর্যালোচনা
- ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের আঙ্গিকে বাংলাদেশের দারিদ্র বিমোচন উপযোগী দরিদ্র আইন প্রণয়নের রূপরেখা অঙ্কন
সকল স্তরের শিক্ষা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি বিজ্ঞপ্তি, চাকুরির পরীক্ষা, এডমিট কার্ড, পরীক্ষার রুটিন, সরকারি বেসরকারি বৃত্তি, উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য সবার আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি Follow করে রাখুন। ইউটিউবে সর্বশেষ আপডেট পেতে বাংলা নোটিশ ডট কম এর ইউটিউব চ্যানেলটি Subscribe করে রাখুন। আপনার প্রতিষ্ঠানের যেকোন বিজ্ঞপ্তি, খবর, নোটিশ ও জাতীয় রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।